চীন থেকে উদ্ভুত করোনা ভাইরাস আজ বৈশি্বক মহামারীতে রুপান্তরিত হয়েছে। বিশ্বায়নের এই যুগে খুব সহজেই এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। কঠোর লক ডাউনে চীন, ভিয়েতনাম এবং নিউজিল্যান্ডসহ অনান্য দেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। লকডাউণ এবং তারর কার্যকারিতা নিয়ে জন মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ চাই কঠোর লকডাউন আবার কেউ সকল প্রকার অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে নিতে। এতে করে সামগ্রীক অর্থনীতি গতিশীল থাকবে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা করোনা মহামারীকেও বুড়ো আঙ্গুল দেখায়। সরকার প্রথম দিকে লকডাউনসহ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও,দীর্ঘদিন পর তা প্রাত্যহার করতে বাধ্য হয় এবং সীমিত আকারে সকল প্রকার কার্যক্রম চালু করে। এতে করে জনমনে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও,বিশেষজ্ঞরা এই সিধান্তকে আত্মঘাততী বলে মতামত দিয়েছেন। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর হার সমানুপাতিকহারে বেড়ে যাবে। জাতিগতভাবে আমরা পুরোটাই ছন্নছাড়া। লকডাউন যাতে সুষ্ঠুভাবে মানা হয় সেজন্য অতিরিক্ত জনবল যেমন; সেনাবাহিনী, পুলিশ অবং অনান্য বাহিনী ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিদিনই স্থানীয় বাজারগগুলোতে কারন ব্যতিত মানুষ ভিড় করছে। যা করোনা ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের দেশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে সংযোগ দিতে গেলেও প্রচুর লোকজন তা অনেক উৎসাহ নিয়ে দেখে। সেনাবাহিনীর লাঠিপেটা দেখতেও অনেকেই বাজারে ঘোরাফেরা করে। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, শুধুমাত্র কঠোর লকডাউন ই কি প্রকৃত সমাধান? লোকজনকে ঘরে রাখতে গেলে অর্থ ও খাদ্য এই দুটি জিনিসের নিশ্চয়তা দিতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে মিডিয়াকে আরো বেশি বাস্তবমুখী হওয়া প্রয়োজন। মার্চ থেকে চলমান লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে পেটের দায়ে তারা ঘর থেকে বের হতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারি খাদ্য ও অর্থ সহায়তা উপযুক্ত লোকজনের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনও এলাকা আছে যেখানে সরকারি পর্যায়ে সহায়তা পোঁছায়নি। এর ফলে বিকল্প পথ খুঁজে নিতে মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে। সদ্য মধ্যম আয়ে পা রাখা আমাদের দেশে তাই অর্থনৈতিক ধ্বস ঠেকাতে কৌশলগত লকডাউনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি এবং সর্বস্তরের জনগনের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। নিজের পরিবার, সমাজ, সর্বপোরি দেশ বাঁচাতে হলে সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে নতুন বাজেট প্রনয়ন করতে হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণে যারা সরাসরি কাজ করে যাচ্ছেন তাদের সুরক্ষার প্রতি কোন ধরনের অবহেলা করা চলবেনা। তাই কঠোর লকডাউন শুধু নয়, একই সাথে কঠোর স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে। সবাই ঘরে থাকুন, পরিবার ও দেশকে সুস্থ রাখুন।
রাব্বীর হোসাইনশিক্ষার্থী,আইন ডিসিপ্লিন(৩য় বর্ষ) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়,খুলনা।