আহম্মেদ কাওসার (ইবু) পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ শুক্রবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় মোংলা ফুয়েল ঘাটে এক সময়ের সুন্দরবনের ত্রাস এসকল বন দস্যুদের বিভিন্ন বাহিনী থেকে আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের হাতে এ ঈদ সামগ্রী তুলে দেন বরিশাল র্যাব-৮ এর সদস্যরা।
সুন্দরবনের রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, হরেক রকমের বন্যপ্রাণী ও নদী-খালে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। কিন্তু এক সময় পুরো সুন্দরবন জুড়ে রাজত্ব কায়েম করেছিল বড় বড় কয়েকটি বন ও জলদস্যু গ্রুপ। এ দস্যুরা বনের মধ্যে জেলেরা পাশ-পারমিট নিয়ে মাছ আহরণে গেলেই তাদের অপহরণ করে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ আদায় করত।
শুধু মুক্তিপণ নয়, জেলে বহরে হামলা ও লুটপাট চালিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ও মূল্যবান মালামাল লুট করে নিতো তারা। জেলেরা মুক্তিপণের ধার্যকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাদের উপর নেমে আসতো অমানুষিক নির্যাতন। এর পরই বেগবান হয় সুন্দরবনে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযান। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে র্যাব ২২৩টি অভিযানে ৫০৭ জলদস্যু গ্রেফতার, ১ হাজার ৫৫৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এসময় র্যাব বন ও জলদস্যুর সাথে বন্দুক যুদ্ধে ১৩৫জন দস্যু নিহত হয়েছে। যার ফলে এদের বিরুদ্ধে মোংলা, রামপাল, শরনখোলা, মোড়েলগঞ্জ, দাকোপসহ বিভিন্ন থানায় রয়েছে অসংখ্য মামলা।
তাই সরকার সাধারণ ক্ষমার আওতায় এনে দস্যুদের দস্যুতা ছেড়ে ভাল পথে ফিরে আসার ঘোষণা দেয়। র্যাবের দেয়া তথ্যানুযায়ী সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলে ২০১৬ সালের ৩১ মে মাস্টার বাহিনীর আত্মসমর্পণ শুরু হওয়া পর একে একে ২৭টি বাহিনীর সদস্যরাও আত্মসমর্পণ করে। গত ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর দস্যুমুক্ত সুন্দরবন ঘোষণা করেন সরকার।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক আতিকা ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত প্রায় ২৭টি দস্যু বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের দস্যুতা করে আসছিল। সরকারের নির্দেশনায় এ বাহিনীর লোকজন দস্যুতা ছেড়ে ভাল পথে ফিরে আসে প্রায় ৪শ’র অধিক জল ও বন দস্যু সদস্যরা। ফিরে আসা এসকল মানুষদের সমাজে ভালভাবে বসবাস ও চলাচলের জন্য র্যাব এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় সহায়তা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৮ এর আওতাধীন ৩টি জেলায় বাগেরহাটের মোংলায় ১৭৮জনসহ খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে সুন্দরবনের আত্মসমর্পণকৃত মোট ২৮৪ জন জলদস্যু পরিবারকে নগদ অর্থ ও ঈদ সামগ্রী এবং করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী উপকরণ বিতরণ করে তারা।