তালহা জাহিদ (বরিশাল): বাসার সামনেই আমাদের উঠানে এক কোনে তাল গাছে প্রতিবছর বাবুই পাখি বাসা বাঁধে। সবসময় সজোরে পাখির কিচিরমিচির শব্দে আমার প্রচন্ড ভালো লাগে। আমিও সকাল বিকালে উঠানে পাখির জন্য খাবার ছিটিয়ে রাখি। আস্তে আস্তে বাড়ির ছোট থেকে বড় সকলের ভালোবাসা অর্জন করে নিল পাখি গুলি। এতক্ষণ যা বললাম এটা প্রতিদিনকার ঘটনা। এখন আসি উপরের হেড লাইনের বিষয় বস্তুতে, ” কাঁচা ঘর কেন তার খাসা রইলো না??” — অন্তত অর্ধশত পাখি প্রতি বার নতুন করে ঘর বাঁধে, ডিম পারে, বাচ্চা বড় করে, আবার তারা নতুন করে ঘর বাঁধে। আজ হঠাৎ চোখ পরতেই দেখতে পেলাম ঝড় বাতাসে একটি পাখির বাসা নিচে পরে যাচ্ছে। সাথে সাথে দেখলাম একটা বিড়াল দৌড়ে সেখানে যেতেই, দুটি বাবুই পাখি উপর থেকে ওড়াউড়ি করছে, চিৎকার করছে, আমিও সাথে সাথে দৌড়ে গেলাম, দেখলাম বাসায় একটি ছোট্র ছানা, কয়েক বার ছেড়ে দিয়ে দেখলাম, এখনও ভালো করে উড়তে শেখেনি। তখন ছানাটিকে নিরাপদ মনে করে একটি খাঁচায় রাখি। তখনই দেখলাম আবাক করা দৃশ্য, ছানাটি ও তার মা বাবাসহ সব পাখি মিলে ডাক চিৎকার শুরু করে।
তখন ভাবলাম, বিড়ালের হাত থেকে বাঁচার জন্য খুশিতে চিৎকার, নাকি খাঁচায় রাখার কারনে চিৎকার! তাই পাখির বাসাটাকে ঘরের কোনে স্থাপন করে, দেই মুক্ত ও স্বাধীন ভাবে বাচাঁর সুযোগ।
ছোট বেলায় বাবুই পাখি’র ‘ স্বাধীনতার সুখ’ কবিতা পড়েছেন সবাই– কবিতার শেষ লাইনে আছে ‘নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা’ এটা নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা না করে এক কখায় বলা যায়, পরনির্ভরশীল না হয়ে কষ্ট করে হলে স্বাধীন ভাবে বাঁচা শ্রেয়।
তখন মনে হলো, কতশত পাখি স্বপ্ন নিয়ে জীবনের ঘর বাঁধে, কিন্তু এই পাখিটির স্বপ্ন বাতাসে ঝড়ে পড়লো কেন?? কেন তার কাঁচা ঘর খাসা রইলো না??