নিজস্ব প্রতিবেদক
‘চুরি দেখে ফেলায়’ রংপুরের বিজ্ঞ আইনজীবী আসাদুল হক স্যারকে দিনদুপুরে বাড়িতে ঢুকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রংপুরে প্রবীণ এক আইনজীবীকে দিনদুপুরে বাড়িতে ঢুকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, চুরি করা দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল ০৫/০৬/২০২০ ইং শুক্রবার দুপুরে নগরীর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকায় এ হত্যাকান্ড- ঘটে। নিহত আসাদুল হক স্যার(৬০) রংপুর জজকোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ছিলেন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা রতন মিয়া নামে এক যুবককে রক্তাক্ত ছুরিসহ ধরে পুলিশে দিয়েছে।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ওসি রোকোনুজামান জানান, দুপুরে রতন মিয়া ও তার সঙ্গীরা ওই বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ডিঙিয়ে চুরি করতে ভেতরে প্রবেশ করেন। ওই সময় আইনজীবী আসাদুল হক স্যার জুমার নামাজ আদায়ের জন্য অজু করছিলেন। তিনি চোরদের দেখে চিনে ফেলেন। এ কারণে তাকে একা পেয়ে প্রথমে তার পেটে ছুরিকাঘাত করার পর গলা কেটে হত্যা করে। হত্যা করে পরে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর টপকে পালানোর সময় স্থানীয়রা রতনকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ সময় তার সহযোগীরা সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। রতন মিয়া (২২) একই এলাকার মৃত জাফর আলী ড্রাইভারের ছেলে। সে মাদক সেবন, চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে জানান স্থানীয়রা।
প্রতিবেশীরা জানান, রংপুর আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর আসাদুল হক স্যারের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে আস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী। কয়েক দিন ধরে কলেজপড়ুয়া ছোট মেয়েকে নিয়ে স্যারের স্ত্রী গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া ছড়ান এলাকায় অবস্থান করছিলেন। নিহত স্যারের স্ত্রী সাবেরা রহমান শেফালী বলেন, আমি গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুরে ছিলাম। সেখান থেকে খবর পেয়ে এসে দেখি আসাদুলকে শহরের বাড়িতে দুর্বৃত্তরা গলা কেটে হত্যা করেছে। এর আগেও রতন মিয়া একাধিকবার চুরি করেছে। গ্রামের মানুষ তার বিচার করে ছেড়ে দিয়েছিল। এবার তার চুরি করা দেখে ফেলায় সে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকারীর বিচার চাই।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদে রতন হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানান তাজহাট থানার ওসি শেখ রোকোনুজ্জামান। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রতনের অপর সহযোগীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। খবর পেয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শহীদুল্লা কাওছার, রংপুর বার সমিতির সভাপতি ও জজকোর্টের সরকারি আইন কর্মকর্তা মোঃআব্দুল মালেক স্যার, ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল হক প্রামাণিক স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এপিএস/৬জুন/পিটিআই/মিজান।