তালহা জাহিদঃ গোপালগঞ্জে আন্তঃজেলা বিকাশ প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা প্রতারণার ফাঁদ পেতে বিকাশ গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।এ সময় তাদের কাছ থেকে সিমসহ ১১টি মোবাইল সেট, ৫টি বিকাশ রেজিস্টার ও বিকাশ প্রতারণার সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।
চক্রটি প্রতারণা করে গত কয়েক মাসে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।গ্রেফতাররা হলেন- গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের চন্দ্র নাথ শীলের ছেলে গোবিন্দ শীল (২৮), ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বড় খারদিয়া গ্রামের টুটুল খানের ছেলে মোঃ শামসুল হক ওরফে হামিম খান (১৯), একই গ্রামের আহম্মদ মীরের ছেলে মো. হুসাইন মীর (২৩), একই গ্রামের আব্দুল গফুর ফকিরের ছেলে জয়নাল আবেদীন ফকির (৫০) ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের সুকুমার মন্ডলের ছেলে সুশান্ত মন্ডল (২৫)।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা, সালথা, নগরকান্দা, মাদারীপুরের শিবচর ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে অভিযান চালিয়ে ওই ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ থানায় শুক্রবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতাররা ১৬৪ ধারায় শুক্রবার বিকেলে গোপালগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, প্রতারক চক্র গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রফুল্ল মন্ডলের কাছ থেকে ৩৬ হাজার ৩৭৫ টাকা, গোপালগঞ্জের রেজাউল করিমের কাছ থেকে ২২ হাজার ৭২৬ টাকা, রহিমা খাতুনের কাছ থেকে ২০ হাজার ৩২৫ টাকা, খালেদা বেগমের কাছ থেকে ২২ হাজার ৯০৫ টাকা, রকি উদ্দিনের কাছ থেকে ৪ হাজার ৯০০ টাকা, তহিদুজ্জামানের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা, মাহফুজ মোল্লার ৩০ হাজার টাকা, মাহবুব শিকদারের কাছ থেকে ১৯ হাজার টাকা, বশির আহমেদের কাছ থেকে ৪৫ হগাজার ৫০০ টাকাসহ আরো বিভিন্নজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা বিভিন্ন কৌশলে বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করার পর পুলিশ তদন্তে নামে।ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, প্রতারক চক্র লটারি প্রাপ্তির মিথ্যা প্রলোভন দেখায় অথবা বিভিন্ন জেলায় তাদের সদস্য পাঠায়। যারা বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টের দোকানে গিয়ে গোপন ভিডিও ক্যামেরা সফটওয়ার ব্যবহার করে বিকাশে টাকা পাঠানোর নামে কিংবা অন্য কৌশলে বিকাশ রেজিস্ট্রার হতে গ্রাহকদের বিকাশ নম্বরের ছবি তোলা। ভিন্ন জেলায় অবস্থানরত তাদের টিমের কাছে ইমু/মেসেঞ্জারের মাধ্যমে এটি পাঠায়। দুরে অবস্থানরত তাদের কন্ট্রোলিং মেম্বাররা ইমু/মেসেঞ্জারে প্রাপ্ত গ্রাহকের বিকাশ নম্বর বিকাশ সফটওয়ার ব্যবহার করে হ্যাক করে।বিকাশ এজেন্ট / বিকাশ হেড অফিসের পরিচয়ে ফোন করে বিভিন্ন কৌশলে প্রতারনার মাধ্যমে বিকাশ পিন কোড সংগ্রহ করে গ্রাহকদের বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করে।
এ চক্র কতিপয় বিকাশ এজেন্টকে তাদের ট্রান্সফারকৃত অর্থের ভাগ দিয়ে তাদের দলভুক্ত করে অবং তাদের মাধ্যমে টাকা ক্যাশআউট করে থাকে। এভাবে চক্র গত কয়েক মাসে প্রায় ৮০-৮৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। চক্রের বাকি সদস্যদের শিগগির আইনের আওতায় আনা হবে বলে