হিন্দু বিধবা নারীরা স্বামীর কৃষি জমিরও অংশীদার হবে; হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়।
যে অধিকারের জন্য আইন করা হয়েছিল, সেখানেই ছিল অসঙ্গতি। তাই ৮৩ বছর ধরে স্বামীর কৃষি জমিতে কোনো প্রাপ্য ছিল না হিন্দু বিধবাদের। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই অসঙ্গতি দূর করে রায় দিল হাইকোর্ট। যাকে ঐতিহাসিক বলছেন আইনজীবীরা। বুধবার (২রা সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
বিধবা বৌদি, স্বামীর কৃষি জমি পাওয়ার অধিকার রাখেন না, এমন দাবি করে ১৯৯৬ সালে খুলনার একটি আদালতে মামলা করেন দেবর জ্যোতিন্দ্রনাথ মণ্ডল। এতে রায় আসে, বিধবারা স্বামীর অকৃষি জমির অধিকার রাখলেও, কৃষি জমিতে অধিকার রাখেন না। আইন অনুযায়ী, স্বামীর বসত ঘরে এক রকম আশ্রিত থাকতে হতো বিধবা নারীকে।
আপিল করার পর জেলা জজ দিলেন ভিন্নমত। রায়ে বলা হলো, বিধবারাও স্বামীর কৃষি জমির অংশীদার হবেন। বিষয়টি গড়ায় উচ্চ আদালতে।
১৯৩৭ সালে হিন্দু বিধবা সম্পত্তি আইনে স্বামীর অকৃষি জমির অধিকার দেয়া হলেও, কৃষি জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয় বিধবাদের। বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও, সেই আইনটিই হুবহু চালু রাখা হয়। যা হিন্দু নারীদের সম্পত্তি লাভের অন্তরায় হয়ে থাকে।
আইনটি নিয়ে দু’পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে অ্যামিকাস কিউরির মত নেয় হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই ঐতিহাসিক রায় দেন। রায়ে বলা হয়, অকৃষি জমির মতো স্বামীর কৃষি জমিরও মালিক হবেন হিন্দু বিধবা নারীরা।
যদিও, সিলেট অঞ্চলে ভিন্ন একটি আইন সামাজিকভাবে চালু আছে। সেখানে হিন্দু বিধবারা স্বামীর কৃষি জমিরও ভাগ পান।