মো: মিশন আলী,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
করোনার কারণে ঝিনাইদহে আমের বাজারে ধস নেমেছে। ক্রেতা না পাওয়ার কারনে আম নিয়ে বিপাকে পড়েছে জেলার চাষীরা। এদিকে ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন নিয়ে আম চাষ করায় চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। বর্তমান আমের যে বাজার তাতে উৎপাদন খরচ উঠছে না।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামের সাজেজার রহমানের সবচে বেশি আম বাগান রয়েছে। তিনি কিছু আম বিক্রি করতে পারলেও এখন আর ব্যাপারীরা আম কিনতে আসছে না।
আম চাষি বুলবুল আহম্মেদ বাপ্পি জানান, এখন আমের ভরা মৌসুম চলছে। অথচ বাগানে কোন ব্যাপারী আসছে না। কিছু ব্যাপারী বাগান কিনে বায়না করে গেলেও তাদের অপেক্ষায় থেকে থেকে বাগানের আম গাছেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সন্টু জোয়ারদার জানান, ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, খুলনা, ফরিদপুর ও পিরোজপুর জেলার ব্যাপারীদের পদভারে এ সময় আম বাগান মুখরিত থাকতো। এখন আর কেও আম কিনতে আসছে না। তিনি জানান কিছু ব্যাপারী আসলেও তারা ৬৮০ টাকা মন আম কিনতে চাচ্ছে। এই দামে আম বিক্রি করলে তাদের লোকসান হবে বলেও ওই চাষি জানান।
জানাযায়, দক্ষিনাঞ্চলের সবচে বড় আমের মোকাম হচ্ছে জেলার কোটচাঁদপুরে। সেখান থেকে ১০ দিন আগেও দেড়শ থেকে দুইশ ট্রাক আম দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হতো। এখন মাত্র ৫০ ট্রাক আমও বিক্রি হচ্ছে না।
কোটচাঁদপুরের আড়ৎদার মোমিনুর রহমান জানান, বর্তমান আমের বাজার খুবই ডাউন। করোনার কারণে আম বাজারজাত ও পরিবহন করা যাচ্ছে না। শনিবার পর্যন্ত সবচে ভালো আম বিক্রি হয়েছে ১২০০ টাকা মন। আর বেশির ভাগ আম ৪০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। কোটচাঁদপুরের বাজারে যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার আম বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২২১১ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে সদরে ৫৮০, কালীগঞ্জে ৩৭০, কোটচাঁদপুরে ৭১০, মহেশপুরে ৫০০, শৈলকুপায় ২৫ ও হরিণাকুন্ডুতে ২৬ হেক্টর বাগান। এ সব বাগানে এ বছর ৩৩ হাজার ৫১১ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আজগর আলী জানান, চাষিদের আম পরিবহন সহজতর করার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু করোনার ভয়াল বিস্তার ও নানা বিধি নিষেদের কারণে চাষিরা আম বিক্রি করতে পারছে না। বাইরের ব্যাপারীরা পরিবহন সংকটের কারণে আসতে পারছে না। তাদের জন্য একটা বিহিত করা দরকার বলেও তিনি মনে