এক স্বামী বহাল রেখে অন্য পুরুষকে বিয়ে করলে জেল জরিমানার বিধান রয়েছে। সকল ধর্ম অনুযায়ী কোনো মেয়ে একাধিক স্বামী রাখতে পারেনা। কারণ একাধিক স্বামী থাকলে সন্তান গ্রহণের সময় পিতা নির্ধারণের জটিলতা চলে আসে। দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করলে যে কোনো বর্ণনার কারাদন্ড যাহার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত হইতে পারে তদুপরি অর্থদণ্ডেও দন্ডিত হবে।
ইসলাম ধর্মে একসাথে ৪টি নারীকে স্ত্রী হিসেবে রাখার অনুমোদন দিয়েছে তাই এই ধারাটি মুসলমান পুরুষদের জন্য ব্যাতিক্রম। কিন্তু অন্য সকল ধর্মে একাধিক স্ত্রী রাখা বৈধ নয় বিধায় উক্ত ধারা প্রযোজ্য হবে। তবে স্বামী বা স্ত্রী যদি সাত বছরের অধিক সময় নিখোঁজ থাকেন তবে দ্বিতীয় বিয়ে করতে আইনগত বাঁধা নেই।
মুসলমানদের ক্ষেত্রে ৪ টি স্ত্রী রাখা বৈধ হলেও একাধিক নারীকে বিবাহের ক্ষেত্রে আগের স্ত্রীর থেকে অনুমতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে এলাকার চেয়ারম্যানকে জানিয়ে নোটিশও পাঠানো হয়ে থাকে। আগের স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইলে মুসলিম পুরুষদের জন্যও দণ্ডবিধির উপরোক্ত ৪৯৪ ধারা প্রযোজ্য হবে।
মুসলিম ও পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ 1961 এর 6 ধারা অনুসারে একজন পুরুষ যদি প্রথম স্ত্রী থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ করতে চাই তাহলে তাকে সালিশি পরিষদের অনুমতি নিতে হবে। এই সালিশ পরিষদ গঠিত হবে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং স্বামী ও স্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিনিধি দ্বারা।যিনি দ্বিতীয় বিবাহ করতে চান তাকে চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদনে স্ত্রী অনুমতি দিয়েছে কিনা উল্লেখ করতে হবে।
স্ত্রী যদি অনুমতি নাও দেয় সলিশ পরিষদ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুমতি দিতে পারবে।
সালিশ পরিষদ যদি অনুমতি না দেয় তাহলে সহকারী জজ আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে। তখন সহকারী জজের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
সালিশ পরিষদ এর অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলে বিয়ে হবে না বিষয়টা এমন নয়। সালিশ পরিষদের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলে বিবাহ বৈধ হবে কিন্তু তা একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
দ্বিতীয় বিবাহ করার জন্য স্ত্রী যদি মামলা দায়ের করতে চায় তাহলে স্ত্রীকে পরবর্তী বিবাহের কাবিননামা সংগ্রহ করতে হবে। তাহলে দ্রুত বিচার সম্পন্ন হবে।
সুতরাং স্বামী যদি সালিশী পরিষদের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করে তাহলে স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারবে।
আবার দন্ডবিধির ৪৯৫ ধারা অনুযায়ী, পূর্ববর্তী বিবাহের তথ্য গোপন রেখে পুনরায় অন্য কারর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইলে সেই ব্যক্তি যে কোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে দন্ডিত হবে যাহার মেয়াদ দশ বছর পর্যন্ত হতে পারে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডে দন্ডিত হবে।
বিষয়ঃ আইনী মতামত
লেখকঃ নাসির আহামেদ
এলএল.বি অনার্স, এলএল.এম
এসোসিয়েট, চেম্বার অব জুরিস্ট, ঢাকা।
Email: nasir.goodlawyer@gmail.com
আইনগত বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করুন নির্দিধায়।
মোবাইলঃ ০১৯৯৪-৬৮৫৯৪৩