মুনতাসীর রহমান মাহদীঃ এমন অনেকে আছেন, যারা পড়াশোনা শেষ করেছেন বা শীগ্রই শেষ হবে। তারা এখন চাকরি নিয়ে ভাবছেন বা চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সবাই নিশ্চয়ই জানেন যে, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক। ফলে চাকরি পেতে বেশ বড়সড় প্রতিযোগিতা করতে হয়৷
তো চাকরি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় সবাই সফল হয় না। অবশ্য সবাই সফল হলে তখন আর প্রতিযোগিতা হতো না৷ একজন চাকরি প্রত্যাশী হিসেবে আপনি নিশ্চয়ই জানেন, চাকরি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় সফল হতে ইন্টার্ভিউয়ের গুরুত্ব কতখানি।
স্বাভাবিকভাবেই ইন্টার্ভিউ-তে অংশগ্রহণ করে পাশ করে প্রত্যেককে চাকরিতে যোগ দিতে হয়৷ আর যারা পাশ করতে পারেন না, তারা চাকরি পান না৷ এদিকে যারা পড়াশোনা মাত্র শেষ করেছেন বা করছেন, তাদের ইন্টার্ভিউ সম্পর্কে ধারণা কম থাকে।
যেহেতু পড়াশোনা শেষ করার পরপর কারোরই ইন্টার্ভিউয়ের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে না, তাই অনেকে জানেন না ‘কিভাবে ইন্টার্ভিউতে ভালো করা যায়’৷ তো আমি আমার আজকের এই পোস্টে আলোচনা করব চাকরির ইন্টার্ভিউ নিয়ে।
আশাকরি পোস্ট পড়ার পর আপনার পরবর্তী ইন্টার্ভিউয়ের জন্য নিজেকে আরো ভালোভাবে প্রস্তত করতে পারবেন আর ভালো ফলাফল করতে পারবেন। চলুন তবে, শুরু করা যাক।
• আত্মবিশ্বাসের সাথে অংশগ্রহণ করুন।
যখন আমরা নার্ভাস থাকি, তখন জানা প্রশ্নগুলোর উত্তরে’ও ভুল করে বসি৷ আমাদের অঙ্গ-ভঙ্গি ঠিক থাকে না, যা বেশ দৃষ্টিকটু। এজন্য ইন্টার্ভিউতে নিজেকে আত্মবিশ্বাসের সাথে উপস্থাপন করা জরুরি।
স্বাভাবিকভাবেই কোনো প্রশ্নকর্তা আশা করেন না যে আপনি সব প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিবেন৷ আপনি তো মানুষ, গুগল না যে সব জানা থাকবে৷ কিন্তু প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে’ও সেই মুহুর্তটাকে আপনি কিভাবে সামলাচ্ছেন, এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
তাই প্রশ্নকর্তার সামনে আত্মবিশ্বাসের আত্মবিশ্বাসের সাথে বসুন, প্রশ্ন মনযোগ সহকারে শুনে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করুন৷ আপনি যে প্রশ্নের উত্তর জানেন না, সেটার ক্ষেত্রে ভাবতে বসবেন না বা চুপ করে থাকবেন না।
• অনুশীলন করুন।
আপনি চাইলেই হঠাৎ করে আত্মবিশ্বাসী হতে পারবেন না৷ যেকোনো কাজে প্রথমবার বা দ্বিতীয়বার আমরা বেশ নার্ভাস থাকি। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসী হই৷ আর ইন্টার্ভিউয়ের ক্ষেত্রে’ও আত্মবিশ্বাসী হতে চাইলে অনুশীলন করতে হবে।
কথায় আছে, ‘প্র্যাকটিস মেকস আ ম্যান পারফেক্ট’।
আপনি যতো বেশি অনুশীলন করবেন, আপনি ততো ভালোভাবে নিজেকে তৈরি করতে পারবেন। আর অনুশীলন করার জন্য আপনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সাথে নিজে কথা বলতে পারেন।
দেখতে পারেন কথা বলার সময়ে কেমন অঙ্গ-ভঙ্গি ভালো দেখায়। ইউটিউব থেকে বিভিন্নরকম ইন্টার্ভিউয়ের ভিডিয়ো দেখতে পারেন৷ এমন কিছু চ্যানেল আছে, যারা হুবহু ইন্টার্ভিউ নেয় আর সেটা তাদের চ্যানেলে প্রচার করে।
এছাড়া’ও ইন্টার্ভিউতে করা এমন সম্ভাব্য প্রশ্নের তালিকা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। আপনি সেখান থেকে প্রশ্ন বাছাই করে প্র্যাকটিস করতে পারেন।
• গবেষণা করুন।
আপনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য পরীক্ষা দিবেন, তাদের ব্যাপারে জানুন। আপনার পরীক্ষা কারা নিবেন, তাদের পদবী কি, জানার চেষ্টা করুন৷
প্রতিষ্ঠান কি নিয়ে কাজ করে, তাদের লক্ষ্য কি, এর সত্ত্বাধিকারী কে বা কারা, বছরে প্রতিষ্ঠানের আয় এবং ব্যয়ের পরিমাণ কেমন, প্রতিষ্ঠানের মূল প্রতিযোগী কারা এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানুন৷
আর এই বিষয়গুলো জানতে এখন খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না৷ ছোট বড় প্রায় প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থাকে এখন৷ ওয়েবসাইট ভিজিট করে উল্লেখিত বিষয়গুলো জেনে নিতে পারেন আপনি৷
• পোশাক পরিচ্ছদ ঠিক রাখা।
আমরা সাধারণত কাউকে দেখে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি, লোকটা কেমন৷ আমরা বিস্তারিত জানি পরে, কিন্তু আগ্রহ তৈরি হয় আগে।
আপনি এমন পোশাক পরবেন না বা এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবেন না, যাতে কেউ প্রথম দেখাতেই আপনার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
আশাকরি এরপর থেকে ইন্টার্ভিউ বোর্ডে আপনি নিজেকে আরো ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন, আর ভালো ফলাফল করবেন।