সব
facebook apsnews24.com
শিক্ষানবিশি অন্তে সনদ চাই: আইনজীবী সনদ আমার অধিকার - APSNews24.Com

শিক্ষানবিশি অন্তে সনদ চাই: আইনজীবী সনদ আমার অধিকার

শিক্ষানবিশি অন্তে সনদ চাই: আইনজীবী সনদ আমার অধিকার

প্রখ্যাত মনীষী আব্রাহাম লিঙ্কন-এর উক্তি, “ আপনি যদি আইনজীবী হওয়ার জন্য মনস্থির করেন। তাহলে ধরে নেন এর অর্ধেক হয়ে গেছে”। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কর্মকান্ডের সম্পূর্ণ বিপরীত বিষয় আমরা দেখছি। এল.এল.বি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করার পরেও ইচ্ছা পোষণ করলেই আইনজীবী হওয়া সুযোগ নেই। শিক্ষানবিশিদেরকে আইনজীবী সনদের অধিকার থেকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বঞ্চিত করে যাচ্ছে। আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার মারপ্যাঁচে ৮০ ভাগ আইন শিক্ষার্থী আইন পেশায় যুক্ত হতে পারে না। আইনের ছাত্রদের আইনজীবী হওয়া স্বাভাবিক, এটাই প্রত্যাশিত। এমবিবিএস পাশ করে ডাক্তারি না করা যেমন অনাকাঙ্খিত, তেমনি ‘ল’ গ্রাজুয়েটদের ক্ষেত্রেও বেমানান লাগে। এদেশে আইন শাস্ত্রে ¯স্নাতককধারীদের সেবামূলক বৃত্তি বা আইন ব্যবসায় প্রবেশে অনুমতি পত্রের জন্য নানান প্রতিবন্ধকতায় বেকারত্বকাল প্রলম্বিত হচ্ছে। আইন পেশার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বার কাউন্সিলের অযৌক্তিক নিয়ম-কানুনে এল.এল.বি(পাস) বা এল.এল.বি(সম্মান) পাশ করা হাজার-হাজার ছাত্রছাত্রী পেশাগত অনিশ্চয়তার কবলে পতিত হচ্ছে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সরকারের একটি সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে মহামান্য রাষট্রপতির ৪৬ নম্বর আদেশ, ১৯৭২(ইধহমষধফবংয খবমধষ চৎধপঃরঃরড়হবৎং ্ ইধৎ ঈড়ঁহপরষ ঙৎফবৎ,১৯৭২) দ্বারা গঠিত হয়ে আইনজীবীদের পেশার সনদ প্রদান ও নিয়ন্ত্রণ করে। বাংলাদেশর ঘোষণাপত্র অনুযায়ী বাংলাদেশ সাময়িক সংবিধান আদেশ ১৯৭২ অনুসারে রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত ক্ষমতাবলে তিনি এ আদেশ প্রদানে সম্মত হয়।

অনুচ্ছেদ ২৭(১) ক, অনুযায়ী একজন ব্যক্তি ৭ বছর ধরে মোক্তার হিসাবে কাজ করলে এবং বার বর্ণিত শর্তসাপেক্ষে বিনা পরীক্ষায় আইজীবী তালিকাভুক্ত হতে পারে।৬০(২) বিধি অনুযায়ি অ্যাডভোকেটের অধীনে ৬ মাস সনদ প্রার্থীকে শিক্ষানবিশ (চঁঢ়রষব) হিসাবে কাজ করতে হয়। যে অ্যাডভোকেটের অধীন শিক্ষানবিশ চুক্তিবদ্ধ হয় তার সাথে চুক্তি করার মেয়াদ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে উক্ত চুক্তিপত্রসহ আবেদনপত্র বার কাউন্সিলে পেশ করা হয়।বার কাউন্সিলে চুক্তিসমেত আবেদন পৌঁছালেও অ্যাডভোকেট হিসাবে গ্রাহ্য হয়না। এল.এল.বি ¯স্নাতক ডিগ্রিধারী সনদ প্রার্থী বার কাউন্সিলের অধীনে এমসিকিউ, লিখিত ও মৌখিক ও মৌখিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হলে অ্যাডভোকেট হিসাবে গ্রহণীয় হয়।একজন আইনজীবী সহকারি(মুহুরী) আদালতে কার্যসম্পাদন করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারলেও শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে বেকার বসে থাকতে হয়।

