জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ৮ জঙ্গির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের নথি) হাইকোর্টে এসেছে।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গত সোমবার এ মামলার রায়সহ ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছে। এখন নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শাখা এসব নথি যাচাই শেষে পেপারবুক (মামলার যাবতীয় বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করবে।’
ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হলে সেটি কার্যকরে উচ্চ আদালতের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। রায়ের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী মামলার রায়সহ যাবতীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত। হাইকোর্টে নথি আসার পর সংশ্লিষ্ট শাখা এসব নথি যাচাই শেষে পেপারবুক প্রস্তুত করে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা আসামিরা আপিলের সুযোগ পান। পেপারবুক প্রস্তুত সাপেক্ষে হাইকোর্টে সংশ্লিষ্ট মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির পর্যায়ে আসে।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান গত ১০ ফেব্রুয়ারি চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সর্বোচ্চ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া (চাকরিচ্যুত মেজর), আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। আসামিদের মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয় রায়ে। একই সঙ্গে আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডসহ পলাতক জিয়া ও আকরামের সাজা পরোয়ানা ইস্যু করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয় আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। লেখক-প্রকাশক, ব্লগার, অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের ওপর ধারাবাহিক হামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে দীপনকে গলা কেটে হত্যা করে আনসার আল ইসলামের জঙ্গিরা। দীপন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের ছেলে।