আইনী শুন্যতা একটা সমাজকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে পারে। দেশ ও জাতি গঠনের জন্য একজন শিক্ষকের ভুমিকা অপরিসীম। জাতি গঠনের শক্তি তরুণ আর তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠে শিক্ষকের হাত ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দেশের সামাজিক বা রাজনৈতিক সংকট কালে আশার আলো হয়ে কাজ করতে পারেন। একজন শিক্ষক নিজের জ্ঞানের পরিধিকে যেমন জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে বৃদ্ধি করেন তেমনি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পথ দেখিয়ে দেশ ও জাতি গঠনে ভুমিকা রাখেন । এমন চিন্তার একজন হলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের তরুণ শিক্ষক জনাব মাহবুবুর রহমান । আইনের কঠিন বিষয়ে তার সহজ উপস্থাপনা যেমন শিক্ষার্থীদের বিশেষ উপকারে আসতে পারে তেমনি তার ভূমি আইনের উপর সম্প্রতি লেখনি অনেকের কাছেই খুবই সমাদ্রিত হয়েছে।
তার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ হয়।তার সাথে বিশেষ আড্ডায় ছিলেন আইনী পাঠশালা টিমের (এপিএসনিউজ২৪.কম) পক্ষে নূরুন্নবী সবুজ ।
শিক্ষকতা পেশাকে আপনি কিভাবে দেখেন?
আমি মনে করি শিক্ষকতার চেয়ে মহান পেশা আর কিছুই নাই। শিক্ষকতা আসলে কোন পেশা না, এটি একটি মিশন। শিক্ষক হলো জাতি গঠনের অনন্য কারিগর। একজন শিক্ষক যেখানেই পড়ান না কেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, প্রত্যেকটা যায়গাতেই তার অবদান সমানভাবে অনস্বীকার্য৷ দেখুন, আল্লাহ প্রত্যেক যুগে তার নবী- রাসুলদেরকে শিক্ষক হিসেবেই প্রেরণ করেছেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সঃ) নিজে বলেছেন – আমি মানবজাতির শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। তিনি বলেন নি যে তিনি শাসক হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন।তাছাড়া আমরা যেসকল মহামানবের নাম শুনি বা জানি, অধিকাংশই তাদের নিজ নিজ জাতির কাছে শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কারণ মানুষ গড়ার পেছনে যাদের সরাসরি অবদান থাকে তারা হলেন শিক্ষক। তারা জ্ঞানের জগতে বিচরণ করার পথ তৈরী করে দেন।শুরুর কাজটা সব সময় কঠিন। তারা সেই কঠিন কাজটা খুব আন্তরিকতার সাথে করেন।
একটি জাতিস্বত্বার উন্নয়নের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কতটুকু ভূমিকা রাখে বলে আপনি মনে করেন?
দেখুন, একটা দেশ কেমন হবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে সেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উপর৷ আর শিক্ষাব্যবস্থার উচ্চতর বিদ্যাপিঠ তথা বিশ্ববিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে বুনিয়াদী যায়গায় দাড়িয়ে থাকে। যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষক যত উন্নত, সে দেশ ও ততো উন্নত বা ক্ষমতাবান। আমরা প্রায়ই বলি, Knowledge is power. । এই কথাটা শতভাগ সত্য। একটা হিসাব যদি আমরা করি তবে সহজেই বোঝা যাবে। যে সময় মুসলিমদের হাতে সবচেয়ে ভালো ভালো বিদ্যাপিঠ যেমন, বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় এর মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠন ছিল তখন মুসলিম জাতিই বিশ্ব কে নেতৃত্ব দিয়েছে। এর পর ব্রিটিশরা তৎকালীন সময়ের মাত্র ৫০০ পাউন্ড এর মত খরচ করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। অথচ সেই সময়ে মুসলিমরা ভোগ বিলাসে মত্ত হতে শুরু করে। যেমন ধরুন ভারতে সম্রাট শাহজাহান তাজমহল গড়তে খরচ করেছেন ১৬৫৩ সালের সময় হিসাবে ৩২ মিলিয়ন রুপি। আপনি উইকিপিডিয়া দেখতে পারেন। হিসাবটা পেয়ে যাবেন। যা ২০২০ সালের সময় সাপেক্ষে ৭০ বিলিয়ন রুপি বা ৯১৬ মিলিয়ন আমেরিকান ডলারের