অহেতুক পরীক্ষার কবলে শিক্ষানবিশদের বেকার জীবনের দুর্বিষহ ভার বহন করতে হচ্ছে। ৬ মাসব্যাপী জুুনিয়রশীপ শেষে শিক্ষানবিশের অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষা বছরে ২ বার গ্রহণের নিয়ম থাকলেও হয়না। বার কাউন্সিলের ব্যর্থতার দায় কে নেবে? বার কাউন্সিলের জবাবদিহিতা কোথায়? কিসের স্বার্থে এই অন্যায় পরীক্ষা পদ্ধতি?
বিশিষ্টজন চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সাঈদ আহসান খালিদ বলেছেন “বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষা তুলে দেওয়া উচিত। প্রিলিমিনারী, লিখিত, ভাইভা এই তিন স্তর বিশিষ্ট পরীক্ষা পদ্ধতির জটিলতা, বছরে মাত্র এক বার পরীক্ষা গ্রহণ করে সেটির চূড়ান্ত ফলপ্রকাশে মাসের পর মাস এমনকি ব্ছর পেরোনোর অপেক্ষা ও দীর্ঘসূত্রিতা বার কাউন্সিলের চরম দায়িত্বহীন কাজ ও কর্তব্য অবহেলার দৃষ্টান্ত। হাজার-হাজার আইনে গ্র্যাজুয়েটদের আইনজীবী হিসাবে ক্যারিয়ার গড়ার এইস্বপ্ন তালিকাভুক্তির গ্যাঁড়াকলে পড়ে, খুন হচ্ছে, ০৬ মাসের শিক্ষানবিশি কাল প্রলম্বিত হতে হতে অনেকের জন্য অনন্তকালের রুপ নিয়েছে। এটি অন্যায়।”

আইন পেশা ছাড়া আর কোন বিশেষায়িত পেশায় এই “তালিকাভুক্তি পরীক্ষা” নামক সিস্টেমের অস্তিত্ব নাই। আইনও এমবিবিএস, বিডিএস, ইঞ্জিয়ারিং ফার্মাসি ইত্যাদি বিষয়ের মতো একটি হাইলি স্পেশালাইড ও প্রফেশনাল সাবজেক্ট। একাডেমিক ডিগ্রি অর্জন শেষে বাংলাদেশে এমবিবিএস বা বিডিএস গ্র্যাজুয়েটরা তালিকাভুক্তি পরীক্ষা ব্যতিরেকে (ইধহমষধফবংয গবফরপধষ ্ উবহঃধষ ঈড়ঁহপরষ-ইগ ্ উঈ) এর অধীনে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করে নিবন্ধিত হয়ে রেজিস্টার্ড ডাক্তার বা ডেন্টিস্ট হিসেবে পেশাজীবন শুরু করে। একইভাবে যারা ভেটেনারি ও এ্যানিমেল সায়েন্স এর উপর ডিগ্রি অর্জন করে তাদের কোন ‘তালিকাভুক্তি পরীক্ষা’র সম্মুখীন হতে হয় না। ইধহমষধফবংয ঠবঃবৎরহধৎু ঈড়ঁহপরষ এ আবেদন করে ভেটেনারি প্র্যাকটিশনারহিসেবে নিবন্ধিত হয়ে পেশা জীবন শুরু করে। অন্যান্য বিশেষায়িত পেশা জীবনে প্রবেশের প্রক্রিয়া বিবেচনায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীদেরকে বার কাউন্সিল আইনজীবী সনদ প্রদান করা উচিত।

