আইন কি? এই প্রশ্নের উত্তর যতোটা না সহজ ততোটাই আবার কঠিন। কারন চূড়ান্ত সংজ্ঞা দেয়া সম্ভব নয় মূলত তা যুগের সাথে সমাজ-রাষ্ট্র ও দর্শনের ভিত্তিতে পাল্টায়।আমরা শুধুমাত্র ধারনা দিতে পারি, আইনবিদগনও সেটাই মেনেছেন। আইনের ছাত্র হিসেবে আমরা অনেকেই বলে থাকব সার্বভৌমের আদেশই আইন। আইনবিদ অস্টিনের কথায়।কিন্তু অস্টিন যে সময়ে আইনের এই ধারনা দিয়েছিলেন তখন আধুনিক রাষ্ট্রের ধারনা ও রাষ্ট্রের সার্বভৌম চর্চা ছিলো, গনতন্ত্র বা জনগণের শাসন,আধুনা আন্তর্জাতিক আইন এবং কল্যানমূলক রাষ্ট্রের ধারনা তখনো শিশু অবস্থায় ছিলো। তবে আইনের প্রধান উৎস যে আইনসভা সেটা আজ পর্যন্ত চলমান। তবে এই কথা বলতে অপেক্ষা রাখেনা আইন সার্বভৌমের আদেশ হলেও সার্বভৌম তা সেচ্ছামূলক খেয়াল খুশিতে তৈরী করতে পারেনা বরং সংবিধান, আন্তর্জাতিক আইন কানুন সর্বোপরি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হয়; কারন জনগন প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে। সেই অর্থে বলতে গেলে সার্বভৌমের আদেশই আইন; এই থিউরী একবিংশ শতাব্দীতে অচল। আজ আইন অর্থ সমাজের বৃহত্তর জনগণের বিবেক থেকে নিঃসৃত নিয়ম যা তারা নিজেদের উপর বাধ্য করে সরকার সেখানে সেটা প্রক্রিয়া করার মাধ্যম, trustee মাত্র এবং আন্তর্জাতিক আইন ও সমাজের বৃহত্তর অংশের কাছে দায়বদ্ধ এবং মূল কিছু দর্শনে বিশ্বাসী। সার্বভৌম রাষ্ট্র নয় বরং জনগন!
যাই হউক, পারিবারিক (ব্যক্তিগত) আইনের ধারনা আমাদের এই উপমহাদেশে যেভাবে প্রচলিত আছে কমন ল (ব্রিটিশ লিগ্যাল সিস্টেম) এর মধ্যে থেকেও তা আসলে পৃথিবীতে বিরল। বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে আজ পর্যন্ত তা চলছে। ধর্মীয় আবেগ অনুভূতি এবং পাবলিক সেন্টিমেন্টের কথা চিন্তা করে বৃটিশরা ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থা পাল্টিয়ে ফেললেও ব্যক্তিগত ধর্মীয় আইনে তারা হাত দিতে চায়নি। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আইন আসলে কি? । এই আইনের উৎস কি? পরিধি কতোটুক? তা আমাদের জানা দরকার। এই বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া জরুরী। আইনের ছাত্ররাও এই বিষয়টা প্রথম দিকে সহজে বুঝে উঠতে পারেনা। আগে জেনে নিই আইনের উৎস কি? রাষ্ট্র সবার জন্যই আইন প্রনয়ন করে সমানভাবে এবং বিচারব্যবস্থা ও সেইভাবে চলবে। কিন্তু এই আইনের উৎস কি হবে? তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মানদণ্ড নেই; তবে ধর্ম,প্রথা,ন্যায়পরায়নতা,বিচারিক সিদ্ধান্ত, পার্লামেন্টের মাধ্যমে তা প্রকাশ পায় ও তা নিয়ত পরিবর্তনশীল। আধুনিক রাষ্ট্রের ধারনার আগে বিভিন্ন সময়ে আইনের উৎস মূলত ছিলো ধর্ম,প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন সভ্যতার দর্শন এবং প্রাচীন গ্রীক রোমান ল ও মধ্যযুগে ; ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও প্রথা মানবজীবনের সর্বক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ করত। কিন্তু আধুনিকালে রাষ্ট্রের স্ট্রাকচার সেক্কুলার এবং বিচার ব্যবস্থা ও অন্যান্য বিষয়গুলি বিভিন্ন লিগ্যাল সিস্টেমে বেড়ে উঠেছে। যেমন আমরা কমন ল বিচারব্যবস্থায় চলি ঔপনিবেশিকভাবে তা গড়ে উঠেছে। কিন্তু বিবাহ,বিচ্ছেদ,দান,ওয়াকফ,উত্তরাধিকার,ভরনপোষণ, দত্তক, পিতৃত্ব, উইল,অভিভাবকত্ব, ইত্যাদি বিষয়গুলো ধর্মীয় আইন যার যার ব্যক্তিগত