কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় তিন আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সময়ে আদালত চার জনের যাবজ্জীবন ও ছয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো__তাজুল__ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। মামলায় দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।মামলার পলাতক পাঁচ আসামির অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। মামলায় আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের মৃত নুরু বিশ্বাসের ছেলে হোসেন রানা, একই গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে পলাতক ওয়াসিম রেজা ও ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার কাটদাহ গ্রামের আলী জোয়ার্দ্দারের ছেলে পলাতক মানিক জোয়ার্দ্দার।
কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া মশান গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে পলাতক ইদ্রিস ওরফে মোটা জসিম, খন্দকার রবিউল ইসলামের ছেলে পলাতক খন্দকার তৈমুল ইসলাম বিপুল, নুর বিশ্বাসের ছেলে ফারুক, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মতিমিয়া রেলগেট চৌড়হাস এলাকার খন্দকার মোছাদ্দেক হোসেন মন্টুর ছেলে উল্লাস খন্দকার, উদিবাড়ী এলাকার আমিরুল ইসলামের ছেলে পলাতক মনির, পূর্ব মজমপুরের মৃত আব্দুল খালেক চৌধুরীর ছেলে বিপুল চৌধুরী, দৌলতপুর উপজেলার পচা ভিটা গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে আব্দুল মান্নান মোল্লা।
এছাড়াও তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রমাণ হওয়ায় আরও ছয় আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যশোরের শার্শা থানা এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে মোবাইলে এক নারীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর জের ধরে ২০০৯ সালের ২৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীর ও তার ভাইসহ মোট চারজনকে ডেকে এনে অপহরণ করে দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামে আটকে রাখা হয়।পরে সবার বাড়িতে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরের ভাই অপহরণকারীদের কবল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে অপহরণের প্রমাণ লোপাট করতে ২৫ নভেম্বর রাতে আসামিরা জাহাঙ্গীর হোসন মুকুলসহ তিন অপহৃতকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখে।
এ ঘটনায় ২ ডিসেম্বর দৌলতপুর থানায় জাহাঙ্গীরের বড় ভাই ইলিয়াছ কবির বকুল বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ মার্চে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় প্রদান করেন। প্রসঙ্গত, আসামিদের বিরুদ্ধে অপর দু’টি হত্যা মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।