নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
জামিন আবেদন শুনানির সময় ম্যাজিস্ট্রেট দেখতে পান, আবেদনের পক্ষে যে-প্রেসক্রিপশনটি দেওয়া হয়েছে, তার চিকিৎসক আইনানুগভাবে নিবন্ধিত কোনো চিকিৎসক নন। এ-ঘটনায় কথিত ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ফৌজদারি মামলা শুরু করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন সংশ্লিষ্ট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। পটুয়াখালী জেলার বাউফলের আমলি ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শিহাব উদ্দিনের আদালতে এই ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, জামিন শুনানিকালে আসামিপক্ষের কৌঁসুলি একটি প্রেসক্রিপশন দাখিল করে দাবি করেন যে, হাজতি আসামি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ওই প্রেসক্রিপশন পর্যালোচনা করে দেখতে পান, প্রেসক্রিপশন প্রদানকারী ডাক্তার মাহমুদা বেগম এমবিবিএস ডিগ্রিধারী কোনো চিকিৎসক নন। বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০-এর অধীনে তার কোনো নিবন্ধনও নেই। প্রেসক্রিপশনটিতে ওই কথিত চিকিৎসক তার ডিগ্রি হিসেবে ‘বিভিডিএ, ঢাকা’ এবং ঠিকানা হিসেবে ‘জুনায়েত মেডিকেল হল, হাসপাতাল গেট, বাউফল’ উল্লেখ করেছিলেন। মাহমুদা বেগমের এভাবে প্রেসক্রিপশন প্রদান করাকে আইনের লঙ্ঘন ও দণ্ডনীয় অপরাধ বলে আদেশে উল্লেখ করেন আমলি ম্যাজিস্ট্রেট। তার বিরুদ্ধে ‘নিবন্ধন ব্যতীত এলোপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান ও প্রতারণামূলকভাবে নিজেকে ডাক্তার হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করার অপরাধ’ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০-এর ২২/২৮ ধারার অপরাধ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১)(সি) এর অধীন আমলে গ্রহণ করেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এই মামলায় সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আসামি মোঃ ইব্রাহিম এর কৌঁসুলি সহিদুল ইসলাম (২), জেলা আইনজীবী সমিতি, পটুয়াখালী এবং সিএসআই কামাল হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই ঘটনার জের ধরে ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শিহাব উদ্দিন বাউফল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০-এর অধীন নিবন্ধিত নন অথচ ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বাউফল এলাকায় বেআইনিভাবে চিকিৎসা প্রদান করে যাচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের একটি তালিকা তদন্তের মাধ্যমে প্রণয়ন করে তিনি যেন আদালতে দাখিল করেন। এজন্য পৃথক আরেকটি ফৌজদারি মামলা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট আমলি ম্যাজিস্ট্রেট। এই মামলার তদন্তকাজে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা ছাড়াও সার্বিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বাউফলকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।