আসামির নাম ও বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় ২ মাস ২৪ দিন কারাভোগ করলেন রুবেল আলী। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরপাকা গ্রামের মুন্টু আলীর ছেলে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (শিবগঞ্জ) থেকে তাঁকে আজ বুধবার দুপুরে জামিন দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক ইকবাল পাসা দাবি করেন, গ্রেপ্তারের সময় রুবেল আলী (২৩) বা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো কিছুই বলা হয়নি। একই গ্রাম, আসামি ও বাবার নাম মিলে যাওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে এ ভুলটা হয়েছে। পরে জানতে পেরে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর জামিন হয়েছে।
রুবেল আলীর বাবা মুন্টু আলী বলেন, তাঁর ছেলেকে গত ১০ মার্চ গভীর রাতে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় কোনো যাচাইবাছাই করা হয়নি। তিনি গ্রেপ্তারের পরের দিন থানায় গিয়ে বলার চেষ্টা করেছেন, তাঁর ছেলে কোনো অপরাধ করেননি। কেন তাঁকে ধরা হলো? কিন্তু পুলিশ তাঁকে কোনো পাত্তা দেয়নি। বরং পুলিশ বলেছে, তাঁর ছেলে একটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এ জন্য তাঁকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে।
মুন্টু আলী বলেন, তিনি সাত দিন আগে নিশ্চিত হন যে একই এলাকার রুবেল আলী মাদক মামলার প্রকৃত আসামি। বিষয়টি পুলিশকে জানান তিনি। পুলিশ আজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তিনি একজন গরিব কৃষক। এত দিন আদালত ও কারাগারে যাতায়াত করতে গিয়ে তিনি অনেক হয়রানির শিকার হয়েছেন। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি এর ক্ষতিপূরণ দাবি করে বলেন, ‘যাঁদের ভুলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আমার বাড়ি চরপাঁকা গ্রামে। আর প্রকৃত আসামিদের বাড়ি চরপাঁকা কদমতলা এলাকায়।’
পুলিশ সূত্র জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল শিবগঞ্জের কালুপুর বেইলি সেতু এলাকা থেকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হন একই গ্রামের কদমতলা এলাকার মুন্টু আলীর ছেলে রুবেল আলী ওরফে বাবুল (২৬)। সেদিনই শিবগঞ্জ থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার পর রুবেলকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর পাঁচ দিনের মাথায় জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান রুবেল। পুলিশের অভিযোগপত্র দাখিলের পর রুবেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাবলে এবং আসামি ও বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় পুলিশ গত ১০ মার্চ নির্দোষ রুবেল আলীকে গ্রেপ্তার করে।
এপিএস/০৪/পিটিআই/এনএস