আইনজীবী সনদ অর্জনে আইন শাস্ত্রে ¯স্নাতকধারীদের আইনজীবী তালিকাভুক্তি করার দাবিতে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের একাত্ম হওয়ায় বিকল্প নেই। এই নৈতিক ও যৌক্তিক দাবিতে কার্যকর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও আইন শিক্ষার্থী এক হও! ইতোপূর্বে বার কাউন্সিল এল.এল.বি গ্রাজুয়েটদেরকে আবেদনের ভিত্তিতে অহেতুক পরীক্ষা পদ্ধতি ছাড়াই আইনজীবী তালিকাভুক্তি পদ্ধতি বলবৎ করেছিল, এটাও যৌক্তিক ছিল।

গত ৩১ অক্টোবর রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলন আহুত সংবাদ সম্মেলনে পঠিত বক্তব্য পাঠকের উদ্দেশ্যে পেশ করছি:
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলনের পক্ষ থেকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
একটি বিশেষ সংকট, সংকট মোচনের উপায় ও আন্দোলন প্রসঙ্গে আপনাদের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ও দেশবাসীকে অবহিত করতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন আমরা আয়োজন করেছি।

সুদীর্ঘকাল ধরে আইন পেশা সমাজের কাছে অত্যন্ত সম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। জনজীবনের নানা সংকটে ন্যায়বিচার পেতে মানুষ আদালতের শরণাপন্ন হন। বাদী এবং বিবাদী পক্ষের আইনজীবীগণ তাদের মেধা ও প্রজ্ঞা কাজে লাগিয়ে যুক্তি-তর্কের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যাসত্য নির্ণয়ে ভূমিকা রাখেন,যার ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সংকট নিরসন করেন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবীদের অভিভাবক হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কাজ করে আসছে।

একটি সেবামূলক বৃত্তি হিসেবে ন্যায়পরায়ণতা ও মানবাধিকার সংরক্ষণে নিজেদের যুক্ত করতে অসংখ্য তরুণ নিজেদের আইনজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন। আমাদের দেশে চলমান পদ্ধতি অনুযায়ী একজন আইনের ছাত্র বিশ^বিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ¯œাতক বা এলএলবি (সম্মান) অথবা এলএলবি (পাস) উত্তীর্ণ হওয়ার পরপরই আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে পারেন না। তাকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অধীনে আবার তিন ধাপের পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পর আইনজীবী সনদ দেয়া হয়। কখনো-কখনো এ তিন ধাপের পরীক্ষা একবার সম্পন্ন হতে তিন-চার বছর সময় লেগে যায়। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দেশ বেকারত্ব বৃদ্ধির হারে বিশে^ শীর্ষের তালিকায় অবস্থান করছে। সেইসঙ্গে অধিকাংশ তরুণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এমন নয় যে ¯œাতক বা ¯œাতকোত্তর সম্পন্ন করার পরও ৩-৪ বছর বা আরো বেশি সময় উপার্জনহীন অথবা এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পিছে ছুটতে পারবেন। ফলে দেখা যায় যে আইনে ¯œাতকদের শতকরা আশি জনেরও বেশি আইন সম্পর্কিত পেশায় যুক্ত হতে পারছেন না। এ প্রেক্ষিতে আইন পেশার বাইরে অন্য কোন পেশা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে জনগণ একদল চৌকস,স্বপ্নবান,মেধাবী তরুণের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

