চিত্রনায়িকা পরীমনিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ গ্রহণের পর অবশেষে মামলাও হলো। সোমবার অভিনেত্রী নিজে বাদী হয়ে সাভার থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তাতে আসামি করা হয়েছে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও অমিসহ ছয়জনকে। বাকি চারজন অজ্ঞাত। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাভার থানার পরিদর্শক কাজী মাইনুল।
এর আগে সোমবার সকালে মিরপুরের রূপনগর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান পরীমনি। কিন্তু ঘটনাটি যেহেতু সাভার থানার আওতাধীন, তাই পরীমনির লিখিত অভিযোগটি সাভার থানায় পাঠানো হয়। যদিও রবিবার তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এবং নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, চারদিন ধরে থানায় ঘোরাঘুরি করলেও তার অভিযোগ আমলে নেয়া হয়নি।
রবিবার রাত ৮টার দিকে হঠাৎই পরীমনির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি লম্বা স্ট্যাটাস ভেসে ওঠে। সেখানে তিনি জানান, তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন, রেপ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেন এবং বাঁচার আকুতি জানান। তবে ওই স্ট্যাটাসে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি নায়িকা।
এর ঘণ্টা দুয়েক পরে নিজের বনানীর বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমনি। সেখানে প্রকাশ করেন, কারা তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন, রেপ ও হত্যাচেষ্টা করেছেন। অভিনেত্রীর বক্তব্য মতে, একজন হলেন রাজধানীর উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসির ইউ মাহমুদ এবং অন্যজন পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জেমীর স্কুলবন্ধু অমি নামের এক ব্যবসায়ী।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি জানান, গত ৯ জুন রাত ১২টায় তাকে বিরুলিয়ায় নাসির ইউ মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় ব্যবসায়ী অমি। সে সময় নাছির ইউ. মাহমুদ নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি পরীমনিকে মদ খেতে বলেন। রাজি না হলে অভিনেত্রীকে তিনি জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর শারীরিকভাবে হেনস্তা ও হত্যাচেষ্টা করেন। অমিও এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ পরীমনির।
সংবাদ সম্মেলনে পরীমনিকে অনেকটা বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখা যায়। তার চোখে-মুখে ছিল আতঙ্কের ছাপ। চলে যাওয়ার আগে তিনি কাঁদতে কাঁদতে নায়িকা বলেন, ‘আমি আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে নই। আমি যদি মরে যাই, তাহলে আপনারা মনে করবেন, আমাকে হত্যা করা হয়েছে।’ এ সময় পরীমনির পাশে ছিলেন নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। তিনিও এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।