দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরের পর্দা উঠছে আজ। মাসকাটের আল-আমিরাত ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নামছে স্বাগতিক ওমান এবং পাপুয়া নিউগিনি। দিনের আরেক ম্যাচে মাঠে নামবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্বকারী বাংলাদেশ দলও। বিশ্বকাপের প্রথমপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা।
শনিবার থেকে পর্দা উঠলেও বিশ্বকাপের মূলপর্বের খেলা শুরু হবে আগামী ২৩ অক্টোবর। প্রথমপর্বের দুই গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন এবং রানারআপ মিলে মোট চারটি দল মূলপর্বে খেলার সুযোগ পাবে। প্রথমপর্বের প্রথম ‘এ’তে রয়েছে আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, নামিবিয়া এবং শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে গ্রুপ ‘বি’তে বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে স্কটল্যান্ড, ওমান এবং পাপুয়া নিউ গিনি।
গ্রুপ ‘বি’তে গ্রুপসেরা হতে পারলে মূলপর্বের দুই নম্বরে গ্রুপে খেলার সুযোগ পাবেন রাসেল ডোমিঙ্গোর শিষ্যরা। সেখানে গ্রুপ সঙ্গী হিসেবে পাবে পাকিস্তান, ভারত, নিউ জিল্যান্ড, আফগানিস্তান এবং প্রথমপর্বের গ্রুপ ‘এ’ এর রানারআপ দলকে। আবার কোনো কারণে ‘বি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন না হয়ে রানারআপ হলে মূলপর্বের গ্রুপ সঙ্গীও পরিবর্তন হয়ে যাবে। তখন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের সঙ্গী হবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং প্রথমপর্বের গ্রুপ ‘এ’ এর চ্যাম্পিয়ন দল।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত ছয় আসরের মধ্যে সর্বোচ্চ দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর একবার করে শিরোপা জিততে সক্ষম হয়েছে চারটি দল। এগুলো দল হচ্ছে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ড।
ক্যারিবিয়ানরা সর্বোচ্চ দুইবার এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দল হিসেবে শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছে ভারত। ২০০৭ সালে সেবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ অনুষ্ঠিত হয়। ওই আসরে নিজ নিজ সেমিফাইনাল ম্যাচ জিতে প্রথমবারের মতো ফাইনালের টিকিট কাটে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল ভারত এবং পাকিস্তান। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে শিরোপা জিততে না পারলেও ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় বিশ্বকাপে ঠিকই বাজিমাত করেছে পাকিস্তান দল। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বিশ্বকাপে আবারও ফাইনালে উঠে দলটি। সেবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় শ্রীলঙ্কাকে। লঙ্কানদের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় নিয়ে শিরোপার স্বাদ নেয় পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তৃতীয় আসর বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সেবার আবারও নতুন চ্যাম্পিয়ন পায় ক্রিকেটবিশ্ব। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ট্রফির স্বাদ পায় ইংল্যান্ড।
২০১২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চতুর্থ আসর বসে শ্রীলঙ্কায়। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করে লঙ্কানরা। কিন্তু প্রথমবারের মতো আবারও হারের বৃত্তেই থেকে যায় দলটি। তাদের হারিয়ে শিরোপা স্বাদ নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠে লঙ্কান দল। তবে এবার আর কোনো ভুল করেনি দলটি। ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে অধরা শিরোপার স্বাদ পায় শ্রীলঙ্কা। আর সবশেষ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ শুরু হচ্ছে আরেকটি মহারণ। সময় বলে দিবে, পুরোনো নাকি নতুন কোনো টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন পায় ক্রিকেট বিশ্ব