টলিউডের এই সময়ের সবচেয়ে সুদর্শন নায়ক যশ দাশগুপ্ত। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। তিনি নিখিল জৈনের কাছ থেকে তার বিবাহিত স্ত্রী সাংসদ অভিনেত্রী নুসরাত জাহানকে ভাগিয়ে নিয়েছেন, নুসরাতের সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে থাকছেন, আবার তার সন্তানের বাবাও হতে চলেছেন। কয়েকদিন ধরে চলমান এই বিতর্কে বুধবার সকালে মুখ খোলেন অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। জানান, নিখিলের সঙ্গে তার সম্পর্কের ভেতরের কথা। কয়েক ঘণ্টা পার না হতে এবার মুখ খুললেন যশও। যাকে কেন্দ্র করে কদিন ধরে এত বিতর্ক।
তবে যশ তার সঙ্গে নুসরাত জাহানের কী সম্পর্ক, তিনি আসলেই নুসরাতের সন্তানের বাবা হতে চলেছেন কি না, এ সম্পর্কে কিছুই বলেননি। তিনি দিয়েছেন পরামর্শ এবং সতর্ক হওয়ার ইঙ্গিত। বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ইনস্টাগ্রামে যশ লেখেন, ‘চালাক মানুষ সমস্যার সমাধান করেন, বুদ্ধিমান এড়িয়ে যান’। এখানে কাকে চালাক আর কাকে বুদ্ধিমান বলেছেন অভিনেতা?
যশ এই বিষয়টা পরিষ্কার না করলেও নেটিজেনদের মত, নিখিল এবং নুসরাতের দাম্পত্য কলহ যে প্রকাশ্যে আসা একেবারেই কাম্য নয়, সেই কথাই বোঝাতে চেয়েছেন যশ। অভিনেতার করা মন্তব্য অনুযায়ী, নিখিল-নুসরাত চালাক হলে নিজেদের মধ্যকার ঝামেলা মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতেন। বুদ্ধিমান হলে পুরোটাই গোপন করতেন বা এড়িয়ে যেতেন। কিন্তু কোনোটাই করেননি তারা। বরং দুজনেই ভাঙা দাম্পত্যকে সামনে রেখে পরস্পরের প্রতি কাদা ছোঁড়াছুড়িতে মত্ত!
এর আগে বুধবার সকালে নুসরাত জাহান নিজের ইনস্টাগ্রামে লেখেন, নিখিলের সঙ্গে নাকি তার বিয়েই হয়নি। যতদিন এক ছাদের নিচে ছিলেন, তারা কেবল লিভ টুগেদার করেছেন। তুরস্কের বিবাহ আইন অনুসারে তাদের বিয়ে নাকি অবৈধ। উপরন্তু হিন্দু-মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবাহ আইন অনুসারে বিয়ে করা উচিত। যা তাদের ক্ষেত্রে মানা হয়নি। ফলে, এটা বিয়েই নয়। যেহেতু এটা বিয়ে নয়, বিবাহ বিচ্ছেদের প্রশ্নই ওঠে না।’ তিনি আরও লেখেন, ‘যে নারী সব শুনেও নীরব থাকেন, এ রকম পরিচয়ে পরিচিত হব না আমি।’
তবে নুসরাত নিখিলের সঙ্গে তার বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করলেও সরকারি নথি বলছে ভিন্নকথা। লোকসভার ওয়েবসাইটে পশ্চিমবঙ্গ থেকে জয়ী তৃণমূল সাংসদদের যে তালিকা রয়েছে তাতে নুসরাতের নামে ক্লিক করলেই দেখা যাচ্ছে যাবতীয় তথ্য। সেখানে স্পষ্ট করে লেখা নুসরাত বিবাহিত। তিনি বিয়ে করেছেন ২০১৯ সালের ১৯ জুন। স্বামীর নাম নিখিল জৈন।
ওই বছর নিখিল-নুসরাতের বিয়ের আসর বসেছিল তুরস্কে। সেখানে নায়িকার পরিবারের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন টলিউডে নুসরাতের সবচেয়ে কাছের বন্ধু এবং আরেক সাংসদ অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। ১৯ জুন বিয়ের অনুষ্ঠানের পর দেশে ফিরে ৪ এপ্রিল কলকাতায় রিসেপশন পার্টিও দিয়েছিলেন নিখিল-নুসরাত। সেখানে টলিউডের কয়েকজন তারকা ছাড়াও আমন্ত্রিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ার অনুরাগীদের মন্তব্য, এত প্রমাণ থাকার পরও যশ দাশগুপ্তের প্রেমের টানে একটা সত্যকে মিথ্যা বলে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন নুসরাত জাহান। কিন্তু তা আদৌ সম্ভব হবে না।
২০১৯ সালে নিখিল-নুসরাতের বিয়ের কিছুদিন পরই তাদের মধ্যে সমস্যা শুরু হয়। নেপথ্যে অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত। তখন থেকেই নুসরাতের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন চলছিল। সেই গুঞ্জন সিলমোহর পড়ে গত বছরের শেষ দিকে যশ-নুসরাত একসঙ্গে গোয়ায় বেড়াতে গেলে। সেখানে তারা একই হোটেলে থাকেন। ওই হোটেলটির মালিক নিখিলের বিশেষ বন্ধু হওয়ায় প্রকাশ হয়ে পড়ে যশ-নুসরাতের সম্পর্কের কথা। এর পরই নুসরাতের থেকে আলাদা হয়ে যান নিখিল। এছাড়া নিখিলের পোশাক ব্র্যান্ড রঙ্গোলির শুভেচ্ছাদূত পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয নুসরাতকে। তার জায়গায় আনা হয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে।
এসব বিতর্কের মাঝেই চলতি বছরের শুরুতে একসঙ্গে রাজস্তানে অবস্থিত আজমীর শরীফে দেখা যায় যশ-নুসরাতকে। গুঞ্জন রয়েছে, ওই সময় তারা গোপনে বিয়ে করেন। সে জন্যই আশীর্বাদ চাইতে আজমীর শরীফে গিয়েছিলেন। যদিও এসব বিষয় নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি যশ বা নুসরাত। বরং নায়িকা বর্তমানে নিখিলের সঙ্গে তার বিয়েটাকে অবৈধ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ব্যস্ত।
দিল্লির ব্যবসায়ী নিখিলের হচ্ছেন অভিনেত্রী নুসরাত জাহানের দ্বিতীয় স্বামী। তিনি ২০১৩ সালের দিকে প্রথম বিয়ে করেছিলেন ভিক্টর ঘোষ নামে একজনকে। দীর্ঘ ছয় বছর সেই বিয়ের কথা গোপন করে রাখেন। এরপর নিখিলের প্রেমে পড়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ভিক্টরকে তালাক দেন নুসরাত। এই ডিভোর্স পেতে আদালতের মাধ্যমে ভিক্টরকে মোটা অংকের টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল নুসরাতকে। সেই নিখিলকে ছেড়ে এখন আবার নায়িকা যশের প্রেমে মত্ত।