পি কে হালদারের বিদেশ যাত্রা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার চিঠি বিলম্বে পৌঁছান এবং এ সুযোগে দেশ ছেড়ে তার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছে উচ্চ আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত চিঠি ১৩ ঘণ্টা পর পুলিশের ইমিগ্রেশনে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার প্রশ্ন তুলেছে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
প্রযুক্তির এই যুগে চিঠি পাঠাতে এত বিলম্ব হওয়ায় বিরক্তি প্রকাশ করে আদালত।
পি কে হালদার ইস্যুতে ‘আনান ক্যামিকেল’সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। পরে অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে আনান ক্যামিকেল। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের এই বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উঠে। তবে এ সময় আনার ক্যামিকেলের কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান দুদকের আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান।
শুনানিতে দুদক আইনজীবী আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাটার। কারণ এটি পি কে হালদার সংক্রান্ত বিষয়’।
এ সময় আদালত বলে, ‘১৩ ঘণ্টা পর চিঠি পাঠিয়ে তাকে (পি কে হালদার) বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো। এটি কীভাবে হলো? চিঠির বিষয়টি তিনি কীভাবে জানলেন, কারা তাকে জানিয়েছে?’
এ সময় দুদক আইনজীবী বলেন, এ বিষয়ে দুদকের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিঠি পাঠিয়েছি।
গত ১ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগের বরাতে জানান, ‘বিমানবন্দর নয়, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সড়কপথে দেশ ছাড়েন রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী পি কে (প্রশান্ত কুমার) হালদার। তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চিঠি ইস্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে দেশত্যাগ করেন তিনি। এর আগে দুদক এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগকে ২২ অক্টোবর ডাকযোগে চিঠি পাঠায়। সেটি ইমিগ্রেশন বিভাগ পরদিন সাড়ে ৪টায় পায়। এরপর পি কে হালদারসহ ২৪ জনের ফাইল প্রস্তুত করে দেশের সব বিমান ও স্থলবন্দরকে ওই দিন ৫টা ৪৭ মিনিটে অবহিত করা হয়। এর আগেই পি কে হালদার বেনাপোল দিয়ে পালিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, পি কে হালদার প্রথমে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও পরে এরআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। পরে ব্যাংকবহির্ভূত আরো চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজ কর্তৃত্বে ও নিয়ন্ত্রণে নেন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের নামে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠে পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।