ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমনি। পুলিশের তৎপড়তাকে ‘ম্যাজিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এতটা বন্ধুসুলভ তারা, মানে একটা ম্যাজিকের মতো হয়ে গেছে। পুলিশ যে এতটা ম্যজিকেবল হয় এটা আসলে তার বড় প্রমাণ।https://www.youtube.com/embed/O_oyapAueuo
মঙ্গলবার বিকালে ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে এসব গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন পরীমনি।https://www.youtube.com/embed/e5bEmhE0KUo
গত রবিবার রাত নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে পরীমনি জানান তিনি হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন। পোস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ঘটনার বিচার চান তিনি। পরে রাতে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে পরীমনি জানান, নাসির উদ্দিন মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ী ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে ওই ঘটনা ঘটান। পরদিন সোমবার সকালে ওই ঘটনায় নাসির উদ্দিনসহ ছয়জনের নামে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। এরপর বিকালের মধ্যে নাসিরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। আজ দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে যান পরীমনি। সেখান থেকে পরীমনির সঙ্গে বেরিয়ে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, পরীমনি পুলিশকে ধন্যবাদ দিতে এসেছেন।
এসময় গণমাধ্যমকে পরীমনি বলেন, পুলিশ যে এতটা ম্যজিকেবল হয় এটা আসলে তার বড় প্রমাণ । আমার নরমাল লাইফে আমি ফিরে যাবো সেটা কখনো আশা করিনি। আমি পুলিশের কাছ থেকে যতটা পেয়েছি এতটা তাদের কাছ থেকে আশা করিনি। এতটা বন্ধুসুলভ তারা, মানে একটা ম্যাজিকের মত হয়ে গেছে। এত তারাতারি প্রশাসন কাজ করেছে তা বলার না। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের আটক করেছে। সবাই যে আমাকে এত ভালোবাসে এত সাপোর্ট দিয়েছে এটা আমার বলার ভাষা নাই।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ তার একমাত্র ভরসা ছিল জানিয়ে পরীমনি বলেন, আমার একমাত্র ভরসা ছিলেন বেনজির স্যার। আমি তার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছিলাম না। তিনি যখন জেনেছেন, তার কান পর্যন্ত গেছে, তখনতো আপনারা দেখলেন কয়েক ঘণ্টা লাগলো মাত্র। আমার মূল বিশ্বাসতো এটাই ছিল যে তার কান পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি একদম নিজের মত করে দেখে নিবেন বিষয়টা।
‘আসলে মানুষ রাতে ঘুমিয়ে সকালে জাগে। সেই জাগার সুযোগটাও আমি পাইনি। এখন শুধু আমার বিশ্বাস আমি সঠিক বিচারটা পাবো।’
পুলিশের ওপর আমার আস্থা আছে মন্তব্য করে পরীমনি বলেন, আমাকে ডিবি পুলিশ ডাকেনি। আমি নিজে থেকেই এখানে এসেছি। আমাকে কাজে ফিরতে হবে। এখানে আসার পরে সবাই আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছে। পুলিশ বন্ধুসুলভ আচরণ করেছে। পুলিশ (হারুন স্যার) অনেকটা ম্যাজিকের সব কিছু করেছে।
ফেসবুক পোস্টে আইজিপিকে ম্যানশন করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি আইজিপির কাছে বক্তব্য পৌঁছাতে পারেনি বলেই এতো কথা। তিনি আমার একমাত্র ভরসা ছিলেন। তার কান অবধি ফেসবুকে স্ট্যাটাস এবং আপনাদের মাধ্যমে আমার বার্তা পৌঁছে যাওয়ার পরই কিন্তু তিনি তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা নিয়েছেন।
ওই ঘটনার পর শিল্পী সমিতির সহযোগিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম যে শিল্পী সমিতির হয়ে আমি বেনজীর স্যারের সাথে একটু বসতে চাই কথা বলতে চাই। তুমি (জায়েদ) একটু হেল্প করো। তিনি বলেছিলেন, ডিটেইলস বলতে তোমাকে আসতে হবে। তুমি সরাসারি এলে বেনজীর স্যারের সাথে কথা বলার ব্যবস্থা করতে পারবো।
সেইরাতে মদ্যপ ছিলেন ছিলেন কি না- এমন প্রশ্নে পরীমনি বলেন, আমাকে মুখ চেপে জোর করে মদ খাওয়ানো হয়েছিল। জানি না ওই অবস্থায় আমাকে মদের সঙ্গে আর কি কি খাওয়ানো হয়েছিল বুঝতে পারছিলাম না। আমি মরে যাচ্ছিলাম। আমি যে মরে যাচ্ছিলাম সেই অবস্থাটা জানাতেই পুরো ঘটনাটা জানাতে থানা পুলিশে গিয়েছিলাম।
পুরোটাই থানা পুলিশকে জানিয়েছি এবং তাদেরকে বলেছি যে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আমাকে মদ খাওয়ানো হয়েছিল। আমি ঠিক নাই, আমি সুস্থ নাই, আমি এখনো সুস্থ না। আমার সমস্যা হচ্ছে। আমি কখনোই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বলিনি। আমি যেভাবে চেয়েছিলাম, থানায় গিয়েছিলাম। আমাকে যথেষ্ট হেল্প করেছেন, আমাকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে দেন।