সৌদি সরকারের অনুমতি পেলেই নিবন্ধনকারী প্রায় ৬৫ হাজার হজযাত্রী এবার হজে যেতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে সৌদির সিদ্ধান্ত আসবে জানিয়ে হজযাত্রীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান। তিনি বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এবছর হজ অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে প্রতিদিন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। দেশটিতে নিয়োজিত বাংলাদেশের হজ কাউন্সিলর এ যোগাযোগ করছেন। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে দেশটির সিদ্ধান্ত জানানোর কথা রয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৌদির অনুমতি পেলেই ইনশাআল্লাহ নিবন্ধনকারী ৬৫ হাজার হজযাত্রীকে এবার হজে পাঠানো হবে। এজন্য আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীদেরও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দপ্তর থেকেও হজযাত্রীদের প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।
যাদের টাকা জমা দেয়া বাকি আছে তাদের টাকা জমা দিতে হবে। যদি কোন কারণে এবার কেউ হজে যেতে না পারেন, তাহলে তার টাকা মার যাওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। কেউ চাইলে টাকা ফেরত দেয়া হবে অথবা আগামী বছর যাওয়ার সুযোগ রাখা হবে।
উল্লেখ্য, ভয়াবহ করোনাভাইরাসের কারণে এবছর পবিত্র হজ অনুষ্ঠান নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তবে করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল করে দুই মাসেরও বেশি সময় পর সম্প্রতি সৌদি আরবের মসজিদগুলো খুলে দেয়ায় হজ নিয়ে আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব বিদেশিদের ওমরাহর অনুমতি দেওয়া এবং পরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় পুরো দেশ লকডাউন করা হয়। এ কারণে গত মাসে এখনই হজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত না করে পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয় সৌদি আরব।
করোনা পরিস্থিতির কারণে অনিশ্চয়তার মধ্যেও হজের আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগ্রহীদের নিবন্ধন কার্যক্রম চালায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। ২ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নিবন্ধন কার্যক্রমের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল শেষ করা হয়।
সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার কথা। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন। কিন্তু করোনা আতঙ্কের কারণে নিবন্ধনে তেমন সাড়া না পড়ায় এবারের পূর্ব নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি।
নিবন্ধন সার্ভার সূত্রমতে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৪৫৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ১৪২ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই অর্থাৎ ৯ জিলহজ এবারের হজ অনুষ্টিত হবে। সে অনুযায়ী ২৩ জুন হজ ফ্লাইট শুরুর আশা প্রকাশ করেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।