ধর্মীয় বিধানে নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে বহুকাল থেকেই। এই বিষয়গুলোকেই আমরা বলি personal law বা ব্যক্তিগত আইন। যা যার স্ব স্ব ধর্মীয় আইন অনুযায়ী পালন করে থাকে। যার মূল উৎস ধর্ম। এবং এর পরিধি এইটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা, পশ্চিমা দেশগুলিতে এই ব্যক্তিগত ধর্মীয় আইনের কোনো বিধান নেই অর্থ্যাৎ পার্লামেন্ট তার সকল ধর্মের নাগরিকদের জন্য একটি কোড (আইন) তৈরী করে(সেক্কু্লার) আর তা অনুযায়ী ব্যাক্তিগত বিষয়গুলি পরিচালিত হয় যাকে আমরা বলি ইউনিফর্ম সিভিল কোড। যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র ইহুদিরা তাঁদের ধর্মীয় personal law দ্বারা পরিচালিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে কোনো মুসলিম বা হিন্দু সেখানের নাগরিক হলে বা বসবাস করলে ভরণপোষণ, তালক,দান,উত্তরাধিকার ইত্যাদি বিষয়গুলো নিজস্ব ধর্মীয় আইনে চলতে পারবেনা। কিন্তু আমাদের দেশে ইসলাম, হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ এবং উপজাতিদের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক ধর্মীয় ব্যাক্তিগত আইন,ভারতেও তাই। তবে আধুনা বাস্তবতায় ধর্মীয় প্রাচীন রীতিনীতিগুলি বৃটিশ আমল থেকেই পারিবারিক আইনের অংশের মধ্যে থেকেই পরিবর্তন হয়েছে ইসলামিক শরিয়া এবং সনাতন ব্যক্তিগত আইনে। যা আজ পর্যন্ত চলমান যাকে বলা হয় বিধিবদ্ধ পারিবারিক আইন (যার মূল উৎস ধর্ম হলেও যুগের বাস্তবতায় পার্লামেন্ট কর্তৃক সংশোধিত, পরিবর্ধিত) আমরা অনেকেই বিষয়টি গুলিয়ে ফেলি। ট্রেডিশনাল পারিবারিক আইন যা ধর্ম থেকে হবহু চলে আসছে। আর বিধিবদ্ধ পারিবারিক আইন যা সংশোধিত হয়েছে বা নতুন কিছু প্রতিষ্ঠা করেছে যেমন মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, যেখানে তিন তালাক, মৌখিক তালাক বাতিল করা হয়েছে,সালিসি পরিষদ গঠন করা হয়েছে, স্বামীর বহুবিবাহের ক্ষেত্রে স্ত্রীর সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে (যা মূল ইসলামি আইনে নেই) মধ্যবর্তী হালালা বিবাহ বাতিল করা হয়েছে। ১৯৩৯ সালে মুসলিম মহিলাদের বিশেষ কিছু কিছু গ্রাউন্ডসে সরাসরি কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে যে বিষয়ে ট্রাডিশনাল ইসলামিক আইন নীরব ছিলো, এছাড়া মুসলিম বিবাহ/তালাক রেজিস্ট্রিকরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বিবাহের প্রমান এবং নারীর অধিকার নিশ্চিতে, ট্রাডিশনাল ইসলামি আইনে যেটা ছিলোনা। হিন্দু আইনের ক্ষেত্রে প্রাচীন ধর্মীয় শ্রুতি, স্মৃতি,প্রথা,মনুর কোড এবং রীতিনীতির উপর গড়ে উঠেছিল প্রাচীন ধর্মীয় আইনগুলো যার অধিকাংশই কালের প্রবাহের সাথে মনুষ্য কর্তৃক পরিবর্তীত পরিশোধীত হয়ে এসেছে তাই হিন্দু আইনের অন্যতম উৎস পার্লামেন্ট কর্তৃক পাশকৃত মনুষ্য সৃষ্ট বিধিবদ্ধ আইন। সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ, বিধবা বিবাহের স্বীকৃতি,বিধবার অধিকার নিশ্চিতকরন, মহিলাদের সম্পত্তিতে স্বল্পপরিসরে ভোগদখলের অধিকার দেয়া, উত্তরাধিকার সংশোধন, বর্ণপ্রথা শিথিলকরন, বিবাহিত মহিলার পৃথক বসবাস ও ভরনপোষণের অধিকার ইত্যাদি অধিকারগুলি ট্রাডিশনাল হিন্দু আইন সংশোধন করে পার্লামেন্টের মাধ্যমে পাশ করা হয় বৃটিশ আমলে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ১৯৪৭ এর পর আজপর্যন্ত এই ৭৩ বছরে বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিগত আইনের কোনোরকম সংস্কার করা হয়নি।
