এপিএসনিউজ ডেস্ক
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইল উপজেলার বেড়তলা গ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ঘটনায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আশপাশের ৮ গ্রাম লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এসব গ্রামের বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জানাজায় বিপুল সংখ্যায় মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে ব্যর্থতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন টিটুকে ওই এলাকার দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে।
জানাজায় অংশ নেওয়ার সূত্র ধরে বেড়তলাসহ ৩ উপজেলার ৮টি গ্রাম লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসব গ্রামের বাসিন্দাকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রামগুলোতে মাইকিং করে এ নির্দেশনার বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামগুলো হলো- সরাইল উপজেলার বেড়তলা, আশুগঞ্জ উপজেলার খড়িয়ালা, বৈগইর, মৈশাইর; সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শান্তিনগর, সীতাহরণ, বড়ইবাড়ি ও সদর উপজেলার মালিহাতা।
এসব গ্রামের কেউ আগামী ১৪ দিন বাড়ি থেকে বের হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সরাইল (সার্কেল) মাসুদ রানা এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, প্রশাসনের নির্দেশে গ্রামের বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে ৮ গ্রামকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের বেড়তলায় জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা মাঠে ইসলামী আলোচক আল্লামা মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাজা ছিল গতকাল শনিবার সকাল ১০টায়। তবে ১০টার আগেই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসা শুরু করে। লাখো লোকের সমাগম ঘটে ওই জানাজায়। মাদরাসা মাঠ ছাড়িয়ে মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত চলে যায়। এ ছাড়া মাদরাসাসহ সেখানকার আশপাশের ভবনের ছাদে জানাজা পড়তে লোকজন দাঁড়িয়ে যায়। জানাজায় ইমামতি করেন আনসারীর ছেলে মাওলানা মো. আসাদুল্লাহ। অনেকের গলায় থাকা ব্যাজ, প্রচুর যানবাহন আসা প্রমাণ করে যে ব্যাপক সমাগমের মাধ্যমে জানাজার পূর্বপ্রস্তুতি ছিল। জানাজাস্থলের আশপাশে বেশ কিছু পুলিশ সদস্য থাকলেও তাঁরা ছিলেন নীরব দর্শক। জানাজায় করোনার মসিবত থেকে মুক্তির জন্যও দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি জনসমাগম প্রসঙ্গে সে সময় বলেন, ‘ছোট পরিসরে জানাজা হওয়ার কথা থাকলেও হঠাৎ করেই হাজার হাজার লোক আসতে থাকে। এত লোকের সমাগম যে হবে, সেটা আমরা ধারণাও করতে পারিনি। যে কারণে ওই সময় আমাদের কিছুই করার ছিল না।’
গত শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মার্কাসপাড়ার নিজ বাসভবনে মারা যান যুবায়ের আহমদ আনসারী। বেড়তলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা যুবায়ের আহমদ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির ছিলেন। সূত্রঃ কালের কণ্ঠ অনলাইন।
এপিএস/১৯এপ্রিল/টিআরপি