পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দুবাই বিমান বন্দরে পানির জলাবদ্ধতা, ফ্লাইট বাতিল এবং নিয়মিত বিমান উড্ডয়ন হচ্ছিল না যাতে করে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। দুবাই, আবুধাবী, ওমান, বাহরাইন এবং মোট কথা মধ্যপ্রাচ্যে ঝড় ও অতিবৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যুস্ত। ঘরে, বাহিরে, রাস্তায়, বাস স্টেশনে, বিমান বন্দরে শপিংমলে হাটে-বাজারে অফিসে সর্বত্র বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা। এসব কি সত্য!নাকি কথার কথা। দুবাই ধনীদের শহর বলে পরিচিত। গাড়ি, বাস ও প্রাইভেটকার গুলো রাস্তায় খেলনা গাড়ির মতো ভাসছে। কি এক ভয়ানক পরিস্থিতি। শিশু ও মহিলারা দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। সবচেয়ে ধনীরৈাকগুলোর একমাত্র যানবহন হয়েছে প্লাস্টিকের নৌকা। সত্যিই এটা ভাবনার বিষয়। যারা পৃথিবীকে স্বর্গ বানাতে চেয়েছিল তারা কেউ সেই স্বর্গে বেশিদিন থাকতে পারেনি। আজকে দুবাইবাসী যে চরম ভোগান্তির মধ্যে দিনাতিপাত করছে তা সত্যিই এরকম করে কেউই ভাবেনি। বিগত ৭৫ বছর আগে এরকম একবার হয়েছিল তবে তখনকার বন্যা এতোটা ভয়াবহ ছিল না। মরুরদেশে অতিবৃষ্টি এবং বন্যা এগুলো কিসের আলামত। কিয়ামত কি অতি সন্নিকটে? রাসুলের হাদীস অনুযায়ী মরুভূমি সবুজ গাছপালা ভরে যাবে এবং শিলা বৃষ্টি ও বন্যা হবে। বড় বড় দালানকোটা হবে। তাহলে কিয়ামত বা পৃথিবী ধ্বংসের আলামত কি দৃশ্যমান হতে চলেছে। নাকি এই অতিবৃষ্টি বিশ্বব্যাপী গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলাফল। অনেকেই বলছে এই অত্যাধিক বৃস্টিপাত ক্লাউড সিডিং বা মেঘ বীজ বৃষ্টির প্রভাব কিন্তু সত্যি কি তাই? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে যারা সৃষ্টিকর্তায় সহসা বিশ্বাস করে না তারা একরকম বলবে আর যারা ঈমানদার বা বিশ্বাসী তারা আরেকভাবে নিবে। তাই মোটা দাগে আমি আজকের লেখায় কে কি রুপ বিশ্বাস স্থাপন করে আর না করে সে বিষয়ে কিছু বলবো না শুধু চোখের সামনে যে ঝড়-বৃষ্টি দুবাই বা মরু অঞ্চলে ভিডিওতে বা সরাসরি যা দেখলাম তার কিছু কারণ প্রভাব এবং মোটাদাগে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করবো।
সাম্প্রতিক বিশ্বে সবচেয়ে যে বিষয়টি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এক কথায় বলতে গেলে এটি একুশ শতকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দিন দিন জলবায়ুর পরিবর্তন জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলায় তা আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে গবেষণাও চলছে ব্যাপক হারে।
জলবায়ু হলো ভূ-পৃষ্ঠের কোনো স্থানের ২৫-৩০ বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থা। এটি মূলত কোনো স্থানের দীর্ঘদিনের বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, রৌদ্রালোক ইত্যাদির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনকে নির্দেশ করে। প্রাকৃতিক (পৃথিবীর বিভিন্ন গতিশীল প্রক্রিয়া, সৌর বিকিরণের মাত্রা, অক্ষরেখার দিক পরিবর্তন, সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর অবস্থান ইত্যাদি) নানা কারণে জলবায়ু স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন হলেও মূলত মানবসৃষ্ট (কল-কারখানা, যানবাহন থেকে নির্গত গ্যাস, কয়লা পোড়ানো, ইটভাটার ধোঁয়া, গাছ কাটা ইত্যাদি) কারণেই জলবায়ু দ্রুত পরিবর্তন হয়।
বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন বাড়ছে। বায়ুতে কার্বন ডাই-অক্সাইডের (সিও২) পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাপমাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। মানবসৃষ্ট এ গ্রিনহাউস গ্যাসের ফলে পৃথিবীর উষ্ণয়নকে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি অন্যতম কারণ মনে করা হয়। বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর এ পরিবর্তন পরিবেশ ও মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, দুই মেরুর বরফ গলার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের। সমুদ্রপৃষ্ঠের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে দেখা দিচ্ছে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও পাহাড়ধসের মতো দুর্যোগ।
