ঢাকার দিয়াবাড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফে আলাদা দুটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন, যারা সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি বলে দাবি করছে পুলিশ। দুটি বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে ও শুক্রবার ভোরে।
এর মধ্যে দিয়াবাড়িতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। আর টেকনাফের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে মাদক কারবারিদের সঙ্গে পুলিশের। সেখানে মারা যাওয়া দুই মাদক কারবারির মধ্যে একজন রোহিঙ্গা। অন্যজন সাবেক এক ইউপি সদস্য। নিচে বিস্তারিত খবর।
রাজধানীর তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিদের সঙ্গে র্যাবের বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- ওমর ফারুক ও ইব্রাহীম খলিল। এ ঘটনায় একজন র্যাব সদস্য আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে তিন হাজার ৯০ কেজি ইয়াবাসহ দেশি-বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান গনমাধ্যমকে বলেন, রাতে গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, একদল মাদক কারবারি দিয়াবাড়ি লেকপাড় এলাকায় অবস্থান করছে। র্যাবের টহল দল সেখানে গেলে তারা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। র্যাব পাল্টা গুলি করলে তারা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা। তাদের উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এক র্যাব সদস্য আহত হয়েছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে ৩ হাজার ৯০ কেজি ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ও ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজার
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক রোহিঙ্গাসহ দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। ভোরে টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উখিয়ার কুতুপালংয়ের মৃত কালা মিয়ার ছেলে মৌলভী বখতিয়ার এবং একই এলাকার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইউছুপ আলীর ছেলে মো. তাহের। তাদের মধ্যে বখতিয়ার উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ছিলেন। নিহত দুইজনই এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারি। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইউনুছকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে পুলিশ উখিয়ার কুতুপালং ই ব্ল-কের ইউনুছ আলীর ছেলে ও স্থলবন্দর ব্যবসায়ী রোহিঙ্গা মো. তাহেরকে গ্রেপ্তার করা করে।
তাহেরের ভাষ্যমতে উদ্ধার ইয়াবার প্রকৃত মালিক উখিয়া কুতুপালংয়ের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বখতিয়ারের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভোরে তাদের নিয়ে মিয়ানমার থেকে আনা হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে আকাশী গাছের বাগানে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তাদের সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে দুই মাদক কারবারি গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কক্সবাজারে পাঠান। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি দেশীয় তৈরি এলজি, ইয়াবা বিক্রির ১০ লাখ টাকা, ১৭ রাউন্ড কার্তুজ, ১৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা এবং ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।