কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বহুল আলোচিত ইমরান শেখকে (২২) অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় ১ জনের ফাঁসি, ২ জনের আমৃত্যু ও ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের অর্থদণ্ডের আদেশও দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় প্রদান শেষে পুলিশের কঠোর পাহারায় আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম শহিদুর রহমান ওরফে পিরু মিঠুন। তিনি কুমারখালী উপজেলার দড়ি কোমর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাউজিং এস্টেট এলাকার ফজলুল বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান জজ ও কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার সোন্দাহ গ্রামের শহীদ বিশ্বাসের ছেলে নাহিদ হাসান, খোকসা উপজেলার চক হরিপুর গ্রামের মুন্সি নাসির উদ্দিনের ছেলে মুন্সি অনিক হাসান ওরফে ইমরান ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার তুলশীতলা গ্রামের আফাজুদ্দীনের ছেলে ওয়াদুদ ওরফে রাজু। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৬ মার্চ নিহত ইমরান শেখ উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর মধ্যেপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। পরে রাতে বাড়িতে ফিরে না আসলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার পরিবার। নিখোঁজের ২ দিন পর ইমরানের স্বজনরা দড়ি কোমরপুর ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে একটি মাথাবিহীন লাশ পড়ে থাকার সংবাদ পান। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইমরান শেখের লাশ শনাক্ত করেন।
নিহতের পরিবার জানতে পারেন ইমরানের মোটরসাইকেল চুরির উদ্দেশ্য পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা তাকে অপহরণ করে গলা কেটে হত্যা করে মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায়। এ ঘটনার তিন দিন পর নিহতের বাবা বাদশা শেখ কুমারখালী থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত ২৯ মার্চ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। রায় ঘোষণার পর পুলিশ পাহারায় আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।