কুষ্টিয়ার মিরপুরে ফিরোজ আহমেদ কাজল (২৮) নামে এক যুবককে তুলে নিয়ে হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। একইসঙ্গে জরিমানা অনাদায়ে তাঁদের আরও এক বছরের সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১-এর বিচারক তাজুল ইসলাম পাঁচ আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মিরপুর উপজেলার কলিকাপুর গ্রামের মাসুদ (পলাতক), সিদ্দিক, বড়িয়া গ্রামের মাসুম মোল্লা (পলাতক), গাংনী উপজেলার হারাভাঙ্গা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ও মেসকাত আলী মোল্লা, দৌলতপুর উপজেলার সালিমপুর গ্রামের সোহেল রানা ও ওয়াসিম রেজা (পলাতক) এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চৌড়হাস এলাকার জাকির হোসেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলা থেকে তিন আসামিকে খালাস দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১২ জুলাই বিকেলে মিরপুর উপজেলা বরিয়া গ্রামের দেলবার হোসেনের ছেলে ফিরোজ আহমেদ কাজল (২৮) মোটরসাইকেলে নিজ বাড়ি থেকে ভেড়ামারা যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। এরপর দুই দিন বিভিন্ন মোবাইল ফোন থেকে কল করে পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফিরোজ আহমেদ কাজলের কোনো সন্ধান না পেয়ে ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট নিখোঁজ কাজলের বাবা বাদী হয়ে মিরপুর থানায় মুক্তিপণ দাবি করা কয়েকটি মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ এনে মামলা করেন। নিখোঁজের তিন মাস পর আসামিদের স্বীকারোক্তিতে ফিরোজ আহমেদ কাজলের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২৪ আগস্ট অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ এনে ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মিরপুর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আলিম।
আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী বলেন, অনেক দেরিতে হলেও মিরপুর থানার কাজল নামের যুবককে অপহরণ ও মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ৮ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন সাজাসহ জরিমানা আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। ধার্যকৃত জরিমানার অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে প্রত্যেককে অতিরিক্ত আরও এক বছর করে সাজা ভোগ করতে হবে। তবে এই মামলার যেসব আসামিকে সাজা দেওয়া হয়েছে তাদের সবার বিরুদ্ধে গত ২১ মার্চ বিজ্ঞ আদালত দৌলতপুর থানার চাঞ্চল্যকর জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল হত্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডের আদেশ দিয়েছেন একই আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ও গত সোমবারের রায়ের সময় যারা পলাতক ছিলেন, সেসব আসামিরা আজও রায় ঘোষণার সময় পলাতক ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, এদের কেউ কেউ হয়ত পুলিশ বা র্যাবের সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে মারা গিয়ে থাকতে পারেন।