¯স্নাতক পর্যায়ে আইনশাস্ত্রের বিভিন্ন শাখা কোর্স হিসেবে পড়ানো হয়। কোন কোন বিষয় পড়া প্রয়োজন তা বিবেচনা করেই পাঠ্যসূচি নির্ধারিত হওয়ার কথা। এসব বিষয় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও পেশা প্রবেশের পথে আবার পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। অথচ আইনজীবী কোন বেতনভুক্ত চাকুরে নন। এটি একটি অসঙ্গতি হিসেবে প্রতীয়মান হয়। আইনে ¯œাতক সম্পন্ন করাটাই আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা নির্দেশক। স্নাতক ডিগ্রি যদি যোগ্যতার পরিচায়ক না হয় তবে বিষয়টি বিশ^বিদ্যালয় ও তার শিক্ষাপদ্ধতিকে হেয় প্রতিপন্ন করে অথবা ত্রুটি নির্দেশ করে। আইন শিক্ষায় ত্রুটি থাকলে পাঠ্যসূচি ও পঠন-পাঠন পদ্ধতি সংস্কার করে ত্রুটি দূর করার প্রয়োজন নির্দেশ করে। ইতিপূর্বে আইনজীবী অন্তর্ভুক্তকরণ পরীক্ষা নিয়ে অনিয়মের বহু অভিযোগ উঠেছে। সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও আস্থার প্রতিক প্রতিষ্ঠান বাংলদেশ বার কাউন্সিলের ভাবমূর্তিকেও যা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অথচ সহজেই বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের মত সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান এসব বিতর্ক এড়িয়ে চলতে পারত। প্রতি বছর দুইবার প্রচলিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা হওয়ার নিয়মনীতি থাকলেও কর্তৃপক্ষ আযোজন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ভুলনীতির মাধ্যমে আইনজীবী অন্তর্ভুক্তিকরণ পদ্ধতি বাতিলের বিকল্প নেই।

আবার এ পরীক্ষা,উত্তীর্ণদের পেশাজীবনে কোন কার্যকর প্রভাব রাখতে পারে না। বরং বিকল্প উপায়ে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সনদ প্রদান করা সম্ভব ছিল। শিক্ষানবিশকালে প্রশিক্ষণ কর্মশালা,সেমিনার-সিম্পোজিয়াম ও অ্যাসাইনমেন্টের আয়োজনের মাধ্যমে সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে অধিক সহায়ক বলে আমাদের কাছে বিবেচিত।

আমরা দেখতে পায়,চিকিৎসাও এমন সেবামূলক পেশা,যাদের হাতে মানুষের বাঁচা-মরা সবসময় নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে কেউ এমবিবিএস পাশ করার পর নির্দিষ্ট মেয়াদের শিক্ষানবিশকাল শেষে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল এ্যাসোসিয়েশনের ফরম পূরণ সাপেক্ষে ব্যক্তিগতভাবে পেশা জীবনে প্রবেশ করতে পারে। একই কথা খাটে স্থপতি ও প্রকৌশলীদের ক্ষেত্রেও।

আবার যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য,ফ্রান্স,ইতালিসহ প্রভৃতি দেশের প্রথিতযশা আদালতেও এরূপ পরীক্ষা পদ্ধতির অস্তিত্ব নেই। ভারতসহ পাশর্^বর্তী দেশসমূহের পদ্ধতিও আমাদের তুলনায় সরল। ১৯৮১ সালের আগে আমাদের দেশেও এরূপ পরীক্ষা ছিলনা। ২০১২ সালের আগে চলমান তিন ধাপের পরীক্ষা পদ্ধতি ছিলনা। পরীক্ষাহীন পদ্ধতিতে সনদ পেয়েও তৎকালীন আইনজীবীদের অধিকাংশই নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে আদালত ও বিচার ব্যবস্থার মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

মামলাজট নিরসন ও বিচারিক ব্যবস্থার সেবা জনগণের নাগালে নিতে উপজেলা পর্যন্ত আদালত সম্প্রসারণ,এমনকি গ্রাম আদালতে বিচারক,আইনজীবী,কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করার মাধ্যমে আইন সংশ্লিষ্ট পেশায় অধিক সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব। বিভিন্ন দেশে কোর্ট লয়্যার ও অ্যাডভাইজার লয়্যার পৃথকভাবে কর্মকা- পরিচালনা করেন। এ অভিজ্ঞতা আমাদের দেশে প্রয়োগ করা যেতে পারে যা বিশেষায়িত কর্মক্ষেত্র হিসেবে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। এসব উদ্যোগে অনেকগুলি সংকট সমাধান করা সম্ভব।

