কুষ্টিয়া:
কুষ্টিয়া শহরে পারিবারিক কলহের জেরে সাথী খাতুন (৩৫) নামের এক দ্বিতীয় স্ত্রীকে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
একই সাথে তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জহুরুল ইসলাম কুষ্টিয়া শহরের জুগিয়া ভাটপাড়া এলাকার আহসান উল্লাহ কারিকরের ছেলে।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জহুরুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই তাকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় এ মামলার অপর আসামি খসরুল আলমকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৮ আগস্ট রাত ৯টার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রী সাথী খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্বামী জহুরুল ইসলাম। হত্যার পর তার গলায় গলস ও পায়ে শীলপাটা বেঁধে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর পুলিশ লাইন এলাকায় বেলে পুকুরে ফেলে দেয় স্বামী জহুরুল। দুদিন পরে ১০ আগস্ট সকালে মরদেহ পানিতে ভেসে উঠে। খবর পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জহুরুল ইসলামের সাথে প্রেম করে বিবাহ করে সাথী। সাথী জহুরুলের দ্বিতীয় স্ত্রী। জহুরুলের প্রথম স্ত্রীর দুটি সন্তান ছিল। এমতাবস্থায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে আলাদা জায়গায় ভাড়া বাসায় রাখতেন। বাবার বাড়িতে যাওয়ার জন্য টাকা চাইলে সাথীর গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্বামী জহুরুল।
এঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। হত্যা মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হুসাইন আসামির বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২৫ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামি জহুরুলকে শাস্তির আদেশ দেন এবং অপর আসামিকে খালাস দেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় এ মামলার অপর আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রাজু আহমেদ।
কুষ্টিয়া।