চাচীর অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় সিলেটের বিয়ানীবাজারে খুন হয় চার বছরের শিশু সায়েল আহমেদ ওরফে সোহেল। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা খসরু মিয়ার করা মামলায় গ্রেপ্তার হন শিশুটির চাচী সুরমা বেগম ও তার কথিত প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ওরফে ইব্রাহিম। উচ্চ আদালতে আসামি ইব্রাহিম জামিন চাইলে শিশুর বাবা ও মামলার বাদী খসরু মিয়া জামিন আবেদনে অনাপত্তি জানান।
হাইকোর্ট আসামির জামিনের আবেদন খারিজ করে খসরু মিয়াকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ এবং তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দিয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো বশির উল্লাহ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আল আমিন।
মামলার বরাতে আইনজীবীরা জানান, গত বছরের ৭ জুন ভোরে বিয়ানীবাজারের উত্তর আকাখাজনা গ্রামে বসতঘরে ইব্রাহিম ও চাচী সুরমা বেগমের অনৈতিক মেলামেশা দেখে ফেলে শিশু সোহেল। একপর্যায়ে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গোসলখানার প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়। সন্ধ্যায় বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেলের লাশ উদ্ধার করে ইব্রাহিম ও সুরমা বেগমকে আটক করে। পরদিন শিশুর বাবা খসরু মিয়া সুরমা ও ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
সেখানে অভিযোগ করা হয়, চাচীর অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় খুন হতে হয় শিশু সোহেলকে। সংশ্লিষ্ট আদালতে আসামি সুরমা বেগম হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গত বছরের নভেম্বর সিলেটের বিচারিক আদালতে আসামি ইব্রাহিম জামিনের আবেদন করেন। সেখানে আসামির জামিনে আপত্তি নেই বলে জানান মামলার বাদী ও শিশু সোহেলের বাবা খসরু মিয়া। শুনানি শেষে ইব্রাহিমের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর হয়। এরপর জামিন পেতে আইনজীবীর মাধ্যমে উচ্চ আদালতে আবেদন করেন আসামি।
ডিএজি বশির উল্লাহ বলেন, ‘আসামির পক্ষে মামলার বাদী খসরু মিয়া হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে আবেদনে জানান, আসামি জামিন পেলে তার (বাদী) কোনো আপত্তি নেই। এটি একটি হত্যা মামলা। চার বছরের একটি শিশুকে হত্যা করা হলেও শিশুর বাবা ও বাদী নিজেই বিচার চাইছেন না। আসামির বিষয়ে অনাপত্তি দিয়েছেন বাদী। হাইকোর্ট এতে ক্ষুব্ধ হন। আদালত আসামির জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বাদী খসরু মিয়াকে গ্রেপ্তার এবং তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’