সমপরিমাণ। দেখুন, সেই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি যখন বিশ্বের শ্রেষ্ট বিদ্যাপিঠ ছিল তখন ব্রিটিশরা তামাম দুনিয়া শাসন করেছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্নজীবনীতে পড়েছি -তিনি ভারত বর্ষ সফর করতে যেয়ে আফসোস করেছেন এই বলে যে এক সময়ের মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীদের বিলেত শহর কিনে ফেলার যোগ্যতা ছিল। সুতরাং এতো শান-শওকত থাকার পরেও এ অঞ্চলের মানুষ ব্রিটিশদের দ্বারা শোষিত হয়েছে। আজকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সহ শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ গুলো আমেরিকাতে অবস্থিত। আমেরিকা সারা বিশ্বকে শাসন করে। লজিক্যাল কনসিক্যুয়েন্স।আর বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হবে তা নির্ধারিত হয় তার শিক্ষক ও ছাত্র – ছাত্রীদের মানের উপর ভিত্তি করে।
কিন্তু বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা কি গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত?
আমাদের গবেষণা সুযোগ সুবিধা ও অর্থ বরাদ্দ কম। এটা তো আমাদের মানতেই হবে। তবে সমস্যা মোকাবেলা করে তার সমাধানের চেষ্টা করাটাই জয়ী মানুষের কাজ। তবে শুধু গবেষণা -গবেষণা বলে চেচালেই তো হবে না। তার জন্য পরিবেশ, সুযোগ সুবিধাও দরকার। আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করুন। সরকার আমলা, পুলিশ অর্থাৎ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যাদের সহযোগিতা সরাসরি দরকার, তাদের যে সুবিধা দেয় তা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য দিচ্ছে? প্রশাসন , পুলিশ আর আর্মির একটু উর্ধতন কর্মকর্তা হলেই সে গাড়ি পাচ্ছে। তেল খরচ বাবদ মোটা অংকের টাকা পাচ্ছে। কিন্তু, প্রফেসরদের জন্যও তো এমন কোন বরাদ্দ নেই। হ্যা, শিক্ষকগণ তাদের নিজ যোগ্যতায় অনেকেই এগুলো করছেন। কিন্তু এই গাড়ি – বাড়ীর পেছনে ছুটতে যেয়ে গবেষণা ব্যহত হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন খুব বেশী ক্ষমতার পেছনে ছুটতে ভালোবাসে।
পড়া লেখা শেষ হলেই একটাই প্রশ্ন-বিসিএস ক্যাডার হয়েছো কি না?
তাও, পুলিশ আর প্রশাসন না হলে চলবে না। একটা দেশতো শুধু এগুলো দিয়ে চলতে পারে না। অথচ আজকে দেখুন এই যে করোনা রোগের মহামারীতে বুঝা যাচ্ছে গবেষণার কত বেশী দরকার। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর ডাক্তারগণই এগিয়ে এসেছেন টেস্টিং কীট উৎপাদনের জন্য। কারণ এখন আর রাইফেল, অস্ত্র দিয়ে কোন কাজ হবেনা। প্রয়োজন প্রতিষেধক, টেস্টিং কীট, যেগুলো গবেষণা ছাড়া প্রাপ্তি অসম্ভব। ডাক্তার দের আজ জাতির ক্রান্তি লগ্নে এতো প্রয়োজন হচ্ছে। অথচ তাদের পদন্নোতি ঠিক মত হয় না। আমি অনেক ডাক্তার কে দেখেছি চাকুরী জীবনের শেষে এসে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে চাকুরী শেষ করেছেন। ফলে অনেকেই এমবিবিএস পাশ করে চিকিৎসা পেশায় না এসে প্রশাসন বা পুলিশের চাকুরীর জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন। হ্যা, দেশে সুশাসন থাকলে এগুলো ঘটতো না হয়তো। কারণ মানুষ যখন সামাজিক অনিরাপত্তায় ভোগে তখনই ক্ষমতার বেশী প্রয়োজন অনুভব করে। স্থানীয় একজন কাউন্সিলর যখন কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধর করেন বা গালাগালি করেন, বা এলাকার ছিচকে নেতা কলেজের অধ্যক্ষের গায়ে হাত তোলেন, তখন সেবা বা নিজ বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট পেশার থেকে ক্ষমতাটাই মুখ্য হয়ে দাড়ায়। যার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে যেয়ে দেখবেন র্যাকের উপর সারি সারি বই ধুলামলিন হয়ে পড়ে আছে। আর সবার হাতে কারেন্ট অ্যাফেয়্যার্স আর MP3 বই।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব কতটুকু বলে মনে করেন?
