অর্থ ও মানবপাচারের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়া লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে ২১ দিন কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর।
বুধবার এ আদেশ দিয়ে তাকে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কুয়েতের ইংরেজি দৈনিক আরবটাইমসের অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়। খবরে বলা হয়, কুয়েতে বাংলাদেশি এমপি শহিদ ইসলাম পাপুলকে ২১ দিন কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর।
এর আগে গত শনিবার আরব টাইসম জানায়, পাপুল ও তার কোম্পানির ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) ফ্রিজ করতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর। যার মধ্যে ৩০ লাখই হচ্ছে পাপুলের প্রতিষ্ঠানের মূলধন। ইতোমধ্যেই কুয়েতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর এ বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। যাতে ওই অর্থ অন্য কোথাও পাচার না হতে পারে।
এদিকে গত রবিবার সাংসদ পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব হিসাব স্থগিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (বিআইএফইউ) প্রধান বরাবর ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে দেশের গণমাধ্যমে খবর আসে।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির ধারণা।
কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সেবা খাত, নিরাপত্তা, নির্মাণ, আবাসন, পরিবহন, তেল শোধন প্রভৃতি খাতে কার্যক্রম রয়েছে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের। কুয়েতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসায় রয়েছে তাদের।
পাপুলের বিরুদ্ধে ওঠা মানবপাচারের অভিযোগ তদন্ত হওয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কুয়েত সিআইডির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস ও আরব টাইমস।
সম্প্রতি মানব ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ কয়েকশ ব্যক্তির তালিকা করে কুয়েত সরকার। সেই তালিকা ধরেই বিতর্কিত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ। সেই অভিযানে গত ৬ জুন কুয়েতে গ্রেপ্তার হন এমপি পাপুল।
এপিএস/২৫জুন/পিটিআই