কিন্তু দেশভাগের পরে ভারতে ১৯৫৫ সালে প্রাচীন হিন্দু ব্যক্তিগত আইনে ব্যাপক সংস্কার করে নতুন বিবাহ আইন তৈরি হয়, বহুপত্নীর বিধান বিলুপ্ত হয়,উত্তরাধিকারে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়,বিবাহবিচ্ছেদ প্রবর্তন ,বর্ণপ্রথা বাতিল করা হয়, নারীর দত্তক নেয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়।
কিন্তু আমাদের দেশের চিত্রটা একবার দেখুনঃ
পুরুষের বিয়ের ক্ষেত্রে কোনও আইনি বাধা বা সীমা নেই। এক জন পুরুষ চাইলেই একাধিক বিয়ে করতে পারেন, একই সঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখতে পারেন। কিন্তু নারী কোনও ভাবেই স্বামীর জীবদ্দশায় আর একটি বিয়ে করতে পারেন না। নারী কেবল সীমিত ক্ষেত্রে জীবনস্বত্বে সম্পত্তির অধিকারী হতে পারেন। হাজার নিগ্রহ সত্ত্বেও স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদ পাবেন না। ফলে তিনি আর কোনও বিয়েও করতে পারবেন না, কারণ বিবাহবিচ্ছেদের কোনও আইনি অস্তিত্বই দেশে নেই!
ভারতে যেমন মুসলমান সমাজের তিন তালাক, বহুবিবাহ বা দত্তক প্রথার সংস্কার চেয়ে আইন তৈরির দাবি সমাজের ভিতরকার নানা রকমের পাল্টা দাবি এবং রাজনৈতিক জটিলতার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে,( যদিও ভারতের সুপ্রিমকোর্ট ইদানীং ত্রিপল তালাক নিষিদ্ধ এবং তা অপরাধ বলে রায় ঘোষনা করেছে) আমাদের দেশেও মান্ধাতা আমলের হিন্দু আইন সংস্কারের চেষ্টা এবং উদ্যোগ একই কারণে আটকে রয়েছে। পারিবারিক আইন সংস্কারের যে কোনও উদ্যোগের বিরোধিতায় দুই দেশে সংখ্যালঘুদের একাংশ একই সুরে সরব।এর ফলে বাংলাদেশে হিন্দু নারীর মানবাধিকার লাঞ্ছিত। হিন্দু পরিবারে পুত্রসন্তান থাকলে বাবা-মায়ের সম্পত্তিতে কন্যার অধিকার নেই। পুত্র না থাকলে নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে মেয়ে প্রয়াত পিতার সম্পত্তি ভোগ করার অধিকার পেলেও তা কেবল জীবনস্বত্বে সম্পত্তি ভোগ করার অধিকার, যথার্থ মালিকানা (বিক্রি, দান কিংবা হস্তান্তরের অধিকার) নয়। ওই কন্যার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সেই সম্পত্তি তাঁর প্রয়াত পিতার নিকটতম পুরুষ উত্তরাধিকারীর (পৌত্র, প্রপৌত্র, ভাই, ভাইপো ইত্যাদি) মালিকানায় চলে যায়। এমনকী মায়ের নিজস্ব সঞ্চিত অর্থ বা সম্পদেও মেয়ের উত্তরাধিকার স্বীকৃত নয়।
বর্তমান হিন্দু আইনে বিবাহ কোনও চুক্তি নয়, বরং অলঙ্ঘনীয় ধর্মীয় বিধান। ধর্মীয় কর্তব্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে স্বামী-স্ত্রীর জন্মজন্মান্তরের পবিত্র এবং অটুট বন্ধন। তাই বিচ্ছেদের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। ১৮৫৬ সালের হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন বাংলাদেশে বলবৎ হওয়া সত্ত্বেও বাস্তবে তার প্রয়োগ বিশেষ নেই। হিন্দু আইনে বিবাহবিচ্ছেদের বিধান না থাকলেও ‘হিন্দু ম্যারেড উইমেনস রাইট টু সেপারেট রেসিডেন্স অ্যান্ড মেনটেন্যান্স অ্যাক্ট ১৯৪৬’ অনুযায়ী সীমিত ক্ষেত্রে শুধুমাত্র স্বামীর সিফিলস,কুষ্ঠরোগ হলে,ধর্ম পরিবর্তন করলে, নিষ্ঠুর আচরণ ও গৃহে উপপত্নী রাখলে স্ত্রীরা আলাদা বাস করার অধিকার এবং ভরণপোষণ পেয়ে থাকেন। তবে তার জন্য পারিবারিক আদালতে মামলা করতে হয়। হিন্দু আইনে দত্তক অনুমোদিত। কিন্তু কেবল ছেলেদেরই দত্তক নেওয়া যায়। কন্যাদত্তক আইনসিদ্ধ নয়। কেন না শাস্ত্র মতে পুত্রসন্তানই বংশের ধারা বজায় রাখে এবং পিণ্ড দান করতে পারে। কেবল পিণ্ডদানের অধিকারীই সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারে। বাংলাদেশে কোনও মহিলা দত্তক নেওয়ার অধিকারী নন। হিন্দু আইন অসবর্ণ বিয়েও অনুমোদন করে না।