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীতা অনেক বেশী। কারণ রাষ্ট্র জনসংখ্যার তুলনায় সেই পরিমান বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করতে পারেনি যে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহনের সুযোগ দিতে পারবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব থেকেও বড় প্রশ্ন হলো কতখানি মান বজাই রেখে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে? সকল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ , মান সংরক্ষণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন রয়েছে।
প্রশ্ন হলো সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ন্ত্রনে কতটুকু যত্নশীল,?
কারণ বাংলাদেশে এমন অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যাদের শিক্ষকদের যোগ্যতা বিশ্ব মানের। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে নূন্যতম মান টুকুও নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। একটা দেশে ১০০ এর বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশেরই যবুথবু অবস্থা। রাজনৈতিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক পক্ষ এমন আছে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসেপ্ট বা তত্ত্বের সাথেই পরিচিত নন।
আজো কেন একটা নূন্যতম বেতন কাঠামো গড়ে ওঠেনি?কেন পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন বিষয়ের অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হয়?
নজরটা রাখা দরকার কোয়ালিটি এডুকেশন এ, কুয়ান্টিটি বা সংখ্যার দিকে নয়। খুব নিকট একটা ঘটনা বলি, এই যে করোনা পরিস্থিতিতে গত মার্চের ১৭ তারিখে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেল। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মার্চ মাসের বেতন ঠিকঠাক প্রদান করেনি।এর মধ্যে নাম করা দুটি প্রতিষ্ঠান যথাঃ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আর ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নাম উঠে এসেছে যারা নিয়ম মাফিক বেতন পরিশোধ করেনি।যা নিয়ে পত্র -পত্রিকায় নিউজ হয়েছে।
আমার প্রশ্ন হলো তাদের কি টাকার অভাব?
ইচ্ছা মতো যে যার খুশি সেভাবে চালাচ্ছে। ঈদেও তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১০-১৫ দিন বন্ধ থাকে। তাহলে ১৭ তারিখ ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়াতে কি এমন ঘটে গেল যে বেতনটা ঠিক মতো দিল না। এটাতো আর পোষাক শিল্প বা উৎপাদন মুখি কোন প্রতিষ্ঠান না যে বন্ধ থাকাতে আয় কম হয়েছে তাই বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে। সাময়িক এই ছুটির কারণে নিশ্চয় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী আর পড়ালেখা করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ভর্তি বাতিল করে বাড়ি চলে যায় নি(!!) সুতরাং সমস্যা হলো নিয়ন্ত্রণে। সরকারকে এগুলো খুব শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রন করা দরকার। আর যারা মান নিয়ন্ত্রন করে বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে পারবে না তাদের বিশ্ববিদ্যালয় করার দরকার নেই। অন্য প্রতিষ্ঠান করুক। দেশের অর্থনীতি ভালো হবে। আবার একটি কথা উল্লেখ করতে চাই। অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ভালো কিছু করতে চায়। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় সে সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকার যথাযথ সহযোগীতা করে না।