হত্যা ও অস্ত্র মামলায় কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ভাওরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক সরকার আব্বাসীকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। তবে গত বৃহস্পতিবার তিনি উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন জামিন চাইতে। দুটি মামলার মধ্যে অস্ত্র মামলায় আদালত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিলেও হত্যা মামলায় জামিন দেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্রগুলো।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভাওরখোলা গ্রামে নির্বাচনী প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালিয়ে নাজমা বেগম নামে এক নারীকে খুনের অভিযোগে হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হয় আব্বাসীর বিরুদ্ধে। তাঁকে খুঁজছে মেঘনা থানার পুলিশ। মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মজিদ গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, নাজমা হত্যা মামলার আসামি ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক সরকার আব্বাসী বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাঁকে অস্ত্র মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিলেও হত্যা মামলায় জামিন দেননি বলে জানা গেছে।
হত্যা মামলার বাদী নিহত নাজমা বেগমের দেবর এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দিন যাবৎ উচ্চ আদালতে গোয়েন্দা পুলিশসহ একাধিক দল ফারুক আব্বাসীকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে বলে আমাদের বলা হচ্ছে। অথচ আব্বাসী নিজেই আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করেন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা সবাই ভয়ে ভয়ে চলাচল করছি। আব্বাসী ভয়ংকর লোক। তাঁর বিরুদ্ধে আগের অন্তত চারটি খুনের মামলা ঝুলছে।’
১৯৯৮ সালে ঢাকায় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর হত্যার মধ্য দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন আব্বাসী। এরপর একসঙ্গে তিনজনকে হত্যাসহ চারটি হত্যার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া রয়েছে হত্যাচেষ্টা, হামলা, দখল, চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ। সর্বশেষ গত মাসে আব্বাসীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ওই পরিবারের এক নারীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ এখনো তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এত অভিযোগের পরও আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন আব্বাসী। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলে আব্বাসীর কখনোই কোনো পদ ছিল না। তিনি কী করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পান, তা নিয়ে তখন সবাই বিস্মিত হয়েছিলেন। কার শেল্টারে আব্বাসী চলেন, তা স্পষ্ট নয়। তাঁর কর্মকাণ্ডে স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও বিব্রত।