সাড়ে চার বছরের শিশু মির্জা অরুনিমা শাহপারের (অহনা) চিকিৎসায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতে স্কয়ার হাসপাতাল ও এর তিন চিকিৎসককে অব্যাহতির আদেশ বেআইনি বলে রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের ওপর জারি রুল যথাযথ ঘোষণা করে মঙ্গলবার এ রায় দেয় বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ।
শুনানিতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খান খালিদ আদনান। স্কয়ার হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া।
খান খালিদ আদনান জানান, অহনা ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৩ সালের ২৩ আগস্ট মারা যায়। তার বাবা স্থপতি মির্জা শাহপার জলিল মেয়েকে ওই বছরের ১৫ আগস্ট স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে ১৭ আগস্ট অহনাকে ব্যাংককের একটি শিশু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। অহনার বাবার অভিযোগ,স্কয়ার হাসপাতাল অহনার ভিপি শান্ট অপারেশনের পর আড়াই দিনেও তারা শিশুর ব্রেনের পোস্ট অপারেটিভ অবস্থা জানার জন্য সিটি স্ক্যান কিংবা এমআরআই করেনি।এ ঘটনায় মির্জা শাহপার জলিল ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী নওশাদ উন-নবী, ডা. মো. মাসুদুররহমান, অধ্যাপক ডা. সানোয়ার হোসেন এবং স্কয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধেদ-বিধির ৩০৪ (ক) ও ৩৪ ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেন।
আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত করে যে প্রতিবেদন দেয় তাতে বলা হয়, অহনার মৃত্যুর জন্য কারা দায়ী আদৌ কেউ দায়ী কি না এর পূর্ণাঙ্গ মতামত দেওয়া সম্ভব নয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত ডা. কাজী নওশাদ উন-নবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে অন্যদের অব্যাহতি দেয়।
এ আদেশের বিরুদ্ধে বাদী মহানগর দায়রা আদালতে রিভিশন আবেদন করলে সেটি খারিজ হয়ে যায়। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন বাদী। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের অব্যাহতির আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।
খান খালিদ আদনান বলেন, হাইকোর্টের এই আদেশের ফলে বাদী (অহনার বাবা) যে মামলা করেছিলেন সেটির কার্যক্রম চলবে। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা জানা যাবে।