করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আরও বাড়ানো হচ্ছে। তাই আসছে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে উৎপাদনশীল শিল্প ও আবাসন খাতে কোনো ধরনের জরিমানা ছাড়াই কালো টাকা (অপ্রদর্শিত অর্থ) বিনিয়োগের সুযোগ দিতে যাচ্ছে সরকার।
বাজেট প্রস্তাব প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে বৈধভাবে অর্জিত অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ। ফলে আগামী ২ থেকে ৫ বছর অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ থাকতে পারে আসছে বাজেটে।
এই অর্থের উৎস নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কোনো প্রশ্ন করবে না, এমন আভাসও পাওয়া গেছে। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ প্রসারিত করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও রাজস্ব বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, আসছে বাজেট বৈধভাবে অর্জিত অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগে করোনার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সহায়ক হবে। অর্থ পাচার কমবে। বাড়বে মানুষের কর্মসংস্থান। এজন্য উৎপাদনশীল খাতে ওই অর্থের বিনিয়োগ নিশ্চিত করার নির্দেশনাও বাজেটে থাকতে হবে।
জানা গেছে, যে কেউ অপ্রদর্শিত আয়ের ঘোষণা দিয়ে যেকোনো অঙ্কের অর্থ বৈধ করতে পারবেন। ‘ভলান্টারি ডিসক্লোর অব ইনকাম’ নামে পরিচিত এই নিয়মটি ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবর্তন করা হয়। এ সুযোগ নিতে হলে প্রযোজ্য করহার ও তার সঙ্গে ১০ শতাংশ জরিমানা দিতে হয়। আসছে বাজেটে এই জরিমানা তুলে দেয়ার প্রস্তাব আসতে পারে। ফলে জরিমানা ছাড়াই শুধু ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের প্রস্তাব থাকতে পারে আসছে বাজেটে।
এক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন করবে না এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। এমন একটি নির্দেশনা নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে এসেছে। তার আলোকেই বাজেটে প্রস্তাব তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ২ থেকে ৫ বছর এই সুযোগ দিয়ে বৈধভাবে অর্জিত অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা দিতে চায় সরকার। এ সুযোগ দেয়া হলে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূল স্রোতে আসবে এবং বিনিয়োগ বাড়বে। অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে বলে মনে করছে সরকার।