সাবেক ছাত্রনেতা ও শিক্ষানবীশ আইনজীবী সুজন বিপ্লব।এছাড়াও তিনি “আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলন” কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার ন্যায় সংগত অবস্থান দৃঢ়তায় অনন্য উচ্চতায়। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানায় জন্মগ্রহণ করেন সুজন বিপ্লব। ঝিনাইদহ কোর্টে তিনি আছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে। তার সাথে নানা বিষয় নিয়ে আলাপ হয় এপিএসনিউজের। এপিএসনিউজের পক্ষে ছিলেন, নূরুন্নবী সবুজ।
এপিএসনিউজ : অনেকে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের কথা বলেন। আপনার মন্তব্য কি?
লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে ছাত্র রাজনীতি নয়। যখন সরকার পরিবর্তন হয় তখন দেখা যায় সে দলের ছাত্র সংগঠন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। শিক্ষার পরিবর্তন ছাড়া জাতির পরিবর্তন সম্ভব না। কিন্তু লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতির কারনে ছাত্র রাজনীতির ভাবমূর্তি নষ্টে হচ্ছে। যারা ছাত্র রাজনীতি বন্ধের কথা বলে তারা আগুলে ঘা হলে তার চিকিৎসা না করিয়ে পুরো হাতটাই কাটার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এপিএসনিউজ : শিক্ষার পরিবর্তন কি সত্যিই জরুরী?
সুজন বিপ্লব: আপনি দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা লাভ করার পর যদি সরকারী চাকুরী করতে চান বা বিসিএস দিতে চান তাহলে আপনাকে আবার প্রাইমারী হাইস্কুলের পড়া করতে হয় যার অধিকাংশই যে যে পদে যাবে তাতে কাজে লাগে না। আবার এতে করে যে উদ্ভাবনী শক্তি তাও থাকে না। কোনমতে চাকুরী পেয়ে জীবন পার করে দিতে পারলেই বাচি টাইপ দায়সারা কাজ করেই জীবন চালায়। এরা প্রকৃত শিক্ষা পায়না বলে জনগণের সেবক না হয়ে শোষক হয়।
এপিএসনিউজ : আপনি তো শিক্ষানবীশ আইনজীবী, আইন সমন্ধে আপনার ধারণা কি?
সুজন বিপ্লব: আইন আপনাকে যে শাস্তি দিবে তা বহ্যিক। আপনার ৫বছর বা ৫মাস পর আপনি বের হলেন তারপর আপনার যদি কর্মের আর জীবনের নিরাপত্তা না থাকে বা শাস্তি পর্যাপ্ত না হয় তাহলে দেখা যাবে আপনি অভ্যাসগত অপরাধীতে পরিণত হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাই হয়। এখন অভ্যাসগত অপরাধীর সংখ্যা কমাতে হলে শুধু বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য নয় বরং আভ্যন্তরীণ আচরণ নিয়ন্ত্রণের কেীশলও আইনের সংজ্ঞায় অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
এপিএসনিউজ : আইনজীবী সনদ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে, সনদ ও পরীক্ষার বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
সুজন বিপ্লব: তিন ধাপের পরীক্ষা দেবার পর আইনজীবী হতে হয় যার কোন নিদৃষ্ট বেতন কাঠামো নেই ও হয়রানী ছাড়া এর বাস্তব তেমন প্রয়োজনীয়তাও নেই। আবার বিগত বছর গুলোতে দেখা গেছে পরীক্ষা ৩বছর পর হচ্ছে যা একজন শিক্ষার্থীর জীবন জীবন ও যৈবন নষ্ট করতে যতেষ্ট।
আইন মহলে একটি কথা প্রচলিত আছে, ‘ একজন ভালো আইনজীবী কোথায় কোন আইন আছে তা জানেন।’ মুখ্স্ত নয় বরং চর্চা ও একাগ্রতাই সাফল্য নির্ধারণ করবে তাই একজন শিক্ষানবীশ আইনজীবি জীবন ও যৈবন নিয়ে না খেলে আইনজীবি সনদকে বাস্তবমুখী করতে হবে। ওপেনবুক পদ্ধতি আইনজীবী সনদ পরীক্ষা নিতে হবে। এতে যেমন মেধা যাচাই হবে তেমন আইনের পাঠও সঠিক ও সৃজনশীল হবে। ওপেনবুক পদ্ধতি শিক্ষাক্ষেত্রের অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হলে এর সুফল আসবে।
আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলনের সাথে যুক্ত আপনি আপনাদের দাবীগুলো সমন্ধে জানতে চাই।
সুজন বিপ্লব: বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ সভা, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষানবিশি শেষে আইনজীবী সনদ প্রদানসহ বাংলাদেশের ক্রম-বর্ধমান বেকাত্ব হ্রাস করতে আইনজীবীর মত একটি বিশেষায়িত পেশাকে এতো জটিল না করে আরো সহজ প্রক্রিয়ায় আনতে হবে। আইনজীবী সনদ অধিকার আন্দোলন তাদের কাজ শুরু করেছে। সারা বাংলাদেশে তাদের কমিটি গঠন করছে। আশা করি শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও আইনের শিক্ষার্থী যারা আইনজীবী হতে চাইলেও সনদ পাবার দীর্ঘসূত্রীতার কারনে অন্য পেশায় যায় তাদের সে সমস্যা দূর হবে।
এপিএসনিউজ : এপিএসনিউজ পরিবারকে সময় দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সুজন বিপ্লব: আপনাকেও ধন্যবাদ।