আল্লাহ-ই সর্বোত্তম ফায়সালাকারী
আজ তিন জুমুআ হলো বাসায় নামায আদায়। জ্ঞানবুদ্ধি হওয়ার পর থেকে পরপর তিন জুমুআর নামায মসজিদে না গিয়ে কখনো মিস হয়নি। আজ নামায পড়ার সময় বারবার তা মনে পড়ছিল। জানি অনেকের আমার মতো হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে! শুরু থেকেই গাইবান্ধা ঝূঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত হয়। এখনও ঝুঁকিতে শীর্ষে থাকা জেলার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু এটাই বাস্তবতা! এখন চাইলেও নিজের মতো সব করা সম্ভব না।
শরিয়ত তাই বলে- যেটা কোরআন হাদিস বলে, সমর্থন করে। নামায পড়া ফরজ। আবার তিন সময় নামায পড়া হারাম। রমজানে রোযা রাখা ফরজ। এছাড়া চাইলে বছরের অন্য যে কোন দিনও নফল রোযা রাখা যায়। কিন্তু আপনি চাইলেও বছরের নির্দিষ্ট দু’টি দিনে রোযা রাখতে পারবেন না- তা হারাম। এটাই শরিয়ত। তাই সময়ের প্রেক্ষাপটে এখন মসজিদে না গিয়ে বাসায়ও নামায পড়া যাবে।
হ্যাঁ, যা লিখতে চেয়েছিলাম তা হলো মহান আল্লাহ- ই সর্বোত্তম ফায়সালাকারী। তিনি যা চান, তাই হয়। অনেকে বলে থাকেন কোটি মানুষ তো দোআ করছে, কিন্তু কবুল হচ্ছে না কেন? এ বিষয়ে আমরা অনেক বিলম্ব করে ফেলেছি। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটা সহিহ হাদিসের সারমর্ম হলো- তোমরা সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ করতে থাকো। যদি তোমরা তা না করো হয়তো এমন সময় আসবে তোমরা দোআ করলে তা কবুল হবে না। এমনকি কোন বুযুর্গ দিয়ে দোআ করালে তাও কবুল হবে না। চিন্তা করা যায়- আমরা কোথায় আছি? তারপরও মহান আল্লাহপাকের কাছে চাইতে হবে, ভরসা করতে হবে। কারণ তিনি তাওবা কবুলকারী। মহান আল্লাহপাক বলেন- “তোমরা আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না”।
মুমিনদের নিরাশ হওয়ার কিছুই নেই। আল্লাহর ইচ্ছাই বাস্তবায়ন হবে। কোন কোন পরিস্থিতিতে মরণ হওয়া মানে জাহান্নামে কিংবা নরকে যাওয়া নয়। এ বিষয়ে সার্টিফিকেট দেয়ার মালিক আমরা নই, মহান আল্লাহ-ই। যেমনটি সক্রেটিস মৃত্যুর আগে বলেছিলেন- I am to die, you to live, which is better God only knows. তাই আমাদের যথাযথ তাক্বওয়া, পরহেজগারিতা অর্জন করতে হবে। একমাত্র তাক্বওয়াই মৃত্যুর পর মুক্তির গ্যারান্টি দিতে পারে। মহান আল্লাহর কাছে সেই প্রিয় যে যতটুকু তাক্বওয়াবান।
এ মুহূর্তে নিরাপত্তার স্বার্থেই ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা কারণে- অকারণে তা মানছি না। ভাবখানা এমন যে আমার তো নাই, আমার হবে না। কিন্তু এ বিষয়ে আমি, আপনি কেউ নিরাপদ নই এ মুহূর্তে। যে কেউই যে কোন মুহূর্তে করোনাক্রান্ত হতে পারি। এ বিষয়ে হযরত উমর(রাঃ) এর মত বলতে চাই, তিনি বলতেন- “আজ যদি আসমান থেকে প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয় একজন বাদে সবাইকে ক্ষমা করা হলো। তারপরও আমি আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল হবো না। যদি সে একজন আমি হই?” আসুন নিয়ম মেনে চলি, নিজে বাঁচার চেষ্টা করি এবং অপরকে বাঁচতে সাহায্য করি।
মহান আল্লাহপাক সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।
মোঃ নূরুল হক সহকারী জজ, গাইবান্ধা।