ইবি প্রতিনিধি: প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হুমকির শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম ফারুক হোসেন। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেইসবুক গ্রুপে (IUian-ইবিয়ান) স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এরপর ওই স্ট্যাটাস মুছে ফেলার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে প্রায় ৩ ঘন্টা পর ওই গ্রুপ থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই ফারুক হোসেন তাকে সরাসরি ও ম্যাসেঞ্জারে বিরক্ত করে আসছেন। করোনাকালীন ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার আগেও বেশ কয়েকবার কুপ্রস্তাব দেয় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দল বেঁধে বাজে মন্তব্য করতেন এবং বিভিন্ন হুমকিও দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের জানায়। এর কিছুদিন পরেই করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়।
পরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকাকালীন সেপ্টেম্বর মাসের দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসলে ফের ফারুক তার পিছু নেয় এবং নানা কুপ্রস্তাপ দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিলে স্ট্যাটাস মুছে ফেলার জন্য হুমকি দেন ও ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগ নেতাদের ও বড় ভাইদের পরিচয় দিয়ে ভয় দেখান বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে ওই গ্রুপ থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এরপর শিক্ষার্থীদের মাঝে আরো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এছাড়া প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে ফটোশপের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ছবি বিকৃতি করে ভুক্তভোগীর সহপাঠী ও সিনিয়রদের কাছে আজেবাজে ছবি পাঠায়। এছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকেও বাজে ছবি এবং ভিডিও পাঠান অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে যানা যায়, অভিযুক্ত ফারুকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে হ্যানস্তার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালের দিকে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে ম্যাসেঞ্জারে হ্যানস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের এক ছাত্রীকে ম্যসেঞ্জারে উত্যক্ত করেন ফারুক।
এছাড়া ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর স্ট্যাটাসের পর বাংলা, ইংরেজি, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, সোশ্যাল ওয়ার্কসহ বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে একাধিকবার কল করে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই ঘটনায় আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছি। সেই সাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার নামে খারাপ আইডি খোলা ও কুপ্রস্তাব হুমকি ধামকির ঘটনার প্রতিকার চাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ফোন বন্ধ। ভুক্তভোগী এখনো অভিযোগ করেনি। দুইপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি জেনে নিয়ে পরিবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’