গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের কাছ থেকে লকডাউন চলাকালিন সময়ে এনজিও ও ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মন্তব্য করেছে, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের লকডাউনে কর্মহীন গ্রাম-শহরের শ্রমজীবী মানুষ এমনিতেই আয় রোজগার হারিয়ে অভাব অনটনে বিপর্যস্ত, তার সঙ্গে এনজিও এবং মহাজনী ঋণের কিস্তি আদায়ের নামে হয়রানি গ্রামের দিনমজুর, শহরের হকার, রিকশাচালক, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষেরা দিশেহরা অবস্থায় পড়েছে।
বুধবার (৩০ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবী জানান।
নেতৃদ্বয় বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষগুলো ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার ঋণ নিয়ে এখন আছেন বিপাকে। সপ্তাহ শেষে, মাস শেষেই আসছে ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ। করোনার কারণে জীবিকা হারিয়ে অনেকে বাধ্য হয়েই নিয়েছিলেন ঋণ। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হতেই মাথায় চেপে বসেছে সেই ঋণের বোঝা। লকডাউনের সময় প্রায় সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। ফলে স্বল্প আয়ের যেসব মানুষের জীবন চলে দৈনিক রোজগারের ভিত্তিতে, তাঁরা বেশ সংকটে পড়ে যায় তাঁদের মধ্যে যাঁরা বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়েছেন, তাঁদের সংকট আরও গুরুতর। কারণ, নির্দিষ্ট সময় পরপর তাঁদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। এখন যখন দৈনিক আহার জোগানোর পথই বন্ধ হয়ে গেছে, তখন ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা কীভাবে সম্ভব?
তারা বলেন, সাময়িকভাবে রোজগারহারা মানুষকে অনাহার-অর্ধাহার থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, কিন্তু রাষ্ট্র সে দায়িত্ব পালন করছে না। ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারী নিম্ন আয়ের মানুষের অন্তত ঋণের কিস্তি আদায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার জন্য ক্ষুদ্রঋণদানকারী সংস্থাগুলোকে জরুরী নির্দেশ দেওয়া উচিত। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অনেক এনজিওর কর্মীরা ঋণ গ্রহণকারীদের কিস্তি পরিশোধ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। কেউ কেউ এই বলে ভয় দেখাচ্ছেন যে এখন কেউ কিস্তি পরিশোধ না করলে তিনি পরবর্তী সময়ে ঋণ পাবেন না।
নেতৃদ্বয় বলেন, এনজিও থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন—এ ধরনের নানা পেশার নিম্ন আয়ের লোকজনের রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু ক্ষুদ্রঋণদানকারী সংস্থাগুলো তাঁদের এই দুর্দশা আমলে না নিয়ে কিস্তি আদায় অব্যাহত রেখেছে বলে দেশের কোনো কোনো স্থানে লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। যখন মানুষ ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে, তখন তাদের ওপর এই বাড়তি চাপ প্রয়োগ করা অমানবিক বলে আমরা মনে করি। ক্ষুদ্রঋণদানকারী সব সংস্থার প্রতি আমাদের আহ্বান; আপনারা কিছু সময়ের জন্য ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রাখুন। সরকারেরও উচিত হবে কেন্দ্রীয়ভাবে এ রকম একটি নির্দেশনা জারি করা।