দুর্যোগপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম ঝুঁকিতে রয়েছে। জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা জার্মান ওয়াচ কর্তৃক প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক ২০২১’ এর শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ফলে এটা সহজেই অনুমেয় যে, জলবাযু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য কতটা হুমকিস্বরূপ। তাই জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। নিতে হবে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ-ক) বৃক্ষ নিধন রোধ ও গাছ লাগানো: পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটি তা হলো অক্সিজেন। আর গাছ থেকে আমরা সেটি অনায়াসেই পাই। বর্তমানে ক্রমবর্ধমানহারে গাছ কাটার উৎসব চলছে। ফলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত গাছ লাগানো। বাড়ির চারদিকে, রাস্তার পাশে, রেললাইনের দুই ধারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গাছ লাগাতে হবে। বনাঞ্চল ধ্বংস করা যাবে না। খ) জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো: জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস) এর ব্যবহার কমাতে হবে। এটি অত্যন্ত দূষণকারী যা কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং মিথেনের মতো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গ)ইঞ্জিনচালিত গাড়ির ব্যবহার কমানো: যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে ইঞ্জিনচালিত গাড়ির ব্যবহার কমানোর। কেননা তা থেকে প্রচুর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস বের হয়, যা মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিকল্প হিসেবে বৈদ্যুতিক/ব্যাটারিচালিত গাড়ি, বাইসাইকেল ইত্যাদি ব্যবহার করা। ঘ) রিসাইকেল করা: পরিবেশ রক্ষায় রাসায়নিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা জিনিসকে যেখানে সেখানে না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা ও তা পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে তোলা। ঙ) জনসচেতনতা সৃষ্টি: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ, প্রভাব ও করণীয় দিকগুলো নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত সভা, সেমিনার আয়োজন করতে হবে। সবার মাঝে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে এবং সুন্দর পৃথিবী নির্মাণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিককালের বন্যা বা বৃষ্টি এটা শুধু গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হচ্ছে নাকি কিয়ামতের আলামত বা গজব আকারে নাজিল হচ্ছে কিনা। সে বিষয়টি ও আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু।
এটা সত্য যে, স্মরণকালের ভয়াবহ ঝড়, বৃষ্টিপাত ও বন্যা দুবাই এবং ওমান নগরের বাসিন্দারা ইতোমধ্যে প্রত্যক্ষ করেছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধন হয়েছে। এখনও সড়ক ও আকাশপথে চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। মানুষ নিরাপদ স্থানে রয়েছে। তবে এটা লক্ষণীয় যে, পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা একেবারে অপ্রতুল এবং ডে্রেনেজ সিস্টেম ঠিক নগরায়নের মাপে বা মানে আদৌ পৌঁছায়নি। যদিও ২০২৩ সালে আরব আমিরাত সরকার পানি দ্রুত সরিয়ে যায় বা নিষ্কাষণের জন্য মেগা-প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। তবে তা আশানুরুপভাবে এগোয়নি। এবারের ঝড় বৃষ্টি এবং বন্যা গোটা মধ্য-প্রাচ্য বাসীকে একটি অজানা শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। কেননা দুবাই বা আরব আমিরাতের ৯৯ ভাগের বেশি মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। অত্যধিক ঝড়-বৃষ্টি দেখে তারা ভাবছে মুসলমানদের নবী হয়রত মুহাম্মদ সাঃ এখান থেকে ১৪৫০ বছর আগে যে ভবিষ্যতবাণী করেছেন তা ফলছে কিনা বা এই ধরনের শিলা-বৃষ্টি ও ঝড় আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব কিনা। কারণ হিসেবে অনেকে বলছে কয়েকবছর আগে পর্যটন শিল্পকে আকৃষ্ট করতে বিশাল মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে দুবাই সিটিতে যাতে করে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় এমন স্থাপনার কারণে সৃষ্টিকর্তা গজব নাজিল করতে পারেন। তাছাড়া এটাও অনেকে মনে করছেন যে, দুবাই সিটি ব্যবসায়িক নগরী হিসেবে গড়ে ওঠায় ওই শহরে ইসলামে নিষিদ্ধ কাজ তথা মদ, জুয়া, অশ্লীলতা এবং ব্যবভিচার বেড়ে গেছে বিধায় সেখানে মহান পালনকর্তা সতর্কতা হিসেবে ঝড়, বৃষ্টি এবং জলোচ্ছ্বাস এর মতো বিপদ দিচ্ছেন। কিয়ামত বা পৃথিবী ধ্বংসের পূর্বে আরব অঞ্চল তথা মরূভুমিতে কি ঘটবে সে বিষয়ে দুয়েকটি হাদীসের বাণী উল্লেখ করা যেতে পারে।
