১৯৭১ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপ‚র্ণ অধ্যায় মন্তব্য করে স্বাধীনতার স‚বর্ণ জয়ন্তী উদযাপন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, এই দিনে ঘোষিত হয় স্বাধীনতা সংগ্রামের প‚র্ণাঙ্গ রূপরেখা। পাঠ করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার। ইশতেহারে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
বুধবার (৩ মার্চ) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে “৩ মার্চ স্বাধীনতার ইসতেহার পাঠ দিবস স্মরণে” স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন নাগরিক কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ডাকা ছাত্র জনসভায় আকস্মিকভাবে উপস্থিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সভায় বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেদিনই সভা থেকে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের চার নেতা ন‚রে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহণ করে ছিলেন।
নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব এহসানুল হক জসীম, এনডিপি ভাইস চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ প্রমুখ।
জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ এর ৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ডাকা গোলটেবিল বৈঠক ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিনই ছাত্রলীগ সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বিশাল ছাত্র জনসভায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ বঙ্গবন্ধুর সামনে পাঠ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার। আর এ ইশতেহারে বলা হয়- ‘৫৪ হাজার ৫০৬ বর্গ মাইল বিস্তৃত ভৌগোলিক এলাকার সাত কোটি মানুষের জন্য আবাসভ‚মি হিসেবে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ।
সভাপতির বক্তব্যে এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালির হৃদয়ে দানা বাঁধা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ৩ মার্চ অত্যান্ত গুরুত্বপ‚র্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায়কে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের পূর্নাঙ্গতা পাবে না।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ইশতেহারের মধ্য দিয়ে কেবল স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মস‚চি ঘোষণা হয়নি বরং প্রতিটি বিষয়ে পল্টন ময়দানে উপস্থিত লাখ লাখ জনতা হাত তুলে সমর্থন অনুমোদন জ্ঞাপন করেছিলেন। সেদিন ঢাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পাকিস্তান সরকার সান্ধ্যে আইন জারি করলেও তা উপেক্ষা করেই জনতার বিক্ষোভ ও মিছিল অব্যাহত ছিল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ২, ৩, ৭ , ৯ ও ২৩ মার্চকে যথাযথভাবে ম‚ল্যায়ন করা প্রয়োজন।