‘সোনালি ধান’
রায়হান কাওসার
ফসলে ফসলে ক্ষেত-মাঠ-বিল আজ ভরিয়াছে ধানে,
সারা গাঁও হবে মাতোয়ারা তাই নবান্ন-বাউল গানে।
গিন্নির মনে হাসি আজি তাই সোনালি ধানে চেয়ে,
উঠিলে ফসল এবার দেবে সেজো মেয়েটির বিয়ে।
কৃষক ভাবিছে বড় ছেলেটার ঘর নাই শুইবার,
এই বার ঘরে ফসল উঠিলে ঘর বানাইবে তাহার।
বড় মেয়ের বিয়ের সময় কাঠা পাঁচ ধানী জমি,
আছে বন্ধক- তুলিবে তাহা দিয়ে যত সালামী।
গরুর গোয়ালে খড়ের ছাউনি পচিয়া গিয়াছে হায়,
ভাল করে তাহা বাঁধতে যে হবে নতুন খড় কুটায়।
ছোট মেয়ে বলে আমায় একটা নতুন পোষাক দিবে,
লালের উপর সাদায়-কালোয় নকশি ছাপানো রবে।
আদরে সোহাগে স্বামীরে গিন্নি বলিছে বুকে পড়ি
এই বার ঘরে ফসল উঠিলে কিনে দিও দামী শাড়ী।
দিবে দিবে বলে ত্রিশটি বছর তুমি দিলে পার করে,
এই বার যদি নাহী দাও তবে ব্যাথা পাবো অন্তরে।
বড় মেয়েটারে গত দু'বছর আনিবার পারি নাই,
এই বার ঘরে ফসল উঠিলে আনবো বেটি জামাই।
নারিকেল দিয়া খেজুর গুড়ের বানাবো হালুয়া রুটি,
এই কথা শুনে সব ছোট মেয়ে আনন্দে কুটি কুটি।
নিশীথে স্বামীরে বলে বারে বারে করে মিনতি ভঙ্গি,
এই বার জৈষ্ঠে জামাইরে কিন্তু দিতে হবে লুঙ্গি।
খবর পেলাম রোজ রাতে কাঁদে বড় মেয়ে মমেনায়
যৌতুক টাকা না দিলে মেয়েরে তালাক দিবার চায়।
জামাইরে তাই যৌতুক টাকা যত আছে বাঁকী,
এবার কিন্তু দিতে হবে শোধ যত অনাহারে থাকি।
কৃষক বলিছে সব হবে বউ ঘরে তুলি তবে ধান,
সকল অভাব দূর হয়ে যাবে সহায় যে খোদাবান।
কবিঃ রায়হান কাওসার, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ইমেইলঃ raihankawsardu@gmail.com