হিন্দু আইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশনও হয় না। বিবাহের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করতে ২০১২ সালে বিবাহ নিবন্ধন আইন পাশ করা হয় । কিন্তু বাধ্যতামূলক না করে রেজিস্ট্রেশন ঐচ্ছিক করা হয়েছে। বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা না থাকায় হিন্দু পুরুষ তার স্ত্রীকে ছেড়ে চলে গেলে স্ত্রী কোনও আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন না। ভরণপোষণ কিংবা জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তাও চাইতে পারেন না।
২০১২ সালে আইন কমিশন হিন্দু পারিবারিক আইন সংস্কার সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। তাতে এই সংস্কারের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। ১৯৫৫ সালের ভারতীয় হিন্দু বিবাহ আইনের ধারাগুলো অনুসরণ করে ‘নাগরিক উদ্যোগ’ নামে জাতীয় ও জেলা পর্যায়ের পঞ্চাশটি নারী ও মানবাধিকার সংগঠনের এক মোর্চা ২০১২ সালে হিন্দু আইনের একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পেশ করে। আজও তার কোনও গতি হয়নি। অথচ আইন কমিশনের করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৮৬ শতাংশ মানুষ মনে করে হিন্দু নারীর সম্পত্তির অধিকার থাকা উচিত।
দেশে সংখ্যায় কম হলেও প্রভাবশালী যে হিন্দুরা ধর্মীয় আইন সংস্কারের বিরোধিতা করছেন তাঁদের বক্তব্য, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত সবকটি সরকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক ভাবে দুর্বল করে রাখার অলিখিত নিয়ম অনুসরণ করেছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা না দেওয়া পর্যন্ত পারিবারিক আইন সংশোধন সম্ভব নয়।’ তাঁদের যুক্তি, হিন্দু আইন তাঁদের ধর্মের অঙ্গ। এই আইনের সংস্কারকে তাঁরা ‘হিন্দু পারিবারিক ঐতিহ্যের উপর আঘাত’ বলে মনে করেন।
দেশে সংখ্যালঘুদের সবচেয়ে বড় সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অবশ্য হিন্দু আইন সংস্কারের পক্ষে। তবে তাঁরা মনে করেন, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চলছেই, তারা অস্তিত্বের সংকটের মধ্যে রয়েছে। অস্তিত্ব রক্ষা করবে না কি তারা অভ্যন্তরীণ সংস্কার করবে! তাই সংস্কারের কাজ এগোচ্ছে না। এক কথায় কতিপয় মুষ্টিমেয় সংগঠন আর সরকারের অবহেলায় তা গতি পাচ্ছেনা অথচ বিষয়গুলো মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। সরকারের বা পার্লামেন্টের আশায় উচ্চআদলত বসে থাকতে পারেনা, আমরা চাইব বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্ট ভারতের সুপ্রিমকোর্টের ন্যায় সাহসী পদক্ষেপ নিবে। নারী অধিকার সংগঠনগুলি কোথায়? আশ্চর্যজনকভাবে এ বিষয়ে নীরব। এই দৈন দশার পরিবর্তন আনতে এগিয়ে আসতে হবে হিন্দু নারী সমাজকেই। কতিপয় মৌলবাদীদের বলির পাঁঠা আর কতোদিন হবেন? নিজের অধিকার নিশ্চিতে আওয়াজ তুলুন।
তাইমুম আলীআহাদ।
শিক্ষার্থী আইন বিভাগ,রাবি।
শিক্ষাবর্ষঃ২০১৭-১৮। ,