দেশে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পহেলা জুলাই । এই ১ জুলাই ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।
অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবার অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় বলে থাকেন । কেননা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রতিনিয়ত স্বপ্ন পূরণ করেছেন বা করে যাচ্ছেন অনেকেই ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরেই এগিয়ে গিয়েছেন নিজের পছন্দের গন্তব্যস্থলে । এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ দিয়ে ভর্তি হওয়াও যেন অনেকটা স্বপ্নের মতোই । প্রত্যক বছর লাখো মানুষ এখানে ভর্তি পরীক্ষা দিলেও সিট পায় হাজার পাঁচ কিংবা সাতেক ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটা স্বপ্নের মতোই । কেননা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা এক ছাত্রও এখানে এসে পাই উচ্চ মানের সুযোগ সুবিধা । হোক তা থাকা, খাওয়া কিংবা পড়া, বাস সুবিধাসহ অনেক কিছুই ।
এছাড়া বাংলাদেশের ঐতিহাস ও ঐতিহ্যর এক দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী বিশ্ববিদ্যালয় যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।
৫২ এর ভাষা আন্দোলন,৬৬ এর দফা,৬৯ এর গনঅভুথ্যান, ৭০ এর সাধারণ নির্বাচন, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে সব কিছুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান । শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী নয় , এগিয়ে এসেছিল সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশ বরেণ্য গবেষক ও শিক্ষকেরাও ।
তার জন্যে জীবনও দিতে হয় অনেক ছাত্র ছাত্রীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী ও গবেষক শিক্ষকদের ।
এছাড়া ৭১ এর পরও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও অধিকার আদায়ে রাজপথে তাদের অবস্থান বা তাদের কর্মসূচি সাধারণ মানুষের জন্য এক নিবেদিত প্রাণের ন্যায় । শুধু আন্দোলনের মাধ্যমেই নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার অবদান বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে তাদের মেধা, মননশীলতা ও সততা দ্বারা ।
প্রতিনিয়ত তারা অবদান রাখছে দেশ বিদেশের শিক্ষা, রাজনীতি, অর্থনীতিসহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে । দেশের চাকরি বাজারে প্রায় বড়ো পদ বা স্থান গুলোই তাদের দরবারে নিঃসন্দেহে বলা যায় । পাশাপাশি বিশিষ্ট গবেষক, বুদ্ধিজীবী শিক্ষক ও মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের মিলন মেলা এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । ক্যাম্পাসে এসে মোহনার মতো সব যেন এক হয়ে যায় ।
আগামী ২০২১ সাল আসিলেই শত বর্ষে পদার্পণ করতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । প্রতিবছর নানা বর্ণিল সাজে রাঙিয়ে যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হতো । তবে এবার দৃশ্যপট ভিন্ন হতে চলেছে । নেই কোনো উৎসব , নেই কোনো মিলনমেলা, নেই কোনো বর্ণিল রঙের সাজ ।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস মূহুর্তের মধ্যেই স্থবির করে দিয়েছে সবাইকে । নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ, নেই কোনো বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালনের উৎসব । হয়তো আগামীতে আবার একসাথে উৎসব পালন করা যাবে, যখন সুস্থ হবে ঢাকার নগরীসহ পুরো দেশ ও বিশ্ব ।
আল আমিন ইসলাম নাসিম
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
ইমেইল : alaminislamnasim@gmail.com