আমার প্রাক্তন কর্মস্থল গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথায় বলি। সেখানে ২০১৮ সালে সরকার দলীয় লোকজন যেয়ে ভাংচুর করেছিল। পুলিশ যেয়ে কোন এক অদৃশ্য কারনে গণস্বাস্থ ফার্মাসিউটিক্যালস এর কোটি টাকা মূল্যমানের মেশিন-পত্র ভাংচুর করে। কোন কারণে? অথচ আজ দেখুন করোনা পরীক্ষার জন্য টেস্টিং কীট উৎপাদন করার জন্য গণ বিশ্ববিদ্যালয় আর গণস্বাস্থ যে ভাবে এগিয়ে এসেছে তাতো বাংলাদেশে আর কেউ ই পারেনি। আজকে কোন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজতো এভাবে এগিয়ে আসতে পারেনি।
অনেকেই বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল বিষয় দরকার নেই , আপনার মতামত কি? না।
আমি মনে করি প্রত্যেকটি বিষয়ই একটি দেশ বা জাতির জন্য দরকার।প্রত্যেকটি বিষয় মানুষের জন্য প্রয়োজন বলেই সৃষ্টি হয়েছে। কৃষ্টি কালচার থেকে শুরু করে প্রযুক্তি, সবকিছু নিয়েই একটি দেশ এগিয়ে যায়। মানুষের দেহের প্রতিটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই যেমন দরকারী, ঠিক তেমনি কোন বিষয় বাদ দিয়ে দিলে বিভিন্ন প্রয়োজনের সময় দেশ সংকটে পড়ে যাবে। তবে কর্মমুখী শিক্ষার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিৎ।
আইনের শিক্ষক হিসেবে আপনার ভালোলাগার দিক কোনটি?
আইন এমন একটি বিষয় যার প্রতিটি লাইনে লাইনে নতুন নতুন কিছু শেখার থাকে। এবং তা অবশ্যি মানুষের বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত প্রাক্টিক্যাল বিষয়। পড়ার সময়ই মনে হয় কিছু একটা শিখলাম।আইন মানবসভ্যতার শুরু থেকেই ছিলো। দিন দিন এর কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সার্বজনীন মানবাধিকার রক্ষায় ভালো আইনের কোন বিকল্প নেই। আইনী শুন্যতা একটা সমাজকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আইন সম্পর্কে সচেতন মানুষ অন্যায় করতে দ্বিধা বোধ করবেন আবার তার ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেওয়াটাও কারো জন্য এতো সহজ না।মানবসেবার এক বিরাট ক্ষেত্র হলো আইন।মজার ব্যপার হলো আইনের মাধ্যমে সমাজের সাধারণ মানুষের অধিকার সংরক্ষণের যেমন সুযোগ আছে তদ্রূপ অধিকার হরণের সুযোগ ও থাকে৷ অবশ্য সেটাকে আমরা কালো আইন বলি।
বাংলাদেশে আইন শিক্ষার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা কি?
বাংলাদেশে মেধাবী নতুন প্রজন্মের অনেকের প্রথম পছন্দ আইন। আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সাথে আইন বিষয়ের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও বাড়ছে। যেমন এখন খেলা-ধুলা নিয়েও আইন হচ্ছে, আদালতে মামলা হচ্ছে। নতুন নতুন কাজের পরিধি বাড়ছে। বাংলাদেশ তথা সারা পৃথিবীতে আইনের মত বহুমুখী কর্মক্ষেত্রের সম্ভাবনাময়ী বিষয় খুব কমই আছে।তাছাড়া এই বিষয় পড়ে দেশের সেবা করার মত অনেক সুযোগ রয়েছে।
আইন শিক্ষা নিয়ে আপনার বিশেষ কোন সুপারিশ আছে কি?
আইন আমাদের দেশের গণ মানুষের অভ্যন্তরীণ আচরণ পরিবর্তনে খুব বেশী কাজ করছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরেই যারা আইন নিয়ে পড়ে তারাই মূলত আইন জানার ও বুঝার সুযোগ পায় । আমাদের আইন বিষয়ক অতীব প্রয়োজনীয় কিছু কিছু বিষয় নিম্ন স্তর থেকেই শিখানো উচিত । ব্যবহারিক ক্লাসের প্রতি জোর দেওয়া উচিত। সামাজিক শিক্ষা ও সচেতনতা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এপিএস নিউজ পরিবার থেকে আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকেও ধন্যবাদ।