ঝিনাইদহ, ২০জুন-
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে নতুন এক মেশিন আবিষ্কার করেছেন যশোর সেনানিবাসের সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোঃ তানজিমুল আনোয়ার। যেখানে খুশি রাখা যাবে, প্রয়োজনে বহন করা যাবে। বিদ্যুৎ চলে গেলেও চলবে ৪ ঘন্টা। বাসা-বাড়ি এমনকি অফিস-আদালতে প্রবেশ- প্রস্থানে শরীর জীবানুমুক্ত করা যাবে। তাকে সহযোগিতা করেছেন করোনা নিয়ে ঝিনাইদহ অঞ্চলে তার নেতৃত্বে কাজ করা সেনা সদস্যরা।
মেশিনটির নাম দেওয়া হয়েছে পোর্টেবল ডিজইনফ্যাক্টর সিস্টেম ভার্সন থ্রি (পিডিএস-ভি-৩)। ইতিমধ্যে ১০০ টি এই মেশিন পরীক্ষামূলক ভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহের অস্থায়ী ক্যাম্পের সেনা কর্মকর্তারা। যা সাধারণের প্রশংসা পেতে শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে এটি ছড়িয়ে দেয়া হবে সারাদেশে ।
করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করা সেনা সদস্যদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ২১০ টি দেশ আজ করোনা ভাইরাসের কবলে। এর থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় কারো সামনে আসছে না। বিজ্ঞানীরা ঔষধ আবিষ্কারে প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত যে ঔষধ আবিষ্কার হয়েছে তা সবই পরীক্ষামূলক পর্যায় রয়েছে। এই অবস্থা থেকে আমাদের নিরাপদ থাকার বিকল্প পথ খুজতে হবে। তাহলেই রক্ষা পাবে মানবজাতী। এই চিন্তা থেকেই যশোর সেনানিবাসের কর্মকর্তা মোঃ তানজিমুল আনোয়ার অন্য সেনা সদস্যদের নিয়ে কাজ শুরু করেন, আবিষ্কার করেন পিডিএস ভি-৩ মেশিনটি।
সেনা সদস্যরা জানান জানান, এই মেশিনটি খুব সহজ পদ্ধতির একটি জীবানুনাশক মেশিন। এটা তৈরী করতে অল্প পয়সা ব্যয় হবে। এটি তৈরীতে একটি লোহার রড, একটি ছোট পানির পাম্প, একটি ব্যাটারী সহ সামান্য কিছু ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে। মেশিনটি চারিপাশে ৫ ফুট জায়গায় স্প্রে করতে পারবে। এটি স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় যখন কেউ এই মেশিনের সামনে দিয়ে প্রবেশ করা মাত্রই মেশিনটি তার নিজ গতিতে কাজ শুরু করবে।
আবার প্রস্থানের পর অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবে। মেশিনটির সঙ্গে একটি পানির জার থাকবে, যেখানে থাকবে জীবানুনাশক মিশ্রিত পানি। এই পানি প্রয়োজন মতো মানুষের শরীরে স্প্রে করবে। যারা এটি ব্যবহার করবেন তারা প্রয়োজনে এক স্থানে দাঁড়িয়ে চারিদিকে ঘুরে ভালোভাবে স্প্রে সম্পন্ন করে নিতে পারবেন। এই মেশিনটি সহজে বহন করা যাবে, যে কারণে যেখানে খুশি সেখানে বসানো সম্ভব। বাড়ির গেটে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মুখে, অফিস-আদালতের প্রধান ফটকে এটা বসিয়ে নিলে ওই সকল স্থানে যারাই প্রবেশ করবেন তারা সবাই জীবানুমুক্ত হতে পারবেন। মেশিনটি যে কোনো সময় স্থানান্তরও সম্ভব। তবে ব্যবহারের সময় অবশ্যই চোখ ও মূখ বন্ধ রাখতে হবে।
সেনা সদস্যরা আরো জানান, ২০ দিনের প্রচেষ্টায় তারা এটি তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রথমে দুই দফা প্রচেষ্টা তেমন সফলতা না আসলেও তৃতীয় দফায় সফল হয়েছেন। যে কারণে মেশিনটির নামের সঙ্গে ভার্সন থ্রি যুক্ত করেছেন। এই মেশিনটি ইতিমধ্যে যশোর ও ঝিনাইদহ অঞ্চলে কাজ শুরু করেছে। তারা আশা করছেন এটি দেশের সব এলাকায় ছড়িয়ে দিতে পারলে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।
রামিম হাসান, ঝিনাইদহ-মোবাইল:০১৩০৫৩৫১৬৬০