আদালত অবমাননার অভিযোগে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান এবং শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং প্রতিষ্ঠানটির এমডি আশরাফুল হাসান। আদালতের কোনো আদেশ প্রতিপালন না হয়ে থাকলে তা অনিচ্ছাকৃত বলেও তারা উল্লেখ করেন। আদালত তাদের দুজনকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে যুক্ত হয়ে তারা এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তাদের দুজনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। সে সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আশরাফুল হাসানের পক্ষে লিখিত ব্যাখ্যা আদালতে পেশ করা হয়।
লিখিত ব্যাখ্যায় বলা হয়, আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে কোনো আদেশ প্রতিপালন না হয়ে থাকলে তবে তা অনিচ্ছাকৃত। সেক্ষেত্রে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
তবে শুনানিতে অপর পক্ষের আইনজীবী ইউসুফ আলী এই লিখিত ব্যাখ্যা সঠিক নয় বলে দাবি করেন।
এরপর আদালত ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসানকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২২ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
এর আগে গ্রামীণ টেলিকমের ৩৮ কর্মীর বিষয়ে আদেশ বাস্তবায়ন না করার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও এমডি আশরাফুল হাসানকে তলব করেন হাইকোর্ট।
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামারুজ্জামানের আনা আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এই তলব আদেশ দেন এবং ১৬ মার্চ দুজনকে ভার্চুয়াল এই হাইকোর্ট বেঞ্চে যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আশরাফুল হাসানের প্রতি ওইদিন অবমাননার প্রশ্নে রুলও জারি করা হয়।এর আগে আবেদনকারীর পক্ষে অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়। ওই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আদালত তাদেরকে নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ সত্ত্বেও তাদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। একারণে সংক্ষুব্ধরা আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন।