বিচারপ্রার্থীদের স্বর্গীয় আশ্রয়স্থল বিচারালয় কোন অবস্থাতেই যেন বাণিজ্যালয় হিসেবে পরিণত না হয় সে দাবি রেখে অবসরে গেলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী।
সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত বয়স পূর্ণ হওয়ায় বিচারিক দায়িত্ব থেকে অবসরে যাওয়া এই বিচারপতিকে বৃহস্পতিবার বিদায় সম্ভাষণ জানানো হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীকে বিদায় সম্ভাষণ জানান। ভার্চুয়াল এই আয়োজন প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতি ও আইনজীবীরা যুক্ত ছিলেন।
বিদায় বেলায় নিজের অনুভুতি ব্যক্ত করে বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘সবাইকে আহবান জানাই, আসুন একটি সুস্থ-সরল-স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক বিচার বিভাগের অবকাঠামো আমরা রচনা করে যাই। আজ আমার বিচারিক জীবনের ইতি টানছি। এই মূর্হতে একটি দাবি রেখে যেতে চাই যে, বিচারপ্রার্থীদের এই স্বর্গীয় আশ্রয়স্থল বিচারালয় কোন অবস্থাতেই যেন বাণিজ্যালয় হিসেবে যাতে পরিণত না হয়। এটা বার ও বেঞ্চ উভয়কে শক্তভাবে রুখতে হবে।’Loading…
বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘৪১ বছরের এই দীর্ঘ বিচারিক জীবনে কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি তার বিচারের ভার আপনাদের উপর ন্যস্ত। শেষ সময়ে বলে যেতে চাই- আইনের শাসন ছাড়া কোন দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। বাংলাদেশের উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা চলছে তার সফল অংশিদার হবে এই বিচার বিভাগ।’
নিজের স্ত্রীর সন্তানদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এই বিচারপতি বলেন, ‘গত ৪২ বছরে আমার স্ত্রী অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তার এই ত্যাগের ফলে আমার এই বিচারিক জীবন অনেকটাই সুন্দর ছিল। সন্তানেরা আমার বিচারিক জীবনে অনেক ত্যাগ করেছেন। জনগনের জন্য কাজ করতে আমাকে অনেক উৎসাহিত করেছে। বিদায় বেলায় সহকর্মী, আইনজীবীবৃন্দ এবং বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ কলকে ধন্যবাদ জানাই।’
বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ১৯৫৪ সালের ২৯ জুলাই কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ও এলএলবি পাস করে ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া বার এসোসিয়েশনে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৮০ সালে তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসে মুন্সেফ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপর ২০০৯ সালে তিনি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। আর ২০১১ সালে তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। এরপর ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের বিচারপতি হন আবু বকর সিদ্দিকী। তার ছোট ভাই বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীও আপিল বিভাগের বিচারপতি