টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হল গণতন্ত্র। গণতন্ত্র ও সুশাসন না থাকলে উন্নয়ন ব্যর্থ হবে মন্তব্য করে বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-বিএলডিপি চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এম নাজিমউদ্দিন আল আজাদ বলেন, বর্তমানে দেশে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র চলছে। ফলে সরকার নিয়ন্ত্রন করছে লুটেরা গোষ্টি। যা রাষ্ট্রের জন্য কোন কল্যাণকর বিষয় নয।
রবিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলাধেম শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলণায়তনে অনন্যা সোসাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে “স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক আলোচনা সভা ও স্বাধীনতা দিবস সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা না থাকলে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটতে বাধ্য। বিকল্প কোনো গণতান্ত্রিক দলের আগমন হলে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। সরকারকে বুঝতে হবে, গণতান্ত্রিক শক্তি উত্থানের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সেখানে অশুভ শক্তি আর্বিভাব ঘটে।
সংগঠনের উপদেষ্টা ও গণ রাজনৈতিক জোট-গর্জো’র সভা প্রধান সৈয়দ মইনুজ্জামান লিটুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হক সিকদার, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সমাহারের নির্বাহী পরিচালক সালেহা আহ্মেদ, প্রাইমারী ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিডব্লিউসিএসপি)’এর প্রেসিডেন্ট নাহিদ আক্তার লাকী, বাংলাদেশ ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স এর দপ্তর সম্পাদক কবি রোকসানা আমিন সুরমা, অগ্রগামী মিডিয়া ভিশনের নির্বাহী পরিচালক গোলাম ফারুক মজনু, মেধা বিকাশ সোসাইটির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন অপু, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের মহাসচিব আর কে রিপন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নেত্রী ফেরদৌসি বেগম প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান খোকন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ভাষা সৈনিক মঞ্জুরুল হক সিকদার বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাঙালি জাতির অনেক বড় প্রাপ্তি ঘটেছে। সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো আমাদের স্বাধীনতা। আমরা যে আমাদের জীবনে এই স্বাধীনতা দেখে যেতে পারব, সেটা অনেকেই বিশ্বাস করত না। কিন্তু বাংলাদেশ সত্যি সত্যিই স্বাধীন হয়েছে। একটা স্বাধীন–সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে স্থান করে নিয়েছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, সরকারের পরিবর্তন প্রয়োজন, কিন্তু পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা কাদের ক্ষমতায় আনতে চাই সেটাও নির্ধারন করতে হবে। এক লুটেরার পরিবর্তে আরেক লুটেরাকে ক্ষমতায় বসালে জনগনের কোন লাভ হবে না। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
তিনি অকার্যকর লকডাউনের সমালোচনা করে বলেন, করোনার কারণে গত এক বছরে শ্রমজীবী মানুষের কাজ কমে গেছে। এমনকি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাসের বেতনও ঠিকমতো এখনও দেয়া হয় না। অন্যদিকে দ্বিতীয় দফায় লকডাউন হলে প্রায় সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্ত মানুষ কীভাবে দিনযাপন করবেন তা ভেবে দেখতে হবে সরকারকেই।
মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। করোনা কালীন সময়ে লকডাউন স্থায়ী সমাধান নয় বরং সাধারণ মানুষ যাতে এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ রাষ্ট্রকেই গ্রহণ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মইনুজ্জামান লিটু বলেন, দুর্নীতি বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় সমস্যা। দেশের উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, সুশাসন ও সার্বিকভাবে ইতিবাচক সমাজ পরিবর্তনের পথে দুর্নীতি এক কঠোর প্রতিবন্ধক।
অনুষ্ঠানে দক্ষ সংগঠক ও সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য গণ রাজনৈতিক জোট-গর্জো’র সভা প্রধান সৈয়দ মইনুজ্জামান লিটুকে স্বাধীনতা দিবস সম্মাননা ২০২১ প্রদান করা হয়।