সিলেট প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এবারো বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে উৎপাদিত বাম্পার ফলন দেখে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি।
৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সরজমিনে বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, জমিতে পাকা সোনালী ও আধা পাকা সবুজ ধান বাতাসের তালে তালে দুলছে। ধানের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও আগাম জাতের আংশিক ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে এখনো পুরোপুরি ভাবে ধান কাটা শুরু হয়নি।
কৃষকরা জানান, আগামী সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার ধূম পড়বে। যদিও উপজেলাজুড়ে ধান কাটার মহোৎসব চলছে। জমির ধান গোলায় তুলতে কৃষকরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বড় কৃষকরা ধান কাটার অত্যাধুনিক হারভেষ্টার মেশিন সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মাঝারি ও বর্গা চাষিরা ধান কাটার শ্রমিক সংগ্রহ করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইতোমধ্যে ধান কাটার শ্রমিকরা জগন্নাথপুরে আসতে শুরু করেছেন। তাদের সাথে কদর বেড়েছে স্থানীয় শ্রমিকদের। স্থানীয় হাট-বাজারে ধান কাটার কাস্তে ও কাটা ধান রাখার জন্য ত্রিপাল বিক্রির ধুম পড়েছে।
সংগ্রহ করা হচ্ছে ধান মাড়াই মেশিন। ধান শুকানোর জন্য তৈরী করা হচ্ছে মাঠ ও খলা। ধান রাখতে তৈরি করা হচ্ছে গোলা ও আলাদা ঘর। সব মিলিয়ে জগন্নাথপুরে বাম্পার বোরো ফসল বৈশাখি তোলা নিয়ে রীতিমতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা।
জানাগেছে, গত বছরও জগন্নাথপুরে বাম্পার বোরো ধান গোলায় তুলেন কৃষকরা। সেই সাথে ধানের উচ্চমূল্য পেয়ে কৃষকরা লাভবান হন। যে কারণে এবার জমি আবাদে আরো উৎসাহিত হন কৃষকরা।
এবার জগন্নাথপুর উপজেলার সকল হাওরের ২০ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়। জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরামর্শ, দিক-নির্দেশনা ও সরকারি সহায়তায় জমি চাষে আরো উদ্যোগী হন কৃষকরা। এবার সরকারি ভাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৮৪২ মেট্রিকটন ধান। তবে বাম্পার ফলনে সরকারি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষকরা।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার জানান, এবারো জগন্নাথপুরে বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি সরকারি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। গত কয়েক দিন ধরে আগাম জাতের কিছু জমির ধান কর্তন হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন পর ধান কাটার ধুম পড়বে। প্রকৃতি অনকূলে থাকলে এবারো কৃষকদের গোলায় বাম্পার ফসল উঠবে।