মরুভূমিতে কেয়ামতের আলামতের মধ্যে বলা হয়েছে বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে। এছাড়াও কেয়ামতের আলামতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরেকটি হলো অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে করে মাঠঘাট যেমন ফসলহীন হয়ে পড়বে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ঘটবে এর উল্টোটা। বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে।
হজরত আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মত লোক পাবে না। আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে।-(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২২২৯)।
হাদিস বিশারদদের ভাষ্য অনুযায়ী, মহানবী (সা.)-এর হাদিস দ্বারা শুধু বর্তমান সৌদি আরব উদ্দেশ্য নয়। কোরআন-হাদিসের ভাষায় আরব বলে গোটা আরব উপদ্বীপকে বোঝায়। শুধু সৌদ রাষ্ট্রকে নয়। আরব উপদ্বীপকে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ নিয়ে গঠিত ছিল, যা পরবর্তী সময়ে আলাদা আলাদা দেশে বিভক্ত হয়েছে।
আরব উপদ্বীপের দেশগুলো হলো, সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন আবুধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রাআস আল খাইমাহ, আশ শারজাহ এবং উম্ম আল-কাইওয়াইন। আবুধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী ও দুবাই দেশের বৃহত্তম শহর), ইয়েমেন ও ওমান।
আজকে সমাজে শরিফ থেকে শরিফা (মানুষের আকৃতি রূপান্তর) হওয়ার কাহিনী চোখের সামনে ঘটছে। এখন আর নেতৃস্থানীয় মানুষের মধ্যে আমানতদারী পরিলক্ষিত হয়না। পিতা-মাতার সামনে ছেলে-মেয়ে অবাধ্য সন্তান হয়ে যাচ্ছে। ভূমিকম্প বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। সুদ-ব্যভিচার-মদ-বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপকতা সর্বদা দৃশ্যমান হচ্ছে। মানুষের আকৃতি রূপান্তর, আকাশ থেকে পাথর পড়া, মুমিনের স্বপ্ন সত্য হওয়া, মিথ্যা সাক্ষ্য বেড়ে যাওয়া, নারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, আরব ভূখণ্ড তৃণভূমি ও নদনদীতে ভরে যাওয়া, ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীতে স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাওয়া, হিংস্র জীবজন্তু ও জড় পদার্থ মানুষের সঙ্গে কথা বলা ইত্যাদি।(বুখারী, ৭১১৫; মুসলিম, ১৫৭; মিশকাত, ৫৪১০, বুখারী, ৫৬৭১)কেয়ামতের ছোট ছোট অনেক আলামত যা আজকে অনেকাংশে দৃশ্যমান।
কিয়ামতের আলামত বা মরু অঞ্চলে অতি ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি ও বন্যা ক্লাইমেট চেঞ্জের প্রভাব নাকি গজব এসব বিষয়ের অবতারণা নিছক মানুষকে অর্থ্যাৎ যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে এই লেখা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ ও ফলাফল এবং সমাধান সাথে করণীয় কি সার্বিক বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। আবার আরব অঞ্চলের বর্তমান ঝড়-বৃষ্টি শুধু যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হয়েছে সেটা মানতে নারাজ আমার মতো অনেকেই।কেননা মুসলমান হিসেবে এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে হবে যে, নবীর ভবিষ্যত বাণী কোনদিন মিথ্যা হতে পারে না। ফলে আরব অঞ্চলে শিলাবৃষ্টি, সবুজায়ন এবং আরব ভূখণ্ড তৃণভূমি ও নদনদীতে ভরে যাওয়া ইত্যাদি কিয়ামতের আলামত হিসেবে ধীরে ধীরে প্রতিভাত হচ্ছে। আর পৃথিবীবাসী যখন মদ, জুয়া, সুদ, ঘুষ, নারী ও ব্যাভিচারীতে লিপ্ত হয় তখন গজব নাজিল হওয়ার ইসলামের ইতিহাস কারো অজানা নয়। পরিশেষে একথা ও সত্য যে, বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় মরু তথা আরব অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন হয়ে এই অতিবৃষ্টি ও বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
লেখক: মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, কলামিস্ট, আইন গবেষক (পিএইচডি অধ্যায়নরত) । ইমেইলঃ bdjdj1984du@gmail.com