সব
facebook apsnews24.com
দুই দশকেও হয়নি বিস্ফোরক মামলার বিচার - APSNews24.Com

দুই দশকেও হয়নি বিস্ফোরক মামলার বিচার

দুই দশকেও হয়নি বিস্ফোরক মামলার বিচার

২০০১ সালে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ২০ বছর পূরণ হলো আজ। দুই দশক পেরোলেও এখনও মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। নিম্ন আদালতে রায় হলেও হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরুই হয়নি। কবে নাগাদ শুনানি শুরু হবে, তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। এদিকে সাক্ষীর অভাবে ঝুলে আছে একই ঘটনায় করা বিস্ফোরক আইনের অপর মামলাটিও।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (বাংলা ১৪০৮ সালের ১ বৈশাখ) ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় নিহত হন ১০ জন। আহত হন আরও ২০ জন। এ হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দুইটি হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলায় হুজির শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ১৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়।

দুই মামলার মধ্যে হত্যা মামলার রায় হয় ২০১৪ সালের ২৩ জুন। রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয় জনকে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ দেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আব্দুল হাই (পলাতক), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক) ও আরিফ হাসান সুমন। আসামিদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল। ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযুক্ত মুফতি আব্দুল হান্নানের ফাঁসি ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে কার্যকর হয়। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাই মামলা হতে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ৮৪ জনের মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৫ জন। চলতি বছরের ৫ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে করোনা প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় আদালত বন্ধ থাকায় মামলাটির সাক্ষ্য হয়নি। তিনি সাক্ষ্য দিলেই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম সমাপ্ত করা হবে।

অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

জানা গেছে, রমনা বটমূলে বোমা মেরে মানুষ হত্যার ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা হলেও অন্য মামলাটি ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। ঘটনার প্রায় আট বছর পর ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযুক্তরা হলেন- মুফতি হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হোসেন সুমন, শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, মাওলানা শওকত হোসেন ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ, মাওলানা আবু তাহের ও মাওলানা ইয়াহিয়া, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার মুফতি শফিকুর রহমান ও মুফতি আবদুল হাই।আরও পড়ুন:
নার

আলোচিত এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা বারবার পরিবর্তন, সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল, বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তদন্ত কর্মকর্তাদের আদালতে সাক্ষ্য দিতে না আসা ইত্যাদি কারণে মামলার বিচার শুরু হতে বিলম্ব হয়। পর্যায়ক্রমে থানা, ডিবি ও সিআইডি পুলিশে মামলার তদন্ত যায়। মামলার অষ্টম তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দুটি মামলারই অভিযোগপত্র একসঙ্গে দাখিল করা হয়। পরে বিচারের জন্য মামলা দুইটি ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে যায়। ওই আদালতে একই বছরের ১৬ এপ্রিল পৃথকভাবে মামলা দুইটিতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের সিদ্ধান্তে হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩-এ এবং বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ পাঠানো হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী, ১৩৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার শেষ না হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী মামলা দায়রা আদালতে ফেরত যায়। ফলে হত্যা মামলাটি আবার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা আদালতে স্থানান্তর হয়।

একই ঘটনায় একই আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিচারাধীন। এ ট্রাইব্যুনালের তত্কালীন বিচারকের ২০০৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর এ মামলার কার্যক্রমের ওপর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্ট্রারের কাছে একটি আবেদন পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে ওই আবেদনের কোনো সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট আদালতে পৌঁছেনি বলে জানান ওই আদালতের পিপি আবু আবদুল্লাহ ভুইয়া। ফলে এ মামলাটির বিচারে কোন সুরাহা হচ্ছেনা।

আপনার মতামত লিখুন :

বৈষম্য ও বেকারত্ব লাঘবে আইনজীবী তালিকাভূক্তি পদ্ধতি সংস্কারের বিকল্প ভাবনা

বৈষম্য ও বেকারত্ব লাঘবে আইনজীবী তালিকাভূক্তি পদ্ধতি সংস্কারের বিকল্প ভাবনা

শিক্ষার্থী তাহিরের মৃত্যু: শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪০ জনের নামে রংপুরে মামলা

শিক্ষার্থী তাহিরের মৃত্যু: শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪০ জনের নামে রংপুরে মামলা

কারামুক্ত হলেন হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক

কারামুক্ত হলেন হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক

বিচারপতির স্বাক্ষর জাল করে মেয়র জাহাঙ্গীর এর জামিন আপিল বিভাগ থেকে স্থগিত

বিচারপতির স্বাক্ষর জাল করে মেয়র জাহাঙ্গীর এর জামিন আপিল বিভাগ থেকে স্থগিত

৪২ লক্ষ মামলাজটে বিচার বিভাগ

৪২ লক্ষ মামলাজটে বিচার বিভাগ

আপিল বিভাগে বিচারকাজ চলাকালে ছাদ থেকে বিচারকদের আসনে বৃষ্টির পানি

আপিল বিভাগে বিচারকাজ চলাকালে ছাদ থেকে বিচারকদের আসনে বৃষ্টির পানি

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj