নাহিদ শাহীন
একটি জীবন পাহাড় সমেত অর্থনীতির মূল্যমানের চেয়েও বড়, সে জীবন বাঁচাতে ঈদের দিনও কারফিউ দিয়েছে কোনো কোনো রাষ্ট্র, আমরা খুলে দিলাম বিপনী বিতান। এখন বন্ধও হচ্ছে স্বাস্থ্য বিধি না মানায়। তাহলে এতোদিন খোলা বিপনী বিতানে সংক্রমন বহন করে কেউ কি আসে নি? তারা কি ছড়িয়ে দেয়নি প্রানঘাতি ভাইরাসের সংক্রমণের বিষ?
লক ডাউন একটি মাস কার্যকর হলো না, সাধারণ ছুটি ঘোষণা ৩০মে পর্যন্ত। এর মধ্যেই ঈদ পালন হবে। খোলা ময়দানে, জায়গায় ঈদের জামায়াত নিষেধ করেছে মন্ত্রণালয়। মসজিদে ঈদের জামায়াত হবে, ভালো কথা। কিন্তু লক ডাউন ঢিলেঢালা চরিত্রের হওয়ায় এবং সে চরিত্র বুঝতে পেরে শিক্ষিত অশিক্ষিত, সচেতন অসচেতন সব শ্রেনীর মানুষ নেমে পড়লো রাস্তায়, হাঁটে বাজারে, মাঠে ময়দানে এবং শপিংমলে। চিরচেনা আসল চরিত্র মুছে ফেলে আপামর জনগনের বন্ধু বনে যাওয়া পুলিশ ভাইয়েরাও শেষ পর্যন্ত হিমশিম খেলেন। কোনোভাবেই জনস্রোত ঠেকাতে পারছেন না তারা। মানুষজন স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না, সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারলেন না এই অভিযোগ আনলেন কেউ কেউ, এর মধ্যেই করোনা সংক্রমন মাথার উপরে উঠে গেলো। সেখান থেকে নামাতে কতোদিন লাগবে তার হিসেব না থাকলেও হিসেব আছে মৃত্যুর সংখ্যার। গতকাল আক্রান্ত যেখানে ১৬০০ এর উপরে মৃত্যু যেখানে ২১ জন।
এবার সহজেই অনুমান করা যায় ভয়াবহ হবে সামনের দিনগুলো। তাই যারা ঈদের কিছু সময়ের আনন্দের জন্য সারাজীবনের জন্য আঘাত কিনে আনছেন তারা একবার ভাবুন- সরকার আপনাকে বাঁচানোর অনুরোধ ও সচেতন করার দায়িত্ব নিবে শুধু কিন্তু আপনাকে আপনার নিজেকেই বাঁচাতে হবে।
যদি অর্থ ব্যয়ের জায়গা না থাকে, তাহলে জানালা দিয়ে কিংবা দরজা খুলে গরীবদের হাতে ফিতরা বা সাহায্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। ঈদে ভোজনবিলাসী না হয়ে, নতুন জামা না পড়ে ঘরে থেকেই নিজেকে নিয়ে ভাবুন। সেই চীনের উহানে নভেম্বর ডিসেম্বরে করোনা শুরু হয়ে বাংলাদেশেও তিন মাস হয়ে গেলো, সংখ্যায় ৯০ বা ১০০ দিন কিংবা আরো বেশি হবে হয়তো। আপনি আল্লাহর কৃপায় বেঁচে আছেন।
একবার প্রানভরে নিশ্বাস নিয়ে আল্লাহ/সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বলুন, বেঁচে আছেন এখনো। আর এই বেঁচে আছেন বলেই বাহাদুরি করে নেমে যাচ্ছেন রাস্তায়, দোকানে, হাঁটে বাজারে, সবখানে। এটি আল্লাহও মেনে নিবে না, তাই এখনো নিজেকে সামলান। শুকনো চোখে জলের ঢেউ আনতে না চাইলে। নিরাপদে থাকুন ভালো থাকুন, সবাইকে পাশে নিয়ে ঘরে থেকেই ঈদের অপার আনন্দ উপভোগ করুন। অনুরোধ।
নাহিদ শাহীন, আইনজীবী ও লেখক।