এসব বিবেচনা থেকে আইন ¯স্নাতকদের ভোগান্তি দূর করে পেশাজীবনে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে একটা কার্যকর গণ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে গত ১৩ আগস্ট,২০২০,ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতি ভবনের হলরুমে আইনজীবী,শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও আইন শিক্ষার্থীদের এক সভা থেকে আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলন নামক প্লাটফর্ম গড়ে তোলা হয়। পরবর্তীতে ৪ দফা দাবিনামা প্রণয়ন করে দাবি আদায়ে ১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস থেকে ১৭ অক্টোবর, ২০২০ দাবি মাস পালনের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শেষে গত ১৮ অক্টোবর,২০২০ ‘দাবি দিবস’ পালনের অংশ হিসেবে সারাদেশ থেকে ডাকযোগে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সচিব বরাবর স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। মাসব্যাপী প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি শেষে গত ১৮ অক্টোবর ঢাকা,খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, নড়াইল, কুষ্টিয়া, ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ, যশোর, রাজবাড়ী, বরিশাল, নাটোর, সিলেট ও খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন জেলায় দাবি দিবসের কর্মসূচি পালিত হয়।
আমাদের দাবিনামা:

 জটিল,সময়সাপেক্ষ ও হয়রানিমূলক তিন ধাপের পরীক্ষা নামক ছাঁটাই প্রক্রিয়া বাতিল কর। উপজেলায় আদালত চালু কর,গ্রাম আদালত পর্যন্ত বিচারক নিয়োগ ও আইনজীবীদের কার্যক্রম বিস্তৃত কর।

 আইন ¯œাতকদের শিক্ষানবিশকাল এক বছর কর। শিক্ষানবিশকালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ কর্মশালা,সেমিনার ও অ্যাসাইনমেন্টের আয়োজনের মাধ্যমে সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন কর। নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মশালা-সেমিনার-প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ ও অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান সাপেক্ষে আইনজীবী সনদ প্রদান কর।
 বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সমন্বয় সভার মাধ্যমে নির্দিষ্ট মেয়াদে আইনে ¯স্নাতক পর্যায়ে কাম্য ছাত্র সংখ্যা নির্ধারণ কর অথবা বিশেষ প্রতিষ্ঠান গঠন করে আইনের ছাত্র সংখ্যা,সিলেবাস ও পেশাগত সংকট সমাধানে সমন্বয়ের ব্যবস্থা কর।

 বিজ্ঞ আদালতে মামলা পরিচালনায় নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত শিক্ষানবিশ আইনজীবীর অংশগ্রহণের ব্যবস্থা কর। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে অন্তর্ভুক্তিকরণের পূর্ব পর্যন্ত ন্যূনতম শিক্ষানবিশ সম্মানী ফি নির্ধারণ কর ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সমিতির মাধ্যমে প্রাপ্তি নিশ্চিত কর।

উপর্যুক্ত দাবি আদায়ে আমরা পরবর্তী দুই মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আমাদের কর্মসূচি নি¤œরূপ:
নভেম্বর,২০২০:
দাবি পক্ষ: ১ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি পক্ষ পালিত হবে। দাবিনামা পরিচিতকরণ ও জনপ্রিয়করণের উদ্দেশ্যে পক্ষজুড়ে দেশব্যাপী সভা,সেমিনার,সিম্পোজিয়াম,মতবিনিময়,গোলটেবিল বৈঠক,মানববন্ধন,অবস্থান ও সমাবেশ পালিত হবে। এসব কর্মসূচিতে আইনজীবী,শিক্ষানবিশ আইনজীবী,আইনজীবী সহকারী,আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ,আইন শিক্ষক,আইন শিক্ষার্থী,অভিভাবক,ছাত্র-যুব সংগঠক,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক,গণমাধ্যমকর্মীসহ সুধীজনদের যুক্ত করার প্রচেষ্টা থাকবে।
০১ নভেম্বর : আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল মাননীয় এ্যাটর্নী জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করে ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে স্মারকলিপি পেশ করবেন।
সাংগঠনিক পক্ষ: ১৬ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর সাংগঠনিক পক্ষ পালিত হবে। এ পক্ষে সাংগঠনিক যোগাযোগ বৃদ্ধি ও সংহতকরণ,কমিটি গঠন,কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সফর সম্পন্ন করা হবে।
ডিসেম্বর,২০২০: জেলা,কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে গোলটেবিল ও মতবিনিময় সভা আয়োজিত হবে। করোনামহামারি পরিস্থিতির তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি হলে ২৬ ডিসেম্বর,২০২০ ঢাকায় আইনজীবী সনদ অধিকার কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যথায় একই দিনে আইনজীবী,সংবিধান বিশেষজ্ঞ,শিক্ষক,প্রগতিশীল আইনজীবী সংগঠন,প্রগতিশীল ছাত্র-যুবও সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে জাতীয় গোলটেবিল বৈঠক আয়োজিত হবে।

