কবি নাহিদ শাহীন
একদিন এভাবেই চলে যাবো,
স্যাঁতস্যাঁতে রুমালটা মুচড়ে পড়ে থাকবে বাথরুমের দরজার সামনে কিছু নেংটো ইঁদুরের আদরে
ত্রিশ টাকার টুথব্রাস উল্টো করে মাথা
বেসিনে বাচ্চা তেলাপোকাদের খেলাধুলায় বেহুশ রবে সারাবেলা
বাম কাঁচ ভাঙা চশমাটা তুলোধুনো বালিশের নিচে আটকে থাকবে বহুযুগ
বুক সেলফে বির্বণ তারাশঙ্কর, মুখ থুবড়ে পড়া এ্যাডগার এ্যালানপো, কোণ খেয়ে হজম করা বইপোকাদের অত্যাচারে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং আল মাহমুদদের অযত্নে অবহেলায় রেখে- কাক ডাকা ভোরে নেতানো ভেজা বিড়াল ছানার মতো মৃদু পায়ে চলে যাবো।
সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে নিচে নিমে গেলে আর উপরে উঠা হবেনা আমার, পরিচিত দরজায় কড়া নাড়া হবে না আর;
আমি চলে গেলে পেছনে মানুষের অট্টহাসি শুনতে শুনতে আমি আমার জীবনকে চিনবো, আমার বিদায়ী মাহফিলে এলে আমাকে কেউ বিশেষ বিশেষনে জানবে এমন নয়, আমি অতি সাধারণ অতি নিমজ্জিত নিম্ন মানের একজন মানুষ,
আমাকে কেউ তাকিয়ে দেখবে আমাকে মনে করবে তা একদমই নয়, শুধুমাত্র শ্যাওলা পঁচা কয়েকটি কবিতা লিখে আমি নিজেকে কবি দাবি করে তোমাদের ব্যাপক রোষানলে পড়তে চাইনা। কবিতা অত সহজ নয় বন্ধুগন, এটি নির্মানে ভান্ডারে বিবিধ রতন প্রয়োজন, আমার ভান্ডার শূন্য।
চলে যাচ্ছি একটি ছোট্ট সংসার রেখে,
দুটো শরীরে আমার অসংখ্য অস্তিত্বের চিহ্ন রেখে। তারাও আমাকে ভুলে যাবে। বউ ভুলে যাবে এক সপ্তাহে কন্যা ভুলে যাবে দুই সপ্তাহে, এইযে কমদামি আতরের কৌটা পড়ে রবে আমার মৃত চোখের সমুখে।
নাহিদ শাহীন
১০.০৩.২০২০