ভালো মানুষ হওয়ার জন্য আত্মশুদ্ধি অপরিহার্য। সমাজের সব স্তরে শুদ্ধ মানুষই নিরাপদ ও কল্যাণ সমাজ বিনির্মাণ করতে পারে। বিশেষত সমাজের দায়িত্বশীল, ক্ষমতাশীল ও প্রভাব–প্রতিপত্তিসম্পন্ন লোক যাঁরা সমাজ পরিচালনা করেন, তাঁদের আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি এবং সবার আগে। কারণ, তাঁদের ভালো-মন্দের প্রভাব পুরো সমাজে ছড়ায় বা সমাজকে প্রভাবিত করে।
শুক্রবার (২৮ মে) রাজধানীর শাহজাহানপুরে হেটেল সার্কেল ইন’এ জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠক “আবাবীল”-এর ঈদ পূর্ণমিলনী ও ১১০১তম সাহিত্য সভায় আলোচকবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
আবাবলীল সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, ছড়াকার কবি আতিক হেলাল, নির্বাহী পরিচালক আকবর মোহাম্মদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাবেক ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট মো. আকবর হোসেন, মানবাধিকার সংগঠক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ছড়াকার, সুরকার, গোলাম নবী পান্না, আলোচনায় অংশগ্রহন করেন কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া, সংগঠনের স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. আতিকুর রহমান, নওশাদ আলম শামিম, শওগাত উল আলম সুমন, অর্থ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন বাবলু, প্রবীণ সদস্য কবি আবদুস সালাম চৌধুরী, সদস্য মারুফুল ইসলাম, গিয়াস হায়দার, শাহজাদা সেলিম, আতিকুল আলম জেহাদী প্রমুখ। সংগঠনের প্রয়াত সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতি চারন করেন জুলফিকার স্বপন,সংগীত পরিবেশন করেন দুলালউদ্দিন রানা, যাদু প্রদর্শনী করে কামরুল হাসান বাংলাদেশী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি আতিক হেলাল বলেন, আজকের শিশু-কিশোররাই যেহেতু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, কাজেই তাদের সুস্থ-সবল প্রাণবন্ত দেহ ও ফুলের মতো পবিত্র জীবন গঠনে নৈতিক শিক্ষা ও অনুশীলন বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান লাভ করা খুবই জরুরি। যেহেতু দুনিয়ার কৃতকর্মের ভিত্তিতে আখেরাতের ফলাফল নিশ্চিত করা হবে, কাজেই শিশু-কিশোরসহ প্রত্যেকের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের মনে শিক্ষা জীবনের শুরু এ বিষয়গুলো শিখিয়ে দিতে পারলে তার জীবন সুন্দরের পথে পরিচালিত হবে। তার মেধা-মনন গড়ে উঠবে শালীনভাবে।
সভাপতির বক্তব্যে এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মানুষ হলো সমাজবদ্ধ জীব। ব্যক্তিমানুষের সব সার্থকতা সমাজকে কেন্দ্র করেই। সমাজে স্বীকৃতির ওপর নির্ভর করেই মানুষের সম্পূর্ণতা। কিন্তু মানুষ দল বেঁধে বাস করলেই তা সমাজ হয় না। প্রত্যেক মানুষ একে অপরের কল্যাণের কথা ভেবে সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত। এই সমাজকে বাঁচিয়ে রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিমানুষের অন্যতম দায়বদ্ধতা। এক সমাজে ধনী, গরিব, সহায়–সম্বলহীন নানা রকম মানুষের বাস। শিক্ষিত, অশিক্ষিত সবাইকে নিয়েই সমাজ। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই হলো সমাজসেবা।
তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পৃষ্টপোষকতা করতে। আমাদের নিজেদের সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশে মহল্লায় মহল্লাহ পাঠাগার আন্দোলন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।