গণমাধ্যমকর্মী বন্ধু,
বিভিন্ন সময়ে জনগুরুত্বপূর্ণইস্যুতে আন্দোলন গড়ে উঠলে সংকটের স্বরূপ উদ্ঘাটনের প্রয়োজনে ভূক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা এবং লড়াইয়ের কথা আপনাদের মাধ্যমেই আপামর জনগণ অবগত হয়। জনগণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের জীবন-জীবিকা-মর্যাদা ও সর্বসাধারণের অত্যাবশকীয় সেবা সংক্রান্ত আলোচ্য বিষয়টি ও আমাদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচিও যথাযোগ্য মর্যাদা দাবি করে। অতীতের বিভিন্ন সময়ের মত চলমান আন্দোলনের বক্তব্য প্রচারেও আপনাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা আমরা প্রত্যাশা করি।
গভীর দুঃসময়ে এখানে এসে দীর্ঘক্ষণ ধরে আমাদের বক্তব্য শোনা ও আলোচনায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আজকের সংবাদ সম্মেলন সাফল্যম-িত করে তোলায় আপনাদের অন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একইসাথে আইন পেশার সংকট নিরসন ও সেবার মান উন্নতকরণে তারুণ্যের স্বপ্ন বাঁচাতে আইন শিক্ষার্থী, শিক্ষানবিশ আইনজীবী, আইন শিক্ষক, বিজ্ঞ আইনজীবী, অভিভাবক, সাংবাদিক, সচেতন নাগরিক ও সুধিজনের অংশগ্রহণে আমাদের উত্থাপিত ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি আদায়ে কার্যকর গণআন্দোলন গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

উপরোক্ত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক অবিলম্বে বার কাউন্সিল চালিত বর্তমানের আইনজীবী অন্তর্ভুক্তিকরণ পদ্ধতি বাতিল করা উচিত। স্বপ্নবান মেধাবী, ও উদ্যোমী তরুণ আইনজীবীদের থেকে জাতীয়- আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে সেবা বঞ্চিত হতে আমরা চাইনা। পেশা জীবনে প্রবেশ কালে ভুল নীতি-দুর্নীতির মাধ্যমে আইনজীবী হওয়ার পথ আটকে রাখা হয়েছে। জনগনের বৃহত্তরস্বার্থে এ অপতৎপরতা থামানো জরুরী।

সুজন বিপ্লব, আহ্বায়ক, আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটি

আপনার মতামত লিখুন :

পাথরঘাটার প্রথম মহিলা সম্পাদিকা হোসনেয়ারা রানী

পাথরঘাটার প্রথম মহিলা সম্পাদিকা হোসনেয়ারা রানী

তরুণ নির্মাতাদের অনেক বড় অনুপ্রেরণা তারেক মাসুদ।

তরুণ নির্মাতাদের অনেক বড় অনুপ্রেরণা তারেক মাসুদ।

দেশে তরুণদের প্রতি পাঁচজনে একজন হৃদরোগের ঝুঁকিতে

দেশে তরুণদের প্রতি পাঁচজনে একজন হৃদরোগের ঝুঁকিতে

কুষ্টিয়া প্রত্যয় যুব সংঘের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত

কুষ্টিয়া প্রত্যয় যুব সংঘের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত

বরিশাল বানারীপাড়া পৌর আওয়ামীলী’র বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন

বরিশাল বানারীপাড়া পৌর আওয়ামীলী’র বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন

মঠবাড়িয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

মঠবাড়িয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj