করোনাভাইরাস জেঁকে বসায় সৌদি আরব আধুনিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এ বছর হজ অনুষ্ঠান সীমিত অথবা বাতিল করতে পারে।
এ বছর জুলাইয়ের শেষ দিকে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নির্ধারিত বার্ষিক বৃহত্তম সমাবেশ হজ অনুষ্ঠিত হবে কি না এ বিষয় বহু বিলম্বিত সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য মুসলিম দেশগুলো সৌদি আরবকে চাপ দিচ্ছে।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে সৌদি আরব যখন এ ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে তখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতির সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।
গত বছর প্রায় ২৫ লাখের মতো মুসলমান হজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় মার্চের শেষ দিকে কর্তৃপক্ষ হজ্জের প্রস্তুতি স্থগিত রাখার জন্য মুসলমানদের পরামর্শ দিয়েছিল।
হজ্জকর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দক্ষিণ এশিয়ীয় একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, হজ্জ অনুষ্ঠিত হবে, নাকি পুরোপুরি বাতিল হবে, এ সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত ঝুলে রয়েছে।
সৌদি এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, তারা এই বিষয় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া চলতি মাসে জানিয়েছে, তারা এ বছর হজ্জে লোক পাঠাবে না। মালয়েশিয়া, সেনেগাল ও সিঙ্গাপুর অনুরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরো অনেক মুসলিম দেশ মিশর, মরক্কো, তুরস্ক, লেবানন ও বুলগেরিয়া বলেছে,এখনও তারা রিয়াদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।
ফ্রান্সের মুসলিম ধর্মীয় নেতারা করোনা ঝুঁকির কারণে এ বছর হজ বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছেন।
দক্ষিণ এশীয় কর্মকর্তা বলেন, শেষ মুহূর্তে যদি সৌদি আরব বলে, তারা হজের জন্য প্রস্তুত; তাহলে অনেক দেশই তাতে অংশ নিতে পারবে না।
স্বচ্ছল মুসলমানের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ পালন করা বাধ্যতামুলক। হজে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটলে যে কোন লোকেরই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।
গত মার্চ মাস থেকেই ওমরা পালন স্থগিত রয়েছে। হজ অনুষ্ঠানে সৌদি সরকারের হিসাব অনুযায়ী তাদের অর্থনীতিতে প্রতিবছর ১২ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হয়।
মুসলমানরা সঞ্চয় ব্যয় করে জীবনে একবার হজ পালনের জন্য প্রতীক্ষা করেন, হজ বাতিল বা সীমিত করা হলে